'দ্রুততম মানবী'র আনন্দ

আজীবন সম্মাননা পাওয়া দু্ই কিংবদন্তি জাকারিয়া পিন্টু ও সুফিয়া খাতুন l প্রথম আলো
আজীবন সম্মাননা পাওয়া দু্ই কিংবদন্তি জাকারিয়া পিন্টু ও সুফিয়া খাতুন l প্রথম আলো

জীবনে কখনো হারতে শেখেননি। একে একে সিঁড়ি ভেঙে দৃপ্ত পায়ে এগিয়েছেন। ১৯৭৪ সালে প্রথমবার হয়েছিলেন দেশের দ্রুততম মানবী। তারপর ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৩—টানা সাত বছর সেই দ্রুততম মানবীর খেতাব সুফিয়া খাতুনকে বসিয়েছে ট্র্যাকের রানির আসনে। বেশ কয়েকবার জাতীয় প্রতিযোগিতায় জিতেছেন ‘ডাবল’, দুটি রিলে আর লং জাম্প মিলে এক আসরে ৫টি সোনা জয়ের রেকর্ডও আছে তাঁর নামের পাশে।
তবে জীবনের নানা অর্জনের খাতায় এখনো তাঁর রক্তে নাচন তোলে সেই দৌড়। ১৯৬৮ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে পাকিস্তান অলিম্পিকে দ্রুততম মানবী হওয়াটা দারুণ এক প্রেরণা ছিল তাঁর জন্য। সেসব দিন, সেসব সোনায় মোড়ানো স্মৃতির ভেলায় কাল ভাসলেন সুফিয়া খাতুন।
রূপচাঁদা-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা স্মারক ২০১৫ হাতে নিয়ে বলছিলেন ছোটবেলার কথা। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে জন্ম, কৈশোর কেটেছে সেখানেই। স্কুল, আন্তস্কুল, অল ইন্ডিয়া জুনিয়র অ্যাথলেটিকসে দ্রুততম মানবী কত কত ধাপ পেরিয়েছেন!
স্বর্ণালি সেই অতীতের স্বীকৃতি পেয়ে সুফিয়া খাতুনও অভিভূত, ‘আমি সব সময়ই ভাবতাম, একদিন না একদিন এই সম্মাননা পাব। আজ সেটি পেয়ে মনে হচ্ছে, জীবনে হয়তো কিছু করেছি। হয়তো খেলোয়াড় থেকে কোচ হয়ে খেলোয়াড় তৈরি করতে পেরেছি। তাই এই দিনটি আমার জীবনে অন্যতম শ্রেষ্ঠ এক দিন।’
অনুষ্ঠান শেষে সাবেক দ্রুততম মানব মোশাররফ হোসেন শামীম যখন বাড়ির পথ ধরছেন, একটা কথাই বারবার বলে গেলেন, ‘দারুণ এক অ্যাথলেটকে এভাবে সম্মানিত হতে দেখা সত্যিই অনন্য এক অনুভূতি।’ সুফিয়া খাতুন দ্রুততম মানবী হতেন আর দ্রুততম মানব হতেন শামীম।
সতীর্থের এমন সম্মাননা পাওয়ায় খুশি দেখাল অ্যাথলেটিকস অঙ্গনের সবাইকেই। খুশি তো অ্যাথলেটরাও। বিকেএসপির কোচ হিসেবে ২২ বছর অ্যাথলেট গড়েছেন সুফিয়া খাতুন, একটি বেসরকারি স্কুলে এখনো সেই কাজ করে চলেছেন একাগ্রে।