রোনালদোকে সেনাপতিই বলছেন ব্ল্যাটার

সেপ ব্ল্যাটার
সেপ ব্ল্যাটার

যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই ধেয়ে আসছে প্রশ্নটা। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে কি ইচ্ছা করেই খোঁচাটা দিয়েছেন সেপ ব্ল্যাটার? পরশু ইতালিতে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ফিফা সভাপতি। সেখানেও একই প্রশ্ন। মজার ব্যাপার, ব্ল্যাটার তাঁর কথা ফিরিয়ে নেননি। তবে এবার আর কোনো ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করেননি।

ঘটনার শুরু অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে। সেখানে মেসিকে ‘মা-বাবার সুবোধ ছেলে’ বললেও রোনালদো প্রসঙ্গ আসতেই যেন খানিকটা মতিভ্রম হয় ব্ল্যাটারের। রিয়াল মাদ্রিদ স্ট্রাইকারের ভঙ্গি অনুকরণ করে দেখিয়ে বলেছিলেন, ‘মাঠে ওর আচরণ অনেকটা সেনাপতির মতো।’

কথার চেয়ে ব্ল্যাটারের বলার ধরনটাই ছিল বেশি হুল ফোটানো। সে কারণে সমালোচনা কম সইতে হয়নি ফিফা সভাপতিকে। রোনালদোও যে ভেতরে ভেতরে ক্ষিপ্ত ছিলেন সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন গোলের পর ‘কমান্ডার স্টাইলে’ উদ্যাপন করে। ব্ল্যাটারের এই বক্তব্য রোনালদোর ফুটবল সত্তাকেই যেন চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। এরপরের ছয় ম্যাচে ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে ১৩ গোলে জবাব দিয়েছেন পর্তুগিজ তারকা।

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো

পরশু রোমেও ব্ল্যাটার বোঝালেন তাঁর অবস্থানের নড়চড় হয়নি। তাঁর অকপট জবাব, ‘আমি যেটা বলেছি সেটা ফিরিয়ে নেব না।’ তবে আগের কথাটার সঙ্গে যোগ করলেন ‘অসাধারণ’ শব্দটা, ‘আমার কাছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এখনো একজন অনন্যসাধারণ খেলোয়াড়। মাঠে ও অসাধারণ সেনাপতিও। আমার একটাই আফসোস, সেবার আমি কথাটা একটু বেশিই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলে ফেলেছিলাম।’

ফিফা এরই মধ্যে ব্যালন ডি’অরে ভোট দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়েছে। সাধারণ্যে ধারণা, এতে রোনালদোরই লাভ হবে। ব্ল্যাটার নিজে কি মনে করেন এবার রোনালদো পাচ্ছেন ব্যালন ডি’অর? ফিফা সভাপতি তাঁর নিজের পছন্দটা প্রকাশ করেননি কোনোভাবেই, ‘অবশ্যই, আমাদের প্রত্যেকেরই মনের মধ্যে পছন্দের একজন আছে।’

এই মুহূর্তে অবশ্য ব্যালন ডি’অরের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মাথা ঘামাতে হচ্ছে ব্ল্যাটারকে। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে বিতর্ক জমে উঠেছে। কাতারে অবকাঠামো নির্মাণে সংশ্লিষ্ট অভিবাসী শ্রমিকেরা মানবেতর অবস্থায় আছেন, এমন একটা প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান-এ। পরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও সোচ্চার হয়েছে এই বিষয়ে। ফিফা ভালো চাপেই আছে। কেন কাতারকে বিশ্বকাপের আয়োজনভার দেওয়া হলো, উঠেছে এমন প্রশ্নও। প্রশ্নটা যারা তুলেছে, সেই ইউরোপীয় দেশগুলোকেই কাঠগড়ায় তুললেন ব্ল্যাটার, ‘ইউরোপিয়ানরা অখুশি। কিন্তু ইউরোপিয়ান দেশগুলোর চাপেই কাতারে বিশ্বকাপে হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত অর্থনৈতিক স্বার্থ। দুটি দেশই এটা নিয়ে চাপ দিয়েছিল—জার্মানি ও ফ্রান্স। ইউরোপিয়ান রাজনীতিবিদ ও নেতাদের এটা ভাবা উচিত। সবকিছুর দায় ফিফার ওপর চাপালে চলবে না।’

২০২২ কাতার বিশ্বকাপের সময় নিয়েও আগের কথাটাই বললেন ফিফা সভাপতি, ‘আমার মনে হয় এটা বছরের শেষে করাটাই ভালো হবে।’ এএফপি।