চ্যাম্পিয়নের মতোই খেলল ভারত

ওয়াসিম আকরাম
ওয়াসিম আকরাম

অসাধারণ খেলল ভারত। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের যেভাবে খেলা উচিত ঠিক সেভাবেই। টস জিতে শুরুর পর প্রতিটি বিভাগেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে পর্যুদস্ত করেছে তারা। প্রোটিয়া ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে ফর্মের তুঙ্গে উঠেছে শিখর ধাওয়ান।
আমার বিচারে অন্যতম ফেবারিট দক্ষিণ আফ্রিকা, কিন্তু রোববারের ম্যাচে যেভাবে খেলল তাতে আমি সন্দিহান। ওরা নিজেরাও নিশ্চয়ই এখন এমনটাই ভাবছে। তবে ভারত তিন মাস ধরে অস্ট্রেলিয়ায় থাকার সুফলটা পাচ্ছে। কন্ডিশনের সঙ্গে ভালোই মানিয়ে নিয়েছে। ব্যাটিংটা ইতিবাচক হচ্ছে। আমি অজিঙ্কা রাহানেকে পরিপূর্ণ ব্যাটসম্যানই বলব। তার ব্যাটিং উপভোগ করি। অবশ্য ভারতের ব্যাটিং দেখাটা সব সময়ই উপভোগ্য।
২০১২ সাল থেকেই শেষের কয়েক ওভারে সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যানের নাম এম এস ধোনি। তার স্ট্রাইক রেট খুব ভালো। তার পরও কেন যে ধোনির জন্য ফাইন লেগ না রেখেই বোলিং করা হয়! শর্ট বল পেলেই ধোনি পুল ও হুক করতে ছাড়ে না, কিন্তু সেটা কে শোনে? ধোনি কখন যে ম্যাচ আপনার হাত থেকে নিয়ে যায় সেটা টেরও পাওয়া যায় না।
ভারতের স্পিনাররা দুর্দান্ত। তবে আমার কাছে শামি, উমেশ ও মোহিতের স্পেলটা ভালো লেগেছে। নিজেদের দায়িত্ব তারা পালন করেছে। বাউন্সারের সদ্ব্যবহার করেছে তারা, বিশেষ করে ব্যাটিংয়ের লেজের দিকে। দক্ষিণ আফ্রিকানদের পুরোপুরিই উদ্ভ্রান্ত মনে হয়েছে।
বড় টুর্নামেন্টে ভালো করাটাকে যেন নিয়মই বানিয়ে ফেলছে ভারত। আত্মবিশ্বাসই এই সাফল্যের মূলে। নিজেরা জানে তারা চ্যাম্পিয়ন। এমসিজির গ্যালারিও ছিল নীল সমুদ্র। মনে হলো মুম্বাই, দিল্লি কিংবা কলকাতায় বসে খেলা দেখছি। অবিশ্বাস্য দৃশ্য। খেলোয়াড়েরা এ থেকে দারুণ উদ্দীপ্ত হয়। এত সমর্থককে তো আর হতাশ করা যায় না। ভারত দুটি বড় ম্যাচ জিতল। অ্যাডিলেডে পাকিস্তানকে হারানোর পর অন্যতম ফেবারিটের বিপক্ষে ১৩০ রানের জয়। এই জয় ভারতের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকাকে করেছে হতোদ্যম। চাপের মুখে পড়লেই লড়াই ছেড়ে পালায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সমস্যাটা মূলত মানসিকতার। স্কোরবোর্ডে ৩০০ দেখেই ২ উইকেট হারিয়ে স্পিনার আসতেই ভেঙে পড়ল।
টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে ভারত ইতিবাচক মানসিকতা দেখিয়েছে। একই মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বোলিং নিয়ে উল্টোটা দেখিয়েছে ইংল্যান্ড। বন্ধু হিসেবে আমি সব অধিনায়ককেই বলব, একেবারে সবুজ উইকেট না হলে প্রথমে ব্যাটিং নাও। দিবারাত্রির ম্যাচে টস গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সন্ধ্যায় বল বেশি মুভ করে। তাই সাহস করে ব্যাট নেওয়াই ভালো। ভাগ্য সাহসীদেরই পক্ষে থাকে আর ধোনি যেমন সাহসী ও তেমনই ভাগ্যবান।
ভারতের রান ২৬০-২৭০ হলে সেটা দক্ষিণ আফ্রিকানদের জন্য ঠিক হতো। কিন্তু ডি ভিলিয়ার্সের রানআউটের পর তারা আশা হারিয়ে নিজেদের সামর্থ্য নিয়েই সন্দিহান হয়ে পড়ে। ভারতের ফিল্ডিংও ছিল অবিশ্বাস্য। ওরা সবাই ফিল্ডিংটা উপভোগ করেছে। (টিসিএম)।