ম্যাচসেরার পুরস্কার মেসির প্রত্যাখ্যান!

প্যারাগুয়ের আকস্মিক ঘুরে দাঁড়ানোয় হতবিহ্বল মেসি। ফাইল ছবি
প্যারাগুয়ের আকস্মিক ঘুরে দাঁড়ানোয় হতবিহ্বল মেসি। ফাইল ছবি

চারবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার। ট্রফি শোকেসে অভাব নেই ট্রফির। ক্লাব পর্যায়ে বার্সেলোনা দলের হয়ে সম্ভাব্য সব শিরোপাই জিতেছেন। ব্যক্তিগত অর্জনের তালিকাটাও লম্বা। কিন্তু লিওনেল মেসির আর ব্যক্তিগত অর্জন চাই না। নিজেই একবার বলেছিলেন, ‘আমার সব ট্রফি দিয়ে দেব, বিনিময়ে আর্জেন্টিনার হয়ে কিছু চাই।’

আর তাই ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেও যে ম্যাচে ২-২ ড্র হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়, সেটিও ম্যাচের শেষ মুহূর্তের গোলে; সেই ম্যাচেরসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার তিনি চান না। প্যারাগুয়ে ম্যাচে দুর্দান্ত খেলার পুরস্কার হিসেবে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু মেসি সবিনয়ে সেই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন। কোনো একটা বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ম্যাচসেরার পুরস্কার কেউ ফিরিয়ে দিয়েছেন, খবরটা বিরল বলতেই হচ্ছে।
২০১৪ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে টানা তিন ম্যাচে পেয়েছিলেন ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার। দলকে টানা তিন ম্যাচ জিতিয়েছিলেন একাই। ফাইনালে দলকে তুলতে বড় ভূমিকা রেখে জিতেছিলেন গোল্ডেন বল। কিন্তু মেসি বলেছিলেন, এই গোল্ডেন বল তিনি চাননি। চেয়েছিলেন বিশ্বকাপ ট্রফিটা।
এবারের কোপা আমেরিকার প্রথম ম্যাচেও ছিল মেসি-ঝলক। ম্যাচে পেনাল্টি থেকে একটি গোলও করেছিলেন। ড্র হলেও শেষ পর্যন্ত তাঁকেই ম্যাচসেরা করা হয়। কিন্তু প্রথমে ৬০ মিনিটে, এর পর ৮৯ মিনিটে আরেকটি গোল খেয়ে জেতা ম্যাচটি ড্র করে আর্জেন্টিনা। হতাশ মেসি শেষে ম্যাচসেরার পুরস্কার নেবেন না বলে জানান। এতে বিপাকে পড়ে স্পনসর মাস্টারকার্ড। এমন একটা পরিস্থিতি হতে পারে, আয়োজকদের মাথাতেই ছিল না। তড়িঘড়ি করে বিকল্প হিসেবে মেসির বদলে আর্জেন্টিনার ফুটবলারদের একজনকে বেছে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু বাকিরাও অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে পুরস্কার নিতে অস্বীকৃতি জানান। শেষে প্যারাগুয়ের পক্ষে প্রথম গোল করা নেলসন ভালদেজকে দেওয়া হয় এই পুরস্কার।
আজকের ম্যাচেও সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন মেসি। সেবার নেননি। এবার নিলেন। বুঝিয়ে দিলেন, দলকে জেতাতে না-পারা ম্যাচে ম্যাচসেরা হওয়ার কোনো মূল্য নেই তাঁর কাছে।