মাশরাফি যখন বাবা

প্রায় দুই মাস পর কন্যা হুমায়ারাকে কাছে পেলেন মাশরাফি। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।
প্রায় দুই মাস পর কন্যা হুমায়ারাকে কাছে পেলেন মাশরাফি। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।

বিশ্বকাপের আগে কিশোর আলোর এক সাক্ষাৎকারে মাশরাফি বিন মুর্তজার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘অনেক দেশেই খেলতে গিয়েছেন। কোন দেশটি সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে?’ বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের উত্তর, ‘নিজের দেশ ছাড়া অন্য কোথাও ভালো লাগে না।’ সেই মাশরাফিকে দলের বিরাট দায়িত্ব নিয়ে বিশ্বকাপ-মিশনে দেশের বাইরে থাকতে হলো প্রায় দুই মাস।
অস্ট্রেলিয়ায় থাকার সময়ই খবর পেলেন টাইফয়েডের সঙ্গে মূত্রাশয়ের সংক্রমণে তাঁর পাঁচ মাসের ছেলে সাহেল মুর্তজা মারাত্মক অসুস্থ। একটা সময়ে চলেও আসতে চেয়েছিলেন দেশে। কিন্তু যার কাঁধে বাংলাদেশ দলের বিশাল দায়িত্ব, তাঁকে ভেঙে পড়লে চলবে কী করে! ভেঙে পড়েননি। সবার আগে যে দেশ! আর দেশের প্রেরণায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন প্রতিটি ম্যাচের আগুন-পরীক্ষায়। সে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়েই বীরের বেশে গত রাতে ফিরেছেন দেশে। দেশের মাটি স্পর্শ করার পর পরই মন নিশ্চয়ই ব্যাকুল হয়ে ছিল প্রিয় সন্তানদের মুখ দেখার জন্য। কিন্তু তখনো দায়িত্ব যে শেষ হয়নি। সাংবাদিকদের রাশি রাশি প্রশ্নের ক্ষুধা মেটাতেই হলো। আর সেই আনুষ্ঠানিকতা সেরেই দ্রুত ফিরে গিয়েছেন আপনজনের কাছে।
দেশে ফিরেই মেয়ে হুমায়রা মর্তুজাকে টেনে নিয়েছেন কোলে। প্রিয় কন্যাকে আদর করার একটি ছবিও পোস্ট করেছেন ফেসবুকে। সন্তানদের জন্য বাবার মন কতটা কাঁদে, ছবিই যেন সব বলে দেয়। এরপর নিশ্চয় অসুস্থ নবজাতককে দেখে অশান্ত মনটা শান্ত হয়েছে খানিকটা। এ যেন মাঠে প্রতিপক্ষের বুকে কাঁপন তোলা মাশরাফি নন; নন বাংলাদেশ দলের ঝানু অধিনায়ক। তিনি এ ক্ষেত্রে স্রেফ বাবা, সন্তানের সান্নিধ্য পেতে যার মনটা ব্যাকুল। হৃদয়টা যার নরম রোদের মতো!