র‍্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে যাওয়ার জয়ও

আরও একটি সিরিজ জয়। ছবি: প্রথম আলো
আরও একটি সিরিজ জয়। ছবি: প্রথম আলো

‘ডেড রাবার’। সিরিজের অর্থহীন ম্যাচগুলোকে তা-ই বলা হয়। আজ হেরে গেলে বাংলাদেশের ক্ষতি হতো না সিরিজ আগেই জিতেছে বলে। কিন্তু আসলেই হতো না কি? এই একটা ম্যাচ হারলেই যে মহা মূল্যবান দুটো রেটিং পয়েন্ট হারিয়ে ফেলত বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েকে ৩-০তে ধবল ধোলাই নিশ্চিত করার বিনিময়ে বাংলাদেশ পেল ১ পয়েন্ট। আরও একটু এগিয়ে গেল র‍্যাঙ্কিংয়ে।
৬১ রানের এই জয় বাংলাদেশকে আরও একটু এগিয়ে দিল র‍্যাঙ্কিংয়ের ছয় নম্বরের দিকে। এখন যে জায়গাটি ইংল্যান্ডের দখলে। আবুধাবিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে খোঁড়াতে থাকা ইংল্যান্ড ম্যাচটি হেরে গেলে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের দূরত্ব কমে আসবে দুই পয়েন্টে। এখন বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট ৯৭
এই সিরিজে রেটিং পয়েন্টটাই এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, উলট-পুরাণটাই তাই শোনাতে হচ্ছে আগে। সাধারণত ম্যাচ রিপোর্টে সাধারণত পয়েন্ট-টয়েন্টের হিসাব আসে পরে। আগে আসে ম্যাচের নায়কদের কথা। আজ বল হাতে যেমন নায়ক মুস্তাফিজুর রহমান। ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আলোটা প্রায় একাই টেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু এবার সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে আড়ালে থাকলেন। আজ আট ওভার বোলিং করে ৩৪ রানে নিলেন ৫ উইকেট।
ছোট্ট ক্যারিয়ারে এরই মধ্যে তৃতীয়বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন। নয় ম্যাচে ২৬ উইকেট, ক্যারিয়ারে প্রথম নয় ইনিংসে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাওয়ার রেকর্ডটাও ছুঁয়ে ফেললেন। মুস্তাফিজের বোলিংয়েই ২১৫ রানে অলআউট জিম্বাবুয়ে। ছয় বোলার ব্যবহার করেছেন অধিনায়ক মাশরাফি। কেউ ফেরেনি খালি হাতে। মুস্তাফিজের দিনে বাকি পাঁচজন ভাগ করে নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
এমনিতে চেনা চিত্রনাট্যে হেঁটেই সমাপ্তি হলো বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ওয়ানডে সিরিজের। তিনটিতে বড় পরাজয়ই সঙ্গী। বাংলাদেশের কাছে টানা আটটি ওয়ানডেতে হারল জিম্বাবুয়ে। এটি তাদের তৃতীয়বারের মতো ধবল ধোলাই হওয়া। শেষ পর্যন্ত হাসিমুখে আরও একটি ট্রফি হাতে তুললেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।
হেরে গেলেও ট্রফিটা তাঁর হাতেই থাকত। তবে হাসিটা কত চওড়া হতো, বলা মুশকিল। শেষটা দেখে অবশ্য মনে হচ্ছে না ‘হেরে যাওয়া’র একটা শঙ্কাও জেগেছিল এই ম্যাচে। প্রথমবারের মতো কপালে ভাঁজ পড়েছিল মাশরাফির। একপর্যায়ে জিম্বাবুয়েকে ম্যাচ জিততে হলে ৮৬ বলে নিতে হতো ৯১ রান, হাতে ছিল ছয়টি উইকেট। অসম্ভব কোনো সমীকরণ তো নয়ই। ম্যালকম ওয়ালার এবং শন উইলিয়ামসের জুটিটাও ৫৯ রানের জুটি গড়ে ফেলে বেশ জাঁকিয়ে বসেছে। এই প্রথম মনে হচ্ছিল ‘ডিউ ফ্যাক্টর’টাই ভোগাচ্ছে!
প্রথমে আল আমিন, পরের ওভারেই মাশরাফি। ওয়ালার-উইলিয়ামসকে দুই ওভারের মধ্যে ফিরে ম্যাচেও ফিরে আসে বাংলাদেশ। বাকি কাজটুকু সেরে ফেলেন মুস্তাফিজ। দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দিয়ে শুরুটা করেছিলেন। শেষটাও টেনেছেন মুস্তাফিজই। এক সময় তো হ্যাটট্রিকের সামনেও দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। ছোট্ট ক্যারিয়ারে বেশ কবার হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়েও হ্যাটট্রিকটা করা হলো না।
হোক না, কিছু জাদু বাকি থাকাই তো ভালো!