নীরব বিদায় কি প্রাপ্য তাঁর?

বীরেন্দর শেবাগ। সংগৃহীত ছবি
বীরেন্দর শেবাগ। সংগৃহীত ছবি

ইচ্ছেটা খুব বড় কিছু নয়। মাঠে দাঁড়িয়ে বিদায় বলতে চেয়েছিলেন, এতটুকুই। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় দলে খেলার পর এতটুকু আশা করতেই পারেন বীরেন্দর শেবাগ। শচীন টেন্ডুলকার কিংবা কুমার সাঙ্গাকারার মতো আবেগঘন বক্তৃতায় ইতি টানতে চেয়েছিলেন ক্যারিয়ারের। কিন্তু ইচ্ছে পূরণ হয়নি। হবে কী করে, গত আড়াই বছর ধরেই তো দলের বাইরে এই মারকুটে ব্যাটসম্যান। ফলে মাঠ থেকে বিদায় বলার সুযোগটিও পাননি তিনি।
শেবাগের এমন নীরবে বিদায় বলা নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। যে খেলোয়াড়টির দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে ভারতীয় দলকে অজস্র ম্যাচ জিতিয়েছেন, দেশকে বারবার উচ্ছ্বাসে ভাসিয়েছে যার ব্যাট, ব্যক্তিগত রেকর্ড যাকে ক্রিকেট গ্রেটদের কাতারেই নিয়ে যায়, সেই শেবাগ বিদায় বেলায় একটা সংবর্ধনাও পাবেন না! বিদায় বলার পরও শেবাগের এই খেদ যায়নি, যখনই সুযোগ মিলেছে নিজের এই দুঃখের কথা জানিয়েছেন। হতাশাভরা কণ্ঠে বলেছেন, এই সম্মান পাওয়ার ভাগ্য হয়তো নেই তাঁর।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচের ঘটনায় অনেকেই আশান্বিত হয়েছিলেন। সেদিন মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল জহির খানকে। খেলে না হোক, জহিরের মতো মাঠ থেকে একটা বিদায় সংবর্ধনা তো প্রত্যাশা করতেই পারেন শেবাগ। সময় নামের নির্মম বাস্তবতায় দলে ব্রাত্য হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাতে তো কীর্তিগুলো ম্লান হচ্ছে না ইতিহাসের মাত্র চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে টেস্টে দুটো ট্রিপল সেঞ্চুরি করা শেবাগের।

বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখনো স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। তবে একটা ​ইঙ্গিত ছিল, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচটি হবে দিল্লিতে। সেখানেই শেবাগকে দেওয়া হবে সংবর্ধনা। শেবাগ তো দিল্লিরই সন্তান। কিন্তু ​দিল্লি টেস্টের আয়োজক জেলা ​ক্রিকেট সংস্থা (ডিডিসিএ) নিজেই হাজারটা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছে। ডিডিসিএ কর্তাদের এখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা।
এ অবস্থায় শেবাগের বিদায় সংবর্ধনার কথাবার্তা আবারও ঢাকা পড়ে গেছে কুয়াশার চাদরে। ম্যাচ শুরু আগামীকাল, অথচ গতকাল রাত পর্যন্ত এ ব্যাপারে এখনো সংবাদমাধ্যমকে কিছু জানানো হয়নি। সংবর্ধনা-সংক্রান্ত কিছুই নাকি জানেনও না দিল্লি ক্রিকেটের কর্মকর্তারা! বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে নাকি কিছুই জানানো হয়নি!
টেন্ডুলকার-সৌরভদে​র মতো সতীর্থদের কাঁধে চড়ে না হোক, একটা বিদায়ী ভাষণ দিয়ে, সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিদায় নিতে চেয়েছিলেন দীর্ঘ দিন খুনে মেজাজের ব্যাটিং করে দর্শকদের আনন্দ দেওয়া বীরু। কিন্তু এখনো পর্যন্ত মনে হচ্ছে না, ইচ্ছেটা পূরণ হবে। নীরব বিদায় কি শেবাগের মতো ক্রিকেটারের প্রাপ্য? সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।