হতাশা ভুলে দৃষ্টি এশিয়ান গেমসে

এশিয়া কাপ
এশিয়া কাপ

প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ হারিয়েছে পাকিস্তান। এশিয়া কাপের ফাইনালে কোরিয়ার কাছে হেরেছে ভারত। এসবের কোনোটিকেই অঘটন বলতে চাইছিলেন না এশিয়ান হকি ফেডারেশনের কর্মকর্তারা। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দলের কোচ-ম্যানেজারের কাছে বারবার একটাই প্রশ্ন করেছেন, ‘এই দলটার হয়েছে কী?’ তাঁদের চোখে এবারের এশিয়া কাপের বড় অঘটন—ওমানের কাছে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের ৪-২ গোলের হার।
একটি হারেই স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়েছে হকি দল। পাঁচ ম্যাচে বাংলাদেশ হজম করেছে ২৮ গোল। এশিয়া কাপে নয়বারের অংশগ্রহণে চতুর্থবারের মতো সপ্তম হয়ে পরশু রাতে দেশে ফিরেছে দলটা।
অথচ কোচ মাহবুব হারুনের অধীনে এই দলটিই আগের তিনটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে সাফল্যের আলোয় ভেসেছিল। গত বছর ব্যাংককে জিতেছিল এশিয়ান হকি ফেডারেশন (এএইচএফ) কাপ। সিঙ্গাপুরে বিশ্ব হকি লিগের প্রথম রাউন্ডে চ্যাম্পিয়ন, দিল্লিতে দ্বিতীয় রাউন্ডে চীনকে হারিয়ে বিস্ময় জাগিয়েছিল সবার মনে। মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে সেই দলের এমন পারফরম্যান্সে স্তব্ধ হকি অঙ্গন।
বর্তমান দলটিকে হাতের তালুর মতোই চেনা মাহবুব হারুনের। জিমি-চয়নদের এমন পারফরম্যান্সে খুবই হতাশ সাবেক এই খেলোয়াড়-কোচ, ‘কী বলব...সবার মতো আমারও খুব খারাপ লেগেছে।’ পারফরম্যান্সের গ্রাফ আরও উঁচুতে তুলতেই আনা হয়েছে পাকিস্তানি কোচ নাভিদ আলমকে। কিন্তু নাভিদের অধীনে এশিয়া কাপে বাংলাদেশ হয়েছে সপ্তম! তবে কি নাভিদের কোচিং কৌশলেই সমস্যা? দলের সঙ্গে সহকারী কোচ হিসেবে থাকা হারুন এ ব্যাপারে সরাসরি মন্তব্য না করলেও বললেন, ‘মালয়েশিয়া থাকতেই নাভিদের মোবাইলে এসএমএস এসে জমতে শুরু করে। সবার প্রশ্ন একটাই, হারুনের কোচিংয়ে তো ভালোই করছিল দল। এসব দেখে নিজেও খুব বিব্রত বোধ করছিলাম।’ সঙ্গে যোগ করলেন, কোচের কথামতো মাঠে খেলতে পারেনি ছেলেরা, ‘কোচ যেভাবে ব্লক, ডিফেন্স, অ্যাটাক করতে বলেছিল, সেভাবে ওরা কিছুই করতে পারেনি। আসলে ছেলেরা নিজেদের শতভাগ দিতে পারেনি। অতীতে যে রকম খেলেছে, সেটা খেলতে পারেনি এবার।’
ঢাকা ছাড়ার আগে খেলোয়াড়েরা ক্যাম্প বর্জনের হুমকি দিয়েছিলেন। কোচ হয়েছিলেন লাঞ্ছিত। পারফরম্যান্সে কি এসবেরও প্রভাব পড়েছে? হারুন মানতে চাইলেন না সেটা, ‘সে সমস্যা কাটিয়ে উঠেছিল সবাই।’ হারুনের ময়নাতদন্তে বরং উঠে এল, ‘আমরা ঢাকায় প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারিনি। অথচ ওমান জার্মানিতে চার মাস প্র্যাকটিস করে মালয়েশিয়ায় খেলতে গিয়েছিল।’
খেলোয়াড়েরা অবশ্য এশিয়া কাপের হতাশা যত দ্রুত সম্ভব ভুলে যেতে চান। তাঁদের প্রতিনিধি হয়ে স্ট্রাইকার রাসেল মাহমুদ জিমি যেমন বললেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য, এশিয়া কাপে ভালো খেলতে পারিনি। তবে এসব ভুলে এশিয়ান গেমসের দিকে নজর দিচ্ছি।’
কোচ নাভিদ আলমের সঙ্গে এখনো দুই মাসের চুক্তি আছে ফেডারেশনের। তবে আগামী এশিয়ান গেমস পর্যন্ত তাঁর চুক্তি নবায়ন করা হতে পারে বলে জানালেন হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহ।