উত্তপ্ত উইম্বলডন!

গরমের হাত থেকে বাঁচতে শরীরে তোয়ালে জড়িয়েছেন রাফায়েল নাদাল ছবি: রয়টার্স।
গরমের হাত থেকে বাঁচতে শরীরে তোয়ালে জড়িয়েছেন রাফায়েল নাদাল ছবি: রয়টার্স।

গতকাল উইম্বলডনে দেখা গেল এক মজার দৃশ্য। সাবেক বিশ্বসেরা ক্যারোলিন ওজনিয়াকি দর্শকদের মধ্যে বিতরণ করছেন ‘আইস কফি।’ এমন দৃশ্যের জন্য দর্শকদের চোখ প্রস্তুত না থাকলেও এবারের প্রেক্ষিতে এটাকেই যেন মনে হচ্ছে স্বাভাবিক। প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে, দর্শক, খেলোয়াড়, কর্মকর্তা—সকলেরই। গরমের মাত্রাটা এতটাই ভয়াবহ যে কাল এক ‘বল বয়’কেও ঘুরে আসতে হয়েছে হাসপাতালে। বেচার ১৭ নম্বর কোর্টে নাকি পড়ে গিয়েছিল মাথা ঘুরে। কেবল এই বল বয়ই নয়, ফার্স্ট এইড চ্যারিটি সেইন্ট জন অ্যাম্বুলেন্সের হিসাব অনুযায়ী এখনো পর্যন্ত নাকি ১৭০ জনকে গরম-জনিত অসুস্থতার কারণে চিকিৎসা-সেবা দিতে হয়েছে তাদের। গতকাল অল ইংল্যান্ড ক্লাবের আশপাশের তাপমাত্রা কত ছিল জানেন? ৩৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত চার দশকের মধ্যে যা সর্বোচ্চ!
রথী-মহারথী টেনিস তারকারা নাকি প্রচণ্ড চিন্তিত এই গরম নিয়ে। তাদের একটু স্বস্তি দিতেই বোধ হয় আয়োজকেরা বরফ দেওয়া তোয়ালে বিতরণ শুরু করেছেন খেলোয়াড়দের মধ্যে। ১৮ নম্বর কোর্টে ফ্রান্সের পিয়েরে হিউজ হার্বার্টকে দেখা গেল বরফাচ্ছন্ন তোয়ালে জড়িয়ে বসে থাকতে। তার অস্ট্রেলীয় প্রতিপক্ষ বার্নার্ড টমিচ ও এই উষ্ণতায় বিরক্ত। তাঁকে তো একবার খেলার মাঝখানে একবার বিরতিও নিতে হয়েছে।
গরমের হাত থেকে বাঁচার জন্য সম্ভব সব ধরনের প্রয়াসই হাতে নেওয়া হচ্ছে। অল ইংল্যান্ড ক্লাবের আসন সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে এক হাজার। এতে করে যদি একটু দর্শকদের আরাম হয়। গরমে হাত-পা ছড়িয়ে যেন তাঁরা বসতে পারেন। গরমের হাত থেকে বাঁচতে তো এক পর্যায়ে কোর্টের ছাদ ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়, কিন্তু তাতেও উত্তপ্ত পরিস্থিতির কোনো উনিশ-বিশ ঘটেনি।
বার্নার্ড টমিচ জানিয়েছেন, খেলা তো খেলা, রাতে ঘুমাতেও নাকি তাঁর যথেষ্ট কষ্ট হচ্ছে। খেলার সময় মাথা ঘোরার কথাও তিনি বলেছেন।
তবে এই গরম খুব একটা কাবু করতে পারেনি মারিয়া শারাপোভাকে। দেশ রাশিয়া হলেও তিনি থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডাতে। তিনি জানিয়েছেন, ফ্লোরিডায় অনেক গরম পড়ে। ওই গরম এখানকার চেয়েও বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের আরেক তারকা জন ইসনার কণ্ঠ মিলিয়েছেন শারাপোভার সঙ্গে, ‘মারিয়া ঠিকই বলেছেন, ফ্লোরিডার গরম এর চেয়েও ভয়াবহ।’
এবারের উইম্বলডনের গরম টেনিসের ‘সাদা পোশাক’কে উৎসাহিত করবে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। উইম্বলডনের আয়োজকেরাও খেলোয়াড়দের পোশাক যে পুরোপুরি সাদা হয়, সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। এটাকে টেনিসের ঐতিহ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় আবার ভেবে বসবেন না, গরমের হাত থেকে বাঁচতে খেলোয়াড়দের জন্য সাদা পোশাকই যে সর্বোত্তম রক্ষাকবচ! সূত্র: এএফপি।