যেন নতুন এক ফুটবল দল!

টম সেন্টফিটের ক্লাসে মনোযোগী ছাত্র জুয়েল রানা, জীবনরা। কাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে l প্রথম আলো
টম সেন্টফিটের ক্লাসে মনোযোগী ছাত্র জুয়েল রানা, জীবনরা। কাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে l প্রথম আলো

জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপেনি এমন ফুটবলার সাতজন—শেখ রাসেলের ফরোয়ার্ড রুম্মন হোসেন, আরামবাগের ডিফেন্ডার মনসুর আমিন, মিডফিল্ডার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, ফরোয়ার্ড জাফর ইকবাল, রহমতগঞ্জের ফরোয়ার্ড দিদারুল আলম, মিডফিল্ডার মেহবুব হাসান নয়ন ও উত্তর বারিধারার মিডফিল্ডার সেন্টু চন্দ্র সেন।

ডেঙ্গুর কারণে অনুশীলনে আসতে পারছেন না রুম্মন। তবে বাকিরা আছেন এবং তাঁদের নিয়ে জাতীয় দলটাকে এখন অনেকটাই অচেনা লাগছে। অনেক চেনা মুখ নেই, লিগে ভালো খেলে নতুনরা উঠে আসছেন, যা জাতীয় দলের রংটাই বদলে দিয়েছে।

এঁদেরই একজন সেন্টু চন্দ্রের বয়স ছুঁয়েছে ত্রিশ। ষোলো বছরের ফুটবল ক্যারিয়ারে অবশেষে জাতীয় দলে ডাক পেলেন। একসময় হতাশা ছুঁয়ে গিয়েছিল তাঁর মনে। কোচিংয়ে নজর দিয়েছিলেন। গত বছর ‘সি’ লাইসেন্স কোচিং কোর্স করেছেন। গুলশানের একটি স্কুলে শারীরিক শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন একসময়। চাকরিটা এখনো আছে, তবে খেলাটাও ধরে রেখেছেন। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে কাল সেন্টুর চোখে-মুখে ছিল বিস্ময়, ‘স্বপ্নেও ভাবিনি জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পাব। খবরটা শুনে অবাকই হয়েছিলাম।’

দিদারুলের প্রথম ক্লাব ইয়াংমেন্স ফকিরের পুল (২০০৭)। এরপর তিন মৌসুম ব্রাদার্সের পর গতবার ছিলেন বিজেএমসিতে। এবার রহমতগঞ্জের ছয় ম্যাচের পাঁচটিতেই সেরা একাদশে ছিলেন। ২৮ বছর বয়সে প্রথম জাতীয় দলে ডাক পেয়ে উচ্ছ্বসিত দিদারুল বললেন, ‘সব সময় ভাবতাম এই বুঝি ডাক পাব। কিন্তু মাস্টার্স শেষ করার পর সুযোগ পেলাম। চেষ্টা করব চূড়ান্ত দলে থাকতে।’ সেন্টফিটের নতুনের মিছিলে আরেক ফরোয়ার্ড রহমতগঞ্জের মেহবুব হোসেন নয়ন প্রথম বিভাগে খেলেছেন বাসাবো তরুণ সংঘে। গত দুই মৌসুমে ফকিরের পুলে কাটিয়ে এবার রহমতগঞ্জের জার্সি গায়ে তিনটি গোল করে নজর কেড়েছেন কোচের। নয়নসহ অন্য ফুটবলারদের নিয়ে আশার কথাই বললেন সেন্টফিট, ‘আমার চূড়ান্ত দলে এই নতুনদের কয়েকজন যোগ হবে।’

ভুটান ম্যাচে জামাল ভূঁইয়া খেলতে পারবেন না দুই হলুদ কার্ডের কারণে। বিকল্প হিসেবে কোচ ডেকেছেন হেমন্ত ও ফাহাদকে। তাঁরা ক্যাম্পেও এসেছেন। কালই দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকান ফিটনেস ট্রেনার দক্ষিণ রাইদো বার্দিয়ান। তবে ঢাকায় পৌঁছালেও নিউজিল্যান্ডের গোলরক্ষক কোচ রায়ান স্যান্ডফোর্ড কাল অনুশীলনে যোগ দেননি।

ফিটনেস ট্রেনার প্রথম দিনেই খুশি ফুটবলারদের নিয়ে, ‘এখানে আসার আগে বাংলাদেশ দলের কিছু খেলা দেখেছি। স্বশরীরে এসে দেখলাম, কিছু মানসম্মত ফুটবলার আছে।’ তবে দল তৈরির জন্য দুই সপ্তাহ সময়টা যথেষ্ট নয় তাঁর কাছে, ‘মাত্র দুই সপ্তাহ সময় একটু কমই। তবে ছেলেরা খেলার মধ্যেই ছিল। তাই আশা করি, ফিটনেস নিয়ে বেশি সমস্যা হবে না।’