এবার বাংলাওয়াশের অপেক্ষা

সিরিজ জিতে গেল বাংলাদেশ। ছবি: প্রথম আলো
সিরিজ জিতে গেল বাংলাদেশ। ছবি: প্রথম আলো

ম্যাচের মাঝবিরতিতে ক্রিকইনফোর এক পাঠকের সরস মন্তব্য, ‘জিম্বাবুয়ের প্রথম লক্ষ্য ২০০ রান, তারপর ২৯৮!’ সেই পাঠকের ইঙ্গিত পরিষ্কার। এ সিরিজে এখনো ২০০ রানই পেরোতে পারেনি সফরকারী দল। আজও ‘প্রথম লক্ষ্যটা’ই অর্জন করতে পারল না। জিম্বাবুয়েকে ১২৪ রানে হারিয়ে দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশ।
ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়, সব দেশ মিলিয়ে চতুর্থ। এটি বাংলাদেশের ১৬তম দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জয়ও। এখন অপেক্ষা কেবল ধবলধোলাইয়ের! বাংলাদেশের দেওয়া ২৯৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৭৩ রানে অলআউট জিম্বাবুয়ে।
দ্বিতীয় ম্যাচের অনেক কিছুরই পুনরাবৃত্তি হলো এ ম্যাচে। শুরুতেই মাশরাফি বিন মুর্তজার আঘাতে এবারও টালমাটাল জিম্বাবুয়ে। ২২ রানেই দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দিলেন মাশরাফি। ধাক্কাটা জিম্বাবুয়ে আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি। নিয়মিত বিরতিতেই চলল উইকেট পতন। মাঝখানের সাময়িক প্রতিরোধে এক সময় জিম্বাবুয়ের স্কোর ৫ উইকেটে ১১৯ ছিল বটে। কিন্তু আরাফাত সানি আবারও লেজটা ছেঁটে ফেললেন। ৫৪ রানে পড়েছে জিম্বাবুয়ের শেষ ৫ উইকেট। এর মধ্যে তিনটিই নিয়েছেন আরাফাত, দুটো আবার পরপর দুই বলে নিয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের সামনে। হ্যাটট্রিকটা না হলেও ২৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তিনিই সফল বোলার। জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৫৩ করেন চিগুম্বুরা।
আরাফাত সবচেয়ে সফল বোলার, তবে ম্যাচের সেরা নন। এইখানে দ্বিতীয় ম্যাচের পুনরাবৃত্তিটা হলো না। বোলারের পরিবর্তে এবারের ম্যাচের নায়ক ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় ম্যাচের মতো আরেকটি শতরানের উদ্বোধনী জুটি এনে দেওয়া, মাত্র ৫ রানের জন্য চতুর্থ সেঞ্চুরিটা হাতছাড়া করা এনামুল হক ম্যাচসেরার পুরস্কারে দুঃখ কিছুটা ভুললেন। ১২১ রানের শুরুর জুটিটা অবশ্য বিচ্ছিন্ন হয় এক দুর্ভাগ্যজনক রানআউটে। ফেরার আগে তামিমের সংগ্রহ ৪০ রান। উদ্বোধনী জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরও মুমিনুলকে সঙ্গে নিয়ে ভালোই খেলছিলেন এনামুল। কিন্তু মুমিনুল ব্যক্তিগত ১৫ রানে ফেরার পর কিছুটা তাড়াহুড়ো করতে গিয়েই ৯৫ রানে একটা নিরীহ-দর্শন বলে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন এনামুল।
তামিম-এনামুল-মুমিনুল ফেরার পর ইনিংসের ছন্দপতন ঠেকান মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। ৭২ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের ইনিংসকে অনেক দূর টেনে নিয়ে যান তাঁরা। সাকিব ৩৩ বলে ৪০ রান করেন ৪টি চারের সাহায্যে। মুশফিকুর রহিম করেন ৩৩। এই জুটি ভয়ংকর হয়ে উঠতেই জিম্বাবুয়ের ত্রাণকর্তা হয়ে আসেন তিনাশে পানিয়াঙ্গারা। সাকিব তাঁর বলে ধরা পড়েন চিগুম্বুরার হাতে। মুশফিককে বোল্ড করেন পানিয়াঙ্গারা।
বাংলাদেশের ইনিংসের চূড়ান্ত রূপটা দেন মাহমুদউল্লাহ। ২৬ বলে ৩৩ রান করে বাংলাদেশের সংগ্রহকে নিয়ে যান প্রায় তিন শর কাছে। সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন সাব্বির রহমানকে। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ২২ রান। ৫টি চারে নিজের ইনিংস সাজিয়ে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ। জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নিয়েছেন পানিয়াঙ্গারা।