তবু সর্বকালের সেরা

ফাইনালে হারের পর যেন নিঃস্ব–রিক্ত গ্রান্ট এলিয়ট, পাশে  সতীর্থ টিম সাউদি। গোটা নিউজিল্যান্ড দলই ছিল হতাশায় নিমজ্জিত পরশু মেলবোর্নে  l ফাইল ছবি
ফাইনালে হারের পর যেন নিঃস্ব–রিক্ত গ্রান্ট এলিয়ট, পাশে সতীর্থ টিম সাউদি। গোটা নিউজিল্যান্ড দলই ছিল হতাশায় নিমজ্জিত পরশু মেলবোর্নে l ফাইল ছবি

রাগবি-পাগল দেশ ভাসছিল ক্রিকেটের জোয়ারে। এমনিতে নিস্তরঙ্গ কিউইরা মেতেছিল ক্রিকেট উৎসবে। তবে তাসমান সাগরের অপর পাড়ে আছড়ে পড়েই থমকে গেল সেই জোয়ার। তবে জোয়ার থেমে গেলেও আবেগের পলি তো জমে আছে! ফাইনালে হারলেও তাই দলকে অভিনন্দনে ভাসাচ্ছে গোটা নিউজিল্যান্ড। ফাইনাল হারের তাৎক্ষণিক হতাশার জায়গা নিয়েছে এখন ফাইনাল খেলতে পারার তৃপ্তি। স্বপ্নভঙ্গের বেদনা ছাপিয়ে এখন স্বপ্নের কাছাকাছি যেতে পারার সুখ। সঙ্গে আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন!
সাধারণ মানুষের এই আবেগটাকেই ধারণ করেছে নিউজিল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম। ব্রেন্ডন ম্যাককালামের এই দলকে বলা হচ্ছিল নিউজিল্যান্ডের সর্বকালের সেরা দল। হেরাল্ড অন সানডে-তে প্রখ্যাত ক্রিকেট লিখিয়ে অ্যান্ড্রু অল্ডারসন লিখেছিলেন, ‘এই নিউজিল্যান্ড দল আমাদের গোট, GOAT—গ্রেটেস্ট অব অল টাইম।’ ফাইনালে হারেও সেই ভাবনা বদলায়নি। ফাইনাল শেষে ম্যাককালাম বলেছিলেন, ‘আক্ষেপ নেই।’ সেটাই প্রতিধ্বনিত হয়েছে গণমাধ্যমে। নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড যেমন লিখেছে, ‘শ্রেয়তর দলের কাছে হেরেছি আমরা।’ পত্রিকাটির ক্রিকেট প্রতিনিধি িডলান ক্লেভার লিখেছেন, ‘ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া ভালো শিক্ষা দিয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। তবে আগের ৬ সপ্তাহ ভুলে যাবেন না...!’ বিশেষ সংখ্যা বের করে দ্য প্রসেস শিরোনাম করেছে, ‘স্মরণীয় এক ভ্রমণ।’
সাবেক কিউই পেসার ও ডমিনিয়ন পোস্ট-এর ক্রীড়া সম্পাদক জোনাথন মিলমউ, ‘বড় বাউন্ডারি বা তাসমানের ওপারে প্রথম ম্যাচ, ম্যাচের আগে আলোচিত এসব কোনোটির কারণেই হারেনি নিউজিল্যান্ড। অসাধারণ খেলতে থাকা এক অস্ট্রেলিয়া দলের কাছে আমাদের দল হেরেছে সোজাসাপ্টা। ফাইনাল হারের ময়নাতদন্ত অবশ্যই হবে। তবে ফাইনালের আগ পর্যন্ত প্রায় নিখুঁত খেলা উপহার দেওয়া এই দলটির ওপর অবশ্যই যথেষ্ট শ্রদ্ধা রাখতে হবে।’
তাসমান সাগর পাড়ি দিয়ে খেলা দেখতে যাওয়া ক্রিকেটপ্রেমী রেগান টেইট রেডিও নিউজিল্যান্ডে বলেছেন, ‘ফাইনালে হেরে হতাশ অবশ্যই। তবে দলকে নিয়ে আমি গর্বিত, টুর্নামেন্টজুড়ে অসাধারণ খেলেছে। ফাইনালে সেরাটা খেলতে পারেনি, তার পরও মাথা উঁচু রাখতে পারে।’ জাতীয় এই প্রচারমাধ্যম স্বপ্ন দেখাচ্ছে সুন্দর আগামীর, ‘ম্যাককালামের নেতৃত্বে ও হেসনের কোচিংয়ে সামনে আসছে আরও সোনালি দিন।’
যদিও ম্যাককালাম ওয়ানডে আর খেলবেন কি না সেই সংশয় আছে। ফেয়ারফ্যাক্স মিডিয়ার খবর, টেস্ট ক্যারিয়ার আরও দীর্ঘ করতে ওয়ানডে ছেড়ে দিতে পারেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক। ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের জন্য গড়ে তোলা কেন উইলিয়ামসনও বেশ পরিণত এখনই। তবে কোচ হেসনের আশা, ম্যাককালাম থাকবেন, ‘আমাদের জন্য ব্রেন্ডন অনেক গুরুত্বপূর্ণ একজন। খেলার সুরটা ধরিয়ে দেয় ও, ছেলেরা ওর জন্য খেলতে ভালোবাসে। অবশ্যই আশা করি ও থেকে যাবে। তবে সত্যি বলতে, আমি এখন ওসব ভাবছিও না। এখনো বিশ্বকাপে ফিরে তাকানোর সময়, ভবিষ্যৎ ভাবা যাবে সামনে।’ এএফপি, রয়টার্স, ক্রিকইনফো।