'পতনে'ও অবিচল নাদাল

রোঁলা গারোয় আবার ঘুরে দাঁড়ানোর আশা নাদালের l এএফপি
রোঁলা গারোয় আবার ঘুরে দাঁড়ানোর আশা নাদালের l এএফপি

শুধু এই বছরটাই নয়, চোট আর ফর্ম মিলিয়ে কয়েক বছর ধরেই সময়টা ভালো যায়নি রাফায়েল নাদালের। এর মধ্যেও প্যারিসের লাল দুর্গে শ্রেষ্ঠত্বের ঝান্ডাটা উড়িয়েছেন। মধ্যগগন থেকে ক্যারিয়ার সূর্য অস্তাচলের দিকে এগোলেও ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতে প্রমাণ করেছেন, দু-একটা ‘তালুক’ হাতছাড়া হলেও তিনিই ক্লে কোর্টের রাজা! তবে এত দিন ধরে আগলে রাখা ফ্রেঞ্চ ওপেনের ‘তালুক’টাও এবার হাতছাড়া হলো। তাহলে নাদাল-সাম্রাজ্যের পতন হলো আক্ষরিক অর্থেই!
পতন ভেতরে ভেতরে রাস্তা খুঁজে নিতে শুরু করেছিল আরও আগে। মন্টে কার্লো মাস্টার্স, বার্সেলোনা ওপেন এবং রোম মাস্টার্সকে উদাহরণ হিসেবে বলা যায়। ২০০৫ থেকে ২০১২—টানা ৮ বারের চ্যাম্পিয়ন নাদাল মন্টে কার্লোয় শেষ শিরোপাটি জিতেছেন ওই ২০১২ সালেই। বার্সেলোনা ওপেনের ৮ শিরোপার সর্বশেষটি এসেছে দুই বছর আগে। সপ্তমবারের মতো রোম মাস্টার্সও জিতেছেন ২০১৩ সালে। ক্লে কোর্টের এসব টুর্নামেন্টের একটিতেও এ বছর ফাইনালে উঠতে পারেননি। একে একে দুর্গের দখল হারাতে থাকা নাদাল হারিয়ে ফেললেন দখলে থাকা শেষ দুর্গ ফ্রেঞ্চ ওপেনও। রেকর্ড ৯ বারের ফ্রেঞ্চ ওপেন চ্যাম্পিয়ন নাদালের এই সাম্রাজ্যচ্যুতি সময়ের ব্যাপারই হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে ২৯তম জন্মদিনে এই ‘পতন’ দেখেও নাদাল তাই নিরাবেগ, ‘এ বছর আমি বেশি জিততে পারিনি, তাই এটা আমার কাছে বড় কোনো বিস্ময় নয়।’
পরশু ফ্রেঞ্চ ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে পড়তি ফর্মের নাদালের বিপরীতে কোর্টে ছিলেন সেরা ফর্মের জোকোভিচ। ম্যাচটিও তাই একপেশে হলো, জোকোভিচ সরাসরি জিতলেন ৭-৫, ৬-৩, ৬-১ গেমে। ফোরহ্যান্ড বরাবরই নাদালের শক্তি। কিন্তু এদিন ফোরহ্যান্ডেও পারলেন না। অবলীলায় খেলে গেছেন জোকোভিচ। রোলাঁ গারোয় আগে দেখা যেত এক জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলছেন নাদাল। নেটের অন্য প্রান্তে বেসলাইনের এপাশ থেকে ওপাশ ছোটাছুটি করছেন প্রতিপক্ষ। কিন্তু এদিন ক্লে-কোর্টের রাজার ক্ষেত্রে ঘটল উল্টোটা, এই নাদাল যেন নিঃশেষিত। পরশু ম্যাচের পর জোকোভিচের শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিয়েছেন নাদাল, ‘এটাই স্বাভাবিক। যখন আপনার প্রতিপক্ষ আপনার চেয়ে ভালো অবস্থায়, ভালো খেলে তখন এটাই ঘটে এবং ঘটেছে। তাই তাকে আমার অভিনন্দন জানাতেই হবে।’
ফ্রেঞ্চ ওপেনে এবারই প্রথম জোকোভিচের কাছে হারলেন নাদাল। আর প্যারিসে ১০ বছরের মধ্যে এটি তাঁর দ্বিতীয় হার। তবে কেউ যদি মনে করেন—শেষবারের মতো নাদালকে দেখে ফেলল লাল মাটির গ্র্যান্ড স্লাম, সেটা ভুল। ১৪টি গ্র্যান্ড স্লামের মালিক বলছেন, এখানেই তাঁর শেষ নয়, ‘২০০৯ সালে এখানে হেরেছিলাম আমি। হারলাম ২০১৫-তেও। এটাই শেষ নয়। পরের বছর আবার ফিরে আসব আমি। ফিরব আরও ভালো প্রস্তুতি নিয়ে, আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে।’ এএফপি।