ডাক পাওয়ার খবরে শাহরিয়ারই ভীষণ অবাক

তিন বছর পর প্রাথমিক দলে শাহরিয়ার। ছবি: প্রথম আলো
তিন বছর পর প্রাথমিক দলে শাহরিয়ার। ছবি: প্রথম আলো

২০১৩ সালের এপ্রিলে জিম্বাবুয়ে সফরে একটি টেস্ট খেলেছিলেন শাহরিয়ার নাফীস। দুই ইনিংসে করেছিলেন ৪০ রান। এরপর একাদশ তো বটেই, প্রাথমিক দলেও সুযোগ হয়নি তাঁর। অবশেষে তিন বছর পর ডাক পেলেন বাঁহাতি ওপেনার।

অক্টোবরে ইংল্যান্ড সিরিজ সামনে রেখে আজ ৩০ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। অধিকাংশই টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি গত দুই বছরে বাংলাদেশ দলের নিয়মিত মুখ। কেউ কেউ অবশ্য সেরা একাদশে সুযোগ না পেলেও ছিলেন প্রাথমিক স্কোয়াডে। এবার চমক শুধু দীর্ঘদিন পর শাহরিয়ার ও রকিবুল হাসানের দলে অন্তর্ভুক্তি। শাহরিয়ার নিজেও ভাবতে পারেননি প্রাথমিক দলে সুযোগ পাবেন, ‘আপনার কাছে খবরটা শুনে তো আকাশ থেকে পড়লাম! আমি ভেবেছিলাম, প্রিমিয়ার লিগের টাকাপয়সা পেয়েছি কি না, তা জানতে ফোন দিয়েছেন।’
গত এক বছরে ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করে প্রাথমিক দলে জায়গা পেয়েছেন শাহরিয়ার। এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্রাদার্সের হয়ে ১০ ম্যাচে ১ সেঞ্চুরি ও ১ ফিফটিতে ৩৮.৮৮ গড়ে করেছেন ৩৫০ রান। দল সুপার লিগে না যাওয়ায় পরিসংখ্যানটা খুব একটা উজ্জ্বল হয়নি। তবে দুর্দান্ত খেলেছেন সর্বশেষ জাতীয় লিগে। ৬ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরি ও ৪ ফিফটিতে ৭৯.৪৪ গড়ে করেছেন ৭১৫ রান, যেটি ২০১৫-১৬ মৌসুমে সর্বোচ্চ। একই মৌসুমে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগেও (বিসিএল) তাঁর পারফরম্যান্স মন্দ নয়। ৬ ম্যাচে ১ সেঞ্চুরি ও ৩ ফিফটিতে ৪৪.৬৬ গড়ে রান ৪০২।

ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্সে প্রাথমিক দলে এলেন রকিবুলও। ছবি: প্রথম আলো
ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্সে প্রাথমিক দলে এলেন রকিবুলও। ছবি: প্রথম আলো

শাহরিয়ারের চেয়ে বড় চমক প্রাথমিক দলে রকিবুলের সুযোগ পাওয়াটা। সর্বশেষ কবে ছিলেন বাংলাদেশ দলে, মনে করতে পারলেন না তিনি নিজেও। ২০১১ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেছেন সর্বশেষ সিরিজ। তবে দীর্ঘদিন পর প্রাথমিক দলে ডাক পাওয়ায় মোটেও বিস্মিত নন রকিবুল, ‘এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না সর্বশেষ কবে দলে ছিলাম! তবে ডাক পেয়ে খুব একটা অবাক হইনি। এবার আশা তো ছিলই।’
রকিবুলের এই আত্মবিশ্বাসের মূল রসদ প্রিমিয়ার লিগে তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। এবার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এতটাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল, লিগের শেষ দিনে নির্ধারিত হয়েছে কে হবেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক! এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ের হাসি হেসেছেন রকিবুলই। ১৬ ম্যাচে ১ সেঞ্চুরি ও ৫ ফিফটিতে ৬৫.৩৬ গড়ে ৭১৯ রান করে আছেন সবার ওপরে। শুধু একদিনের ক্রিকেটই নয়, বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটও ধারাবাহিক ভালো খেলেছেন রকিবুল। ২০১৫-১৬ মৌসুমে বিসিএলে ৪ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরি ও ২ ফিফটিতে ৭৪.৪২ গড়ে ৫২১ রান করে ছিলেন দুইয়ে। জাতীয় লিগে ৬ ম্যাচে ৩ ফিফটিতে ৪৫.২৫ গড়ে করেছেন ৩৬২ রান।
প্রাথমিক দলে থাকলেই যে মূল একাদশে সুযোগ পাবেন, তার নিশ্চয়তা নেই। তবে শাহরিয়ার-রকিবুল যে বাতিলের খাতায় পড়ে যাননি, প্রাথমিক দলে তাঁদের অন্তর্ভুক্তি সেটিই বলে।