'তামিমকে বললাম, চল রেকর্ডটা ভাঙি'

নিজেকে দারুণভাবেই প্রমাণ করলেন ইমরুল কায়েস ছবি: শামসুল হক
নিজেকে দারুণভাবেই প্রমাণ করলেন ইমরুল কায়েস ছবি: শামসুল হক

তামিম ইকবাল-ইমরুল কায়েসের বেশ কয়েকটি রেকর্ড গড়া হয়েছে গতকালই। আজও একটা মাইলফলক ছুঁলেন দুই ব্যাটসম্যান। টেস্ট ইতিহাসে এই প্রথম ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসে উদ্বোধনী জুটি ৩০০ রান এল। সেই দুজন বাংলাদেশেরই দুই ব্যাটসম্যান!
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন তামিম। কিন্তু ইমরুলের ফর্ম নিয়ে হয়েছে নানা কথা। ওপেনার এনামুল হকের চোটের কারণে হঠাৎ করেই বিশ্বকাপে সুযোগ মিলেছিল তাঁর। কিন্তু ক্রিকেটের বড় মঞ্চে তেমন কিছু করতে পারেননি। তিন ম্যাচ খেলে দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি একটিতেও। একের পর এক সমালোচনার তির ছুটে আসছিল ইমরুলের দিকে। টেস্ট দলে জায়গা পাওয়া নিয়েও কত প্রশ্ন!
অথচ আগের টেস্টেই জিম্বাবুয়ের বিপ‌ক্ষে পেয়েছিলেন সেঞ্চুরি। পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনা টেস্টে প্রথম ইনিংস থেমেছিল ৫১ রানে। এবার ভুল করেননি। তামিম ইকবালের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই পেলেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। এমন ইনিংসে তৃপ্ত হলেও উচ্ছ্বসিত নন। গতকাল সন্ধ্যায় কথা হয়েছিল ইমরুলের সঙ্গে। নিজের সেঞ্চুরির চেয়ে দলের সুবিধাজনক অবস্থাকেই বড় করে দেখেছেন বাঁহাতি ওপেনার, ‘দলটা দাঁড়াতে পেরেছে সে জন্য খুশি। ম্যাচে ফিরে আসায় স্বাভাবিকভাবেই ভালো লাগছে।’
পুরোনো সব রেকর্ড ভেঙে তামিমের সঙ্গে ইমরুল গড়েছেন নতুন জুটির রেকর্ড। যেকোনো উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান তোলা প্রসঙ্গে বললেন, ‘যখন ১৫০ পার করলাম, তখন তামিমকে বললাম, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই উদ্বোধনী জুটিতে তোর-আমার সর্বোচ্চ জুটি আছে (২২৪ রান)। চল আজ ওটা টপকাই। ব্যস, এরপর হয়েও গেল।’
মাঝে বেশ চাপেই ছিলেন। সে চাপ কাটিয়ে ফর্মে ফিরেছেন। কিছুটা অনুযোগের সুরে বললেন, ‘হঠাৎ বিশ্বকাপে খেলতে গিয়ে ওয়ানডেতে খারাপ খেলেছি বলে মানুষ নানা কথা বলেছে। আমাকে কেন দলে নেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন। খুব খারাপ লেগেছে। যখন ভালো খেলি, তখন কত মাতামাতি। আর খারাপ খেললেই নানা কথা। সত্যি খারাপ লাগে তখন।’
সর্বোচ্চ বলেই নয়, ক্যারিয়ারের তিন সেঞ্চুরির মধ্যে এটিকে এগিয়ে রাখছেন ভিন্ন কারণে। ইমরুল জানালেন, ‘এ সেঞ্চুরির জন্য দল লড়াইয়ে ফিরে এসেছে। এ সেঞ্চুরিটার জন্য দল ভালো অবস্থানে আছে। আউট হয়ে গেলে (গতকাল) দলের সমস্যা হতে পারত। এ কারণে এটি এগিয়ে রাখব।’
তামিমের মতো ইমরুলও শুরু থেকে বেশ আক্রমণাত্মক ছিলেন। কারণটা ব্যাখ্যা করলেন এভাবে, ‘আমি যখন সেট হয়ে গিয়েছিলাম, শট খেলার জন্য বল খুব ভালো পাচ্ছিলাম। এ কারণে স্বচ্ছন্দেই এগিয়েছি।’
আজও স্বচ্ছন্দে এগোচ্ছিলেন। কিন্তু জুলফিকার বাবরের বলে শট খেলতে গিয়ে ১৫০ রানেই থামল ইমরুলের দারুণ ইনিংসটি। কিন্তু তার আগে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসেরই যে এক অনন্য রেকর্ডের অংশীদার তিনি।