'আমরা জানি কীভাবে জিততে হয়'

৭৪ বলে ৬২ রানের মায়াবী এক ইনিংস খেলেছেন। হাফ সেঞ্চুরির পর মাহমুদউল্লাহর উদ্‌যাপনটাও হলো একটু ব্যতিক্রমী l প্রথম
৭৪ বলে ৬২ রানের মায়াবী এক ইনিংস খেলেছেন। হাফ সেঞ্চুরির পর মাহমুদউল্লাহর উদ্‌যাপনটাও হলো একটু ব্যতিক্রমী l প্রথম

অনেক কিছুই হলো অনেক দিন পর। বাংলাদেশ অনেক দিন পর ওয়ানডে খেলল। সাকিব আল হাসান অনেক দিন পর ম্যাচ জেতালেন, অনেক দিন পর হলেন ম্যান অব ম্যাচ।
মিরপুরে ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে অনেক দিন পর ঘটা ঘটনাগুলোরই ব্যাখ্যা দিলেন সাকিব। প্রথমে দলের কথা, ‘আমাদের জন্য ম্যাচটা কঠিন ছিল। আমরা যে অনেক দিন পর ওয়ানডে খেলছি, সেটা সবার শরীরী ভাষায়ই বোঝা গেছে। ফিল্ডিং খারাপ হয়েছে। ১০-১১ মাস ওয়ানডে না খেলার প্রভাবে সবার মধ্যে তাড়াহুড়া কাজ করেছে।’
সাকিবের দৃষ্টিতে এত কাছে গিয়েও আফগানদের হারের কারণ অনভিজ্ঞতা, ‘আমাদের অভিজ্ঞতা এখানে কাজে লেগেছে। আমরা জানি কীভাবে জিততে হয়। আশা করি, পরের ম্যাচ থেকে আরও ভালো খেলবে সবাই।’
বিদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে হয় বলে দলের সঙ্গে সব সময় পুরো ক্যাম্পে থাকতে পারেন না সাকিব। এবারও ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ব্যস্ততায় অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন অনেক পরে। কিন্তু আসল সময়ে দেখা যায় তাঁর ভূমিকাই সবচেয়ে কার্যকর। এ প্রসঙ্গে দারুণ এক পেশাদার ব্যাখ্যা দিলেন সাকিব, ‘খেলার মধ্যে থাকাটাই সবচেয়ে বড় অনুশীলন। যতই রানিং, জিম বা অনুশীলন করেন না কেন, ম্যাচ অনুশীলনই আসল। কোন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে, সেটা ম্যাচ খেললে সহজ হয়ে যায়।’
সাকিব আর বাংলাদেশের জয় একটা সময় সমার্থক হয়ে গিয়েছিল। মোস্তাফিজুর রহমানের আবির্ভাবে তাতে সামান্য ‘ভাটার টান’। তার মানে এই নয় যে, ভাটার টান সাকিবের পারফরম্যান্সেও। তিনি কিছু করার সুযোগ পাওয়ার আগেই যে অন্যরা সব করে দেন! অনেক দিন পর ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলেন, সংবাদ সম্মেলনে কথাটা মনে করিয়ে দিলে সাকিব রসিকতা করলেন, ‘হ্যাঁ, মোস্তাফিজ নেই তো...।’

মিরপুরে কাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে আবারও সুযোগটা পেলেন এবং আবারও দেখালেন বাংলাদেশকে জয়ের পথ দেখানোর সামর্থ্যটা তাঁর হারিয়ে যায়নি। ব্যাট হাতে ৪০ বলে ৪৮ রানের সময়োচিত ইনিংস, পরে ২৬ রানে ২ উইকেট। তামিম ইকবালের ৮০, মাহমুদউল্লাহর ৬২ ও তাসকিন আহমেদের ৪ উইকেটের পরও এই পারফরম্যান্স সাকিবকে এনে দিয়েছে ম্যাচসেরার পুরস্কার। যার অনুভূতি তাঁরও অন্যদের মতোই, ‘যেকোনো স্বীকৃতি পেলেই ভালো লাগে। তবে মূল কাজ হলো দলের জন্য কিছু করা।’

সেটা নিয়মিতই করে এসে সাকিব কাল নিজেকে নিয়ে গেলেন নতুন উচ্চতায়। আবদুর রাজ্জাককে টপকে ওয়ানডেতে এখন দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেটের (২০৮) মালিক তিনি। এই গৌরব সাকিবের আগে থেকেই আছে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে। নতুন রেকর্ডের মালিক হয়ে তিনি খুশি। তবে তৃষ্ণা মিটছে না, ‘আরও ভালো লাগত যদি তিন সংস্করণের ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রানও আমার থাকত। কিন্তু গত এক-দেড় বছরে অন্যরা এত ভালো খেলছে যে আমার পক্ষে ৩০-৪০ এর বেশি করা কঠিন।’

কী বলবেন এটাকে? শিল্পীর অতৃপ্তি!