ইশ্, একটুর জন্য...

মুস্তাফিজ, আবারও উদযাপনের কেন্দ্রে। ছবি: শামসুল হক
মুস্তাফিজ, আবারও উদযাপনের কেন্দ্রে। ছবি: শামসুল হক

আরাফাত সানি জানতে পেলে হয়তো মুস্তাফিজুর রহমানকে স্যরিই বলবেন। তিনি কী আর জানতেন, ৪৪তম ওভারে তাঁর তুলে নেওয়া উইকেটটি মুস্তাফিজকে এত বড় একটা অর্জন থেকে বঞ্চিত করবে! মুস্তাফিজের তখনো দুই ওভার বাকি। ‘প্রয়োজন’ ছিল একটি উইকেট। জিম্বাবুয়েরও উইকেট বাকি ছিল একটি। আগের দুই ওভারে তিন উইকেট তুলে নেওয়া বাঁ হাতি পেসার আর আক্রমণে ফেরার সুযোগই পেলেন না। মুজারাবানিকে ফিরিয়ে সানি অলআউট করে দিলেন প্রতিপক্ষকে।
একটুর জন্য! একটুর জন্য বিশ্ব রেকর্ডটা ভাঙা হলো না মুস্তাফিজের। ক্যারিয়ারের প্রথম নয় ম্যাচে ২৬ উইকেট তুলে নিয়েছেন। শুরু থেকে নয় ম্যাচে ২৬ উইকেট তুলে নেওয়ার রেকর্ডটা ছিল নিউজিল্যান্ডের মিশেল ম্যাকলেনাহানের। তাঁর পাশে গিয়ে বসলেন মুস্তাফিজ। আরেকটি উইকেট নিতে পারলে নতুন করে লেখা হতো বিশ্ব রেকর্ড। সানি ‘দুঃখিত’ হতেই পারেন! অবশ্য এও বলতে পারেন, ‘কেন, আরেকটা রেকর্ড তো মুস্তাফিজ করলই।’ প্রথম ৯ ম্যাচে তিনবার ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব যে আর কারও নেই।
নিজের অষ্টম ওভারের শেষ চারটি বল যখন করছেন, স্লিপ ও গালি অঞ্চলে উইকেটরক্ষকসহ মোট আটজন খেলোয়াড়! ওয়ানডেতে খুবই বিরল দৃশ্য। ব্যাট করতে থাকা মুজারাবানির মনের অবস্থাটা কী ছিল তখন কে জানে। তবে মুস্তাফিজুরের উদ্দেশ্য সফল হলো না। কখনো ব্যাটের পাশে বাতাস লাগিয়ে বল চলে গেল, আবার কখনো স্টাম্পের ওপরের বলটায় ব্যাট পেতে দিয়ে বেঁচে গেলেন মুজারাবানি।
আট ওভার শেষে তাই ৫ উইকেট নিয়েই ‘সন্তুষ্ট থাকতে হলো মুস্তাফিজকে। মুজারাবানিরও স্যরি বলা উচিত। অবশ্য আউট হতে ‘চেষ্টা’র কোনো কমতি করেননি তিনি!
দিনটা যে নিজের করে নেবেন সেই পূর্বাভাস ছিলেন প্রথম ওভারেই। মাত্র দ্বিতীয় বলে ফিরিয়েছেন চামু চিবাভাকে। অন্য ওপেনারও তাঁরই শিকার। ৪ ওভারের প্রথম স্পেলটা শেষ হলো ২৪ রানে ওই দুই উইকেট শিকারে সন্তুষ্ট থেকে। ২৯ ওভারে আক্রমণে ফিরে দু ওভার হাত ঘোরালেন। উইকেটশূন্য। আবার ফিরলেন স্লগ ওভার শুরু হতে। জিম্বাবুয়ে তখন ৬ উইকেটে ২০৭। একেবারেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়নি।
সেই ছিটকে ফেলার কাজটা মাত্র তিন বলের মধ্যে করে ফেললেন। নিজের সপ্তম ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে ফেরালেন সিকান্দার রাজা ও লুক জঙ্গুয়েকে। হ্যাটট্রিকটা না হলেও আবার ফিরে এসে তুলে নিলেন পানিয়াঙ্গারাকে। ৫ উইকেট!
ওভার শেষে আম্পায়ারের কাছে ক্যাপ বুঝে নিয়ে যে ফিরে গেলেন, তখনো নিশ্চিত ছিলেন না আবারও আম্পায়ারকে ক্যাপ বুঝে দিয়ে বোলিং মার্কে ফেরা হবে্ না। সানিই যত ‘গোলমাল’ করে দিলেন!
অবশ্য মুস্তাফিজ বলতেই পারেন, বিশ্ব রেকর্ড দিয়ে কী হবে। দল জিতেছে, এটাই তো আসল!