তবু গর্বিত ম্যাককালাম

এত কাছে তবু এত দূর! নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ম্যাককালামের চোখেমুখে স্বপ্নভঙ্গের বেদনা। কাল মেলবোর্নে l এএফপি
এত কাছে তবু এত দূর! নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ম্যাককালামের চোখেমুখে স্বপ্নভঙ্গের বেদনা। কাল মেলবোর্নে l এএফপি

স্বপ্নের পথচলাটা স্বপ্নের মতো শেষ হলো না। নিউজিল্যান্ড হোঁচট খেলো তীরে এসে। তাই অধরা রয়ে গেল বিশ্বকাপ ট্রফিটাও। কিছুটা আক্ষেপ তো আছেই নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালামের। তবে সেই আক্ষেপের চেয়ে বেশি আছে গর্ব। ফাইনালের আগ পর্যন্ত পুরো টুর্নামেন্টে যেভাবে খেলেছে তাঁর দল সেটা কিউই সমর্থকদের যেমন আনন্দ দিয়েছে, তেমনি আনন্দ পেয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীরাও। আর সেটা নিয়েই গর্বিত ম্যাককালামও।
এর আগে ছয়বার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেললেও এবারই প্রথম ফাইনালে ওঠে নিউজিল্যান্ড। গ্রুপ পর্বের ছয় ম্যাচসহ কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে দুর্দান্ত খেলে ম্যাককালামের দল। অবশেষে কাল ফাইনালে মাইকেল ক্লার্কের অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৭ উইকেটে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের। ম্যাচ শেষে হারের আক্ষেপের চেয়ে ম্যাককালামের মুখে বেশি শোনা গেছে প্রতিপক্ষের প্রশংসা, ‘পুরো টুর্নামেন্টেই আমরা অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছি। তবে আজ অস্ট্রেলিয়ার মতো দুর্দান্ত একটি দলের মুখোমুখি হয়েছিলাম, যারা নিজেদের সেরা খেলাটা খেলেছে। জয়টা ওদের প্রাপ্য ছিল। আমরা এ হার থেকে শিক্ষা নিতে পারি। কিন্তু একই সঙ্গে এটাও স্বীকার করতে হবে, কখনো কখনো দৌড়ে আপনাকে দ্বিতীয়ই হতে হবে। কেউ হারবে কেউ জিতবে বলেই তো খেলা জিনিসটার জন্ম হয়েছে।’
শুধু ট্রফিটাই জেতা হয়নি নিউজিল্যান্ডের। তবে বাকি সবকিছুকেই এ টুর্নামেন্ট থেকে নিউজিল্যান্ডের প্রাপ্তি বলে মনে করেন ম্যাককালাম, ‘আমরা শিরোপা জিততে পারিনি। কিন্তু সে কারণে আমাদের আফসোস নেই। বিশ্বকাপে দারুণ ক্রিকেট খেলেছি এবং মাথা উঁচু করেই বিদায় নিচ্ছি। এটা আমাদের জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত। যেভাবে আমরা ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করেছি সেটাও মনে রাখার মতো। আমি মনে করি এই টুর্নামেন্টে আমাদের যা অর্জন, সেটা নিয়ে গর্ব করা যায়।’
পুরো টুর্নামেন্টেই দারুণ আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলেছে নিউজিল্যান্ড। অধিনায়ক ম্যাককালামের আক্রমণাত্মক কৌশল প্রশংসিত হয়েছে। হারের কারণে সেই কৌশল বদলাবেন না বলেও জানালেন ম্যাককালাম, ‘পুরো টুর্নামেন্টে আমরা এভাবে খেলেছি বলেই প্রতিপক্ষ আমাদের সমীহ করেছে। আমরা নিজেরাও এভাবে খেলেই আনন্দ পেয়েছি। ভয়ডরহীন এই ক্রিকেটই আমাদের সাফল্যের মন্ত্র। সুতরাং এটা বদলানোর প্রশ্নই ওঠে না।’
টুর্নামেন্টজুড়ে তাঁর দলের প্রতি আন্তরিকতা ও সমর্থনের জন্য কিউইদের কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন ম্যাককালাম, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী জন কি, কিংবদন্তি ক্রিকেটার মার্টিন ক্রো বিভিন্ন সময়ে আমাদের ড্রেসিংরুমে এসেছেন, উৎসাহ দিয়েছেন। দেশের মানুষ সব সময় আমাদের পাশে ছিল। আজও অনেক কিউই সমর্থক আমাদের জন্য গলা ফাটাতে মেলবোর্নে উড়ে এসেছেন। যদি তাদের ট্রফিটা উপহার দিতে পারতাম তাহলে দারুণ ব্যাপার হতো। তবে আমার মনে হয় আমরা যা করেছি তাতেও সবাই আমাদের নিয়ে গর্বিত হবে।’ আইসিসি-ক্রিকেট।