রাজশাহী কিংসের পরের ম্যাচগুলোয় দু-একটা ক্যাচ ফসকাতে দেখলে অবাক হবেন না। ক্যাচ ফেলেই যদি ম্যাচ জেতার রেসিপি লেখা যায়, তাহলে পড়ুক না এমন কিছু ক্যাচ! ক্যাচ ফেলে দেওয়া দুই ব্যাটসম্যানই যে কাল জেতালেন দলকে। শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ঢাকা ডায়নামাইটসকে ৩ উইকেটে হারিয়ে আশা বাঁচিয়ে রাখল রাজশাহী।
ঢাকার ইনিংসে কুমার সাঙ্গাকারার ক্যাচ ফেলেছেন সামিত প্যাটেল। মুমিনুল হকও ফেলেছেন সাঙ্গাকারা ও সেকুগে প্রসন্নর ক্যাচ। ফিল্ডিংয়ে ব্যর্থতার দায়টা দুর্দান্তভাবেই মিটিয়েছেন দুজন। ১৮৩ রানের কঠিন লক্ষ্যে নেমে ৩১ রানেই নেই ২ উইকেট। সবচেয়ে ভয়ের কথা, মূল ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমানই আউট ডিপ মিড উইকেটে নাসিরের দুর্দান্ত এক ক্যাচে। রাজশাহীকে ম্যাচ জেতাবে কে!
উত্তর, প্যাটেল-মুমিনুল! ৬৩ বলে ঠিক ১০০ রানের জুটি গড়েছেন দুজন। এক প্রান্তে মুমিনুল দেখিয়েছেন টি-টোয়েন্টিতেও নিখুঁত, শৈল্পিক ব্যাটিং করে দ্রুত রান তোলা যায়। আর অন্য প্রান্তে আক্ষরিক অর্থেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেললেন প্যাটেল। ৪২ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় মুমিনুলের ৫৬ রানে মুগ্ধ ড্যারেন সামি, ‘মুমিনুল নিজের চরিত্র বুঝিয়ে দিয়েছে। দুটি ক্যাচ ফেলার পর ভেঙে পড়তে পারত কিন্তু সে উঠে দাঁড়িয়েছে। সে ছোটখাটো লোক (হেসে), কিন্তু সে আজ অনেক উঁচুতে উঠেছে।’ তাতেই নিজের তৃতীয় ফিফটিতে জয়ের হাসিটা হাসতে পেরেছেন মুমিনুল।
তবে ঢাকাকে কাল শেষ করে দিয়েছেন আসলে প্যাটেল। একের পর এক বিশাল ছক্কায় প্রতিপক্ষের সব পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছেন তিনি। ৩৯ বলে ৭৫ রানের ঝড়ে ৬টি ছক্কা তাঁর, সে তুলনায় চার কমই (৫টি)। ঝড়টা বেশি বয়েছে সাকিব আল হাসান ও ম্যাট কোলসের ওপর দিয়ে। কোলসের ১ ওভারেই ২০ রান তুলেছেন প্যাটেল। আর সাকিবকে মেরেছেন ৩টি ছক্কা। তবে সাকিবের বলেই হাঁকাতে গিয়ে আউট হয়ে গেলেন ইংলিশ এই অলরাউন্ডার। অবশ্য ততক্ষণে জয়ের প্রান্তে রাজশাহী। সাকিবও দুই দলের মাঝে ব্যবধান বললেন তাঁকে, ‘২টি ম্যাচেই (রাজশাহীর দুটি জয়ই ঢাকার বিপক্ষে) একজনের কাছে হেরে গেলাম। এটা দলের জন্য খুব হতাশার ব্যাপার। আমরা ১১ জন মিলে একজনের সঙ্গে পারলাম না।’
তবে প্যাটেলের ঝড়ের পরও হারতে বসেছিল রাজশাহী। শেষ ২ ওভারে ৫ উইকেটে ১২ রানের সমীকরণে দাঁড়িয়ে পরের ৭ বলে ২ উইকেট হারিয়ে ৩ রান। আবারও শেষ ওভারে হাস্যকর হার দেখছিল রাজশাহী। অধিনায়ক স্যামি নিজেই এর জন্য দায়ী, ‘মনে হচ্ছিল, আমি আউট হয়ে সব শেষ করে এসেছি। অধিনায়ক হিসেবে আমার ওটা করা উচিত হয়নি।’ শেষ ওভারে ফরহাদ রেজা ও মেহেদী হাসান মিরাজের দুটি চারেই স্বস্তির জয় পেল রাজশাহী।
এর আগে ঢাকা ১৮২ রান তুলেছে সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। গতবারের সর্বোচ্চ স্কোরার কুমার সাঙ্গাকারা এবার প্রথম ফিফটি পেলেন কাল। ৪৬ বলে ৬৬ রানের ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা। তাঁর ওপেনিং সঙ্গী মেহেদী মারুফ করেছেন ৩৫। সেকুগে প্রসন্নের ১৬ বলে ৩৪ ও সাকিবের ১২ বলে ১৮ রান শেষ পর্যন্ত অবশ্য ব্যর্থ হলো।