আইরিশদের হারের সমান টাই!

শেষ বলে প্রয়োজন পাঁচ রান। মানে জিততে হলে চাই ছক্কা, চার হলে টাই। স্ট্রাইকে কেভিন ও’ব্রায়েন। ট্রেন্ট জনস্টন এসে ও’ব্রায়েনকে বললেন, ‘জয়সূচক শটটা এবার না হয় তোমার ব্যাট থেকেই আসুক!’

এই ‘এবার’ এর প্রেক্ষাপট বুঝতে যেতে হবে ছয় বছর পেছনে। ২০০৭ বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের সেই পাকিস্তান-বধ কাব্যের শেষাংশের রচয়িতা ছিলেন এই দুজনই। অভাবনীয় জয়ের সেই মুহূর্তে উইকেটে ছিলেন জনস্টন-ও’ব্রায়েন। আজহার মেহমুদকে স্যাবাইনা পার্কের গ্যালারিতে পাঠিয়ে জয় এনে দিয়েছিলেন জনস্টন। সেই সময়ের অধিনায়ক পরশু জয় এনে দেওয়ার দায়িত্বটা দিয়েছিলেন এখনকার সহ-অধিনায়ককে। ও’ব্রায়েন পারেননি অল্পের জন্য। শেষ তিন বলে প্রয়োজন ছিল ১৩, সাঈদ আজমলের বলে ছয় ও দুই নেওয়ার পর শেষ বলে মেরেছেন চার। ম্যাচ টাই!

কিংস্টনে লক্ষ্য ছিল মাত্র ১৩৩, আইরিশরা জিতেছিল ৩ উইকেটে। পরশু ডাবলিনে লক্ষ্য ছিল ৪৭ ওভারে ২৭৬। দুই দলের শক্তির ব্যবধানকে বিবেচনায় নিলে আইরিশদের এই টাইকে জয়ের সমতুল্যই বলতে হয়। তবে ও’ব্রায়েন বুঝিয়ে দিলেন, মাঠের ক্রিকেটে আইরিশদের এগিয়ে যাওয়ার একটা কারণ তাদের মানসিকতাও। জয়ের সমান নয়, ও’ব্রায়েনের কাছে এই টাই হারের মতো, ‘জয়ের এত কাছে গিয়েছিলাম যে টাইকে হারের মতোই মনে হচ্ছে। অল্পের জন্য পারলাম না। আজমলের শেষ বলটা যদি না খেলে ছেড়ে দিতাম, হয়তো ওয়াইড হতো। এসব মুহূর্তে আসলে সহজাত প্রবৃত্তিতেই লোকে ব্যাট চালিয়ে দেয়। যাই হোক, এখন আর বলে লাভ নেই। কেউ আসলে টাই করার জন্য মাঠে নামে না, নামে জয়ের জন্য। এ জন্যই সত্যি বলতে এই টাইকে মনে হচ্ছে হারের মতো।’

৪৭ বলে অপরাজিত ৮৪ করে ম্যাচ-সেরা ও’ব্রায়েনই। অলরাউন্ডারের ১১ চার ও দুই ছক্কার ইনিংসটা অনেকটাই আড়াল করে দিয়েছে দুই দলের দুজনের সেঞ্চুরি। বারবার বৃষ্টিতে ম্যাচ নেমে আসে ৪৭ ওভারে। মোহাম্মদ হাফিজের পঞ্চম সেঞ্চুরি (১১৩ বলে ১২২*) ও আসাদ শফিকের ৮৪ রানে পাকিস্তান তুলেছিল ৫ উইকেটে ২৬৬। ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে আইরিশদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৭৬। পল স্টার্লিংয়ের পঞ্চম সেঞ্চুরি (১০৭ বলে ১০৩) আইরিশদের এগিয়ে দেয় জয়ের পথে। এরপর ও’ব্রায়েনের ঝড়, শেষবেলায় খানিকটা আক্ষেপ! ওয়েবসাইট।