অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অ্যাশেজ জেতা অধিনায়ক শান্তিতে মরতে চান

রে ইলিংওয়ার্থছবি: টুইটার

রে ইলিংওয়ার্থ ক্যানসারে আক্রান্ত। ১৯৭০-৭১ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার মাঠে অ্যাশেজজয়ী সাবেক ইংলিশ অধিনায়কের চিকিৎসাও শুরু হয়েছে। রেডিওথেরাপি নিচ্ছেন ৮৯ বছর বয়সী সাবেক ক্রিকেটার। কিন্তু যদি চিকিৎসায় প্রত্যাশামতো উন্নতি না হয়, তবে শান্তির মৃত্যু কামনা করছেন ইলিংওয়ার্থ।

এভাবে মৃত্যুকামনার পেছনে কারণ আছে ইলিংওয়ার্থের। ইউরোপের বেশ কিছু দেশে গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ‘স্বেচ্ছায় মৃত্যু’র ব্যবস্থা আছে। কিন্তু যুক্তরাজ্যে এখনো সেটা আইনসিদ্ধ নয়। ক্যানসারে ধুঁকে ধুঁকে মরতে রাজি নন বলে এ ব্যাপারে নিজের অবস্থানটা জানিয়ে রাখছেন সাবেক অধিনায়ক।

রে ইলিংওয়ার্থ
ছবি: আইসিসি টুইটার

ডেইলি টেলিগ্রাফের কাছে ইলিংওয়ার্থ বলেছেন, ‘তাঁরা (চিকিৎসকেরা) টিউমারের বাকি অংশটা বাড়তি দ্বিগুণ ডোজ দিয়ে দূর করার আশা করছেন। দেখি আগামী দুই ডোজ কেমন যায়। আমি আশায় আছি, ভাগ্য আমার পক্ষে থাকবে।’

ইলিংওয়ার্থের স্ত্রী শার্লি এ বছরই মৃত্যুবরণ করেছেন। দীর্ঘদিন ক্যানসারে ভোগার পর মৃত্যু কেমন, সেটার অভিজ্ঞতা তাই আছে সাবেক অধিনায়কের।

রে ইলিংওয়ার্থ
ছবি: টুইটার

এ কারণেই অন্যের সহায়তায় মৃত্যুর আইন পাসের আশা করছেন ইলিংওয়ার্থ, ‘আমার স্ত্রী তাঁর শেষ ১২ মাস যেভাবে কাটিয়েছে, সেটা আমার ক্ষেত্রে হোক, তা চাই না। এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরেছে। অনেক কষ্ট পেয়েছে। আমি বরং শান্তিতে মরতে চাই। আমি অন্যের সহায়তায় মৃত্যুতে বিশ্বাস করি।’

বর্তমানে যুক্তরাজ্যের প্রচলিত ১৯৬১ আত্মহত্যা আইন অনুযায়ী কেউ যদি অন্য কাউকে আত্মহত্যায় সহযোগিতা করে, তাহলে ১৪ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। তবে কিছুদিন আগে জার্সি প্রথমবারের মতো অন্যের সহায়তায় মৃত্যুর আইনের প্রস্তাব আইনসভায় পাস করেছে। তবে ২০২৩ সালের আগে সে আইনের খসড়া করা হবে না।

রে ইলিংওয়ার্থ
ছবি: টুইটার

কেন এই আইনের পক্ষে, এর ব্যাখ্যায় ইলিংওয়ার্থ বলেছেন, ‘আমার স্ত্রীর যা হয়েছিল, শেষ ১২ মাসে কোনো আনন্দ ছিল না ওর জীবনে। সত্যি বলতে, এভাবে বেঁচে থাকার কোনো কারণ দেখি না আমি। কিন্তু ইংল্যান্ডে এখনো অন্যের সহায়তায় মৃত্যুর ব্যবস্থা নেই, ফলে এ সুযোগ তো নেই। এ নিয়ে বিতর্ক চলছে এবং আমার ধারণা এটা একসময় না একসময় পাস হবে। অনেক চিকিৎসক এর বিপক্ষে। কিন্তু শেষ ১২ মাসে আমার স্ত্রীকে যেভাবে বেঁচে থাকতে হয়েছে, তার মধ্য দিয়ে গেলে তাঁরা সম্ভবত মত বদলাবেন।’

ইংল্যান্ডের হয়ে ৬১ টেস্ট খেলেছেন ইলিংওয়ার্থ। ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে ১২২ উইকেট পেয়েছেন, করেছেন ১ হাজার ৮৩৬ রান। ৩১ টেস্টে অধিনায়কত্ব করে ১২ ম্যাচ জিতেছেন, হেরেছেন ৫ ম্যাচে।