বউ-বান্ধবীদের টেনে আনায় ফুঁসছেন ক্লার্করা

সফরে নিজের সন্তান ও স্ত্রীকে সঙ্গে রাখতে চান ওয়ার্নার। কিন্তু সফরসঙ্গীদের থাকা ভালো নাকি খারাপ—এ নিয়ে চলা পুরোনো বিতর্ক শুরু হয়েছে আবার।
সফরে নিজের সন্তান ও স্ত্রীকে সঙ্গে রাখতে চান ওয়ার্নার। কিন্তু সফরসঙ্গীদের থাকা ভালো নাকি খারাপ—এ নিয়ে চলা পুরোনো বিতর্ক শুরু হয়েছে আবার।

অ্যাশেজে হেরে এমনিতেই মনমেজাজ খারাপ। চারদিক থেকে ধেয়ে আসছে সমালোচনার ঝড়। কারও ব্যাটিং নিয়ে সমালোচনা, কারও দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন। দলে ভাঙনের গুঞ্জনও। এর ওপর খেলোয়াড়দের বউ-বান্ধবীদের নিয়েও টানাটানি শুরু হয়ে গেল! কাঁহাতক আর সহ্য করা যায়? দলের হারের দায় সফরসঙ্গী বউ-বান্ধবীদের ওপর চাপানোতেই ফুঁসে উঠলেন মাইকেল ক্লার্করা।
যত দোষ নন্দ ঘোষ! শুরুটা করেছিলেন সাবেক তারকা ইয়ান হিলি। সিরিজ জয় নিশ্চিত হওয়ার আগেই খেলোয়াড়দের সফরসঙ্গী আনার অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। অ্যাশেজে অসহায় আত্মসমর্পণের পর অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়াও হামলে পড়েছে। দলের মধ্যে ঐক্য নেই, দলের দুই সিনিয়র খেলোয়াড়ের সঙ্গীনীদের মধ্যে ঝগড়াও নাকি প্রভাব ফেলেছে! পরিবারকে সময় দিতে গিয়ে ঠিকমতো ক্রিকেটে খেলোয়াড়েরা মনোযোগ দিতে পারেননি—এমনও লেখা হয়েছে।
ক্লার্ক আগেই এসব সংবাদকে ‘জঞ্জালের স্তূপ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। মিচেল জনসন ক্ষোভ ঝেড়েছেন ডেইলি টেলিগ্রাফের কলামিস্ট রেবেকা উইলসনের ওপর। রেবেকা লিখেছিলেন, সফরে পরিবারকেই বেশির ভাগ সময় দিতে হচ্ছে ক্রিকেটারদের। খেলা থেকে মনোযোগ সরে যাচ্ছে। জনসন রেগেমেগে পাল্টা জবাব দিয়েছেন, ‘আমি পরিবারের সঙ্গে পুরো সময় পার করছি কিনা সেটি আমার স্ত্রী ও মেয়েকে জিজ্ঞেস করলেই জানতে পারবেন। তবে সেখানে তাঁর নাক না গলানোই ভালো। তিনি সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। রেবেকা আপনি বরং বরং খেলাটি নিয়েই লিখুন।’
অস্ট্রেলিয়ার এই দলে কারও কারও ছোট সন্তান। ডেভিড ওয়ার্নারের যেমন। ওয়ার্নার ক্ষোভ ঝাড়ার বদলে বাস্তবতাটা বোঝাতে চাইলেন। ক্রিকেটাররা আর দশজন চাকুরের মতো নয়। নয়টা-পাঁচটা অফিস করে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরা। স্ত্রী-সন্তানদের সময় দেওয়া। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ত সূচির চাপে বেশির ভাগ সময়ই কাটে হোটেলে হোটেল। পরিবারের সঙ্গীদের সফরে রাখলে সেটাই বরং ভালো বলে মনে করেন এই ওপেনার। খারাপ সময়ে পরিবারের সবচেয়ে কাছের মানুষই পারে মুখে হাসি ফোটাতে।
ক্রিকেট এখন তিনটি ফরম্যাটে খেলা হয়। আন্তর্জাতিক সূচির বাইরে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আছে, আছে ঘরোয়া ক্রিকেটও। এক হিসাবে দে​খা গেছে, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটাররা বছরের তিন ভাগের দুই ভাগই বিদেশে কাটায়। এ কারণে খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাদের সঙ্গী বা পরিবারকে পাঠানোর পক্ষে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) এবং অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের সংগঠন (এসিএ)। শুধু তা-ই নয়, এই দুটো সংস্থা ভাগাভাগি করে খেলোয়াড়দের পরিবারের ব্যয়ও বহন করে।
এসিএর প্রধান নির্বাহী অ্যালিস্টার নিকলসন মনে করিয়ে দিয়েছেন, প্রতি বছর বড়দিন আর নববর্ষের সময়টাই দুটো টেস্ট খেলে অস্ট্রেলিয়া। মেলবোর্ন আর সিডনিতে। বাকিরা সবাই যখন এই সময়ে পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করে কাটায়, ক্রিকেটাররাই বা তা থেকে বঞ্চিত হবে কেন?