'শচীন নামটা নিজেই একটা বিশেষণ'

অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে শচীন টেন্ডুলকার  ফাইল ছবি
অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে শচীন টেন্ডুলকার ফাইল ছবি

একজন ক্রিকেট মাঠের রাজা, আরেকজন রুপালি পর্দার। যাঁর যাঁর ভুবনে শ্রেষ্ঠ শচীন টেন্ডুলকার ও অমিতাভ বচ্চন। টেন্ডুলকারের অবসরলগ্নে ‘বিগ বি’ এই লেখাটি পোস্ট করেছেন নিজের ফেসবুক পেজে।
দেশের যেকোনো জায়গায় বা ক্রিকেট-বিশ্বে ‘শচীন টেন্ডুলকার’ নামটি উচ্চারণ করুন, সঙ্গে সঙ্গেই ভেসে উঠবে একটা মায়াবী হাসি। আমাদের জীবনে শচীন এমনই একটা জায়গা নিয়ে আছে।
মাঠে ভারতের খেলা চলছে। প্রথমেই আপনি জানতে চাইবেন ‘শচীন কি খেলছে?’, ‘সে কি ব্যাট করতে নেমেছে?’, ‘সে কত রান করেছে?’ ম্যাচটা কোন অবস্থায় আছে সেই প্রশ্নটা পরে। আপনার প্রশ্নটা হবে ‘লিটল মাস্টারকে’ নিয়ে।
শুধু ক্রিকেট দুনিয়াতেই নয়, আমাদের পুরো দেশটিতেই শচীন মানে আসলে কী সেটা ধারণা করা আমাদের অসাধ্য। সে ভালো মানে সবই ভালো। আমাদের জীবনে সে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ।
তার অবসরের খবর শুনে অনেকেরই হূৎস্পন্দন ক্ষণিকের জন্য থেমে গিয়েছিল। তার বিদায় মানে আমাদের জীবনযাপনের একটা অংশ আমাদের ছেড়ে চিরতরে চলে যাওয়া। আমি নিশ্চিত, খেলাটার অনেক ভক্ত ও সমঝদারদেরও একই অনুভূতি হচ্ছে। শুধু দেশে যারা আছে তাদেরই শুধু নয়, দেশের বাইরেও। সম্মানের সঙ্গেই বলছি, হয়তো অনেকে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাসও ফেলবে। আর তো তার প্রতিভাসঞ্জাত প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হবে না।
শচীনের খেলার ধরন, শৌর্য, দক্ষতা বা অসাধারণত্ব বিচার করার মতো টেকনিক্যাল বা পেশাদারি জ্ঞান আমার নেই। কিন্তু যখনই তার কথা ভেবে আমি একটু পেছনে ফিরে যাই, একটা ব্যাপার আমাকে সব সময় ভাবায়, ১৬ বছর বয়সে আমি কোথায় ছিলাম, কী করছিলাম! এরপর আমি আর অন্যকিছু ভাবতে পারি না। একটা বয়সে যখন ট্রাউজারের বোতাম লাগানোর জন্য কসরত করতে হতো, সেই অল্প বয়সে সে বিশ্বের ভয়ংকরতম বোলিং আক্রমণ সামলাচ্ছে। শুধু এটাই তো নয়, জয়ীও হচ্ছে! বাড়তি বিশেষণ-টিশেষণ না দিয়ে বলি, আমি শুধু বলব শচীন নামটা নিজেই একটা বিশেষণ। ‘লিজেন্ড’ ও ‘আইকন’ শব্দগুলো যেন তার জন্য কম হয়ে যায়। ‘মাস্টার ব্লাস্টারকে’ সংজ্ঞায়িত করতে বিশাল অভিধানেও খুঁজতে হবে নতুন শব্দ। তার অবিশ্বাস্য অবদানে ক্রিকেট অলংকৃত হয়েছে। ক্রিকেটে বা বর্ষপঞ্জিতেই শুধু তার নাম লেখা থাকবে না, লেখা থাকবে গর্বিত একটা জাতির ইতিহাসেও।