'ক্ষুধার্ত' ছিলেন ইমরুল!

ইমরুল, আজ যেন অচেনা! ছবি: শামসুল হক
ইমরুল, আজ যেন অচেনা! ছবি: শামসুল হক

বাদ পড়ে দলে ফেরার পর কেন জানি দারুণ খেলেন। ২০০৮-এ অভিষেকের পর পরই বাদ পড়েছিলেন। ২০১০ সালের ত্রিদেশীয় সিরিজে ফিরে দ্বিতীয় ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে করলেন ৭০। ২০১১ সালে আবার বাদ পড়লেন। ২০১৪তে ফিরেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫৯। এবার বিশ্বকাপের পর বাদ। দর্শক হয়ে দেখলেন পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দলের অবিস্মরণীয় জয়। এবারও দর্শক হয়েই কাটাতে হতো। আকস্মিক সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগালেন ইমরুল কায়েস।
আজ তাঁর ৮৯ বলে খেলা ৭৬ রানের ইনিংসটা অনেক দিক দিয়েই অন্য রকম। শুধু দলকে বাঁচিয়েছেন বলেই নয়, ইমরুল সম্ভবত আরও একবার বাঁচিয়ে দিলেন তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ার। যে ক্যারিয়ার সৌম্য-লিটনদের আবির্ভাবে শেষই হয়ে গিয়েছিল এক রকম। তাঁর গায়ে ভালোমতো ঠেসে বসেছিল ‘টেস্ট ব্যাটসম্যানে’র ​ছাপ্পর। ইমরুল আপত্তি করবেন কী করে, ওয়ানডেতে তাঁর স্ট্রাইক রেট যে ৬৫.১৫!
আজ যেন শুরু থেকেই নিজের ‘ধীরে চলো’ পরিচয়টা মুছে ফেলার প্রতিজ্ঞা করে নেমেছিলেন। বাংলাদেশের প্রথম চারটি এসেছে তাঁর ব্যাটে, ছক্কাটিও! শুধু তা-ই নয়, ইমরুল তাঁর ক্যারিয়ারে এই প্রথম চারটি ছক্কা হাঁকালেন। নিজেকে অতি আক্রমণাত্মক প্রমাণ করতে গিয়েই পর পর দু বলে ছক্কা হাঁকাতে চেয়েছিলেন। তাতেই সর্বনাশটা হলো। না হলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটাও পেয়ে যেতেন হয়তো।
দল থেকে যে বাদ পড়েছেন এর জন্য নিজেকে ছাড়া আর কাউকে দুষবেনই বা কী করে। আগের সাতটি ইনিংসে দুই অঙ্কই ছোঁয়া হয়নি। টানা ১৭ ইনিংসে মাত্র একটি ফিফটি। এবার ১৮ জনের প্রাথমিক দলে ছিলেন। কিন্তু ভবিষ্যৎ​টা জানেন বলেই নিজে থেকেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন জাতীয় লিগে ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেলবেন বলে। তাঁর ক্যারিয়ারটা যে ওখানেই। সৌম্যের চোট, এর পর সাকিব আল হাসানের কন্যার পাশে চলে যাওয়া আকস্মিক সুযোগটা এনে দিয়েছিল। আর সেই সুযোগ কী দারুণভাবেই না কাজে লাগালেন। হয়ে গেলেন ম্যাচ সেরা। ম্যাচ শেষে বললেনও, ‘বিশ্বকাপে ভালো করিনি। রান পাওয়ার জন্য তাই ক্ষুধার্ত ছিলাম। অপেক্ষায় ছিলাম সুযোগ পেলে নিজেকে প্রমাণ করব। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পেরে আমি সুখী।’
আরও একটা ওয়ানডেতে সুযোগ পাচ্ছেন। ‘​অচেনা’ ইমরুলের এই ছবি ধরে রাখতে পারলে হয়তো সুযোগ মিলবে টি-টোয়েন্টিতেও। ইমরুলের ক্ষুধাটা এক্ষুনি মিটে না গেলেই ভালো!