ইমরান খানরাও বললেন, লতার মতো আর কেউ আসবেন না
সবাইকে শোকসাগরে ভাসিয়ে কাল অনন্তের পথে পাড়ি দিয়েছেন সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। তাঁর দেশ ভারত তো বটেই, এ চলে যাওয়া ছুঁয়ে গেছে গোটা উপমহাদেশকেই। বাংলাদেশ কিংবা পাকিস্তানে সংগীতপিপাসুদের মধ্যে একজনও নেই, যাঁকে লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যু স্পর্শ করেনি। তাঁর সুরেলা কণ্ঠ, তাঁর রেখে যাওয়া স্মৃতি কয়েক প্রজন্মকে নিরন্তর আপ্লুত করেই যাবে।
পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে দেশটার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ইমরান খান লিখেছেন, 'লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুতে উপমহাদেশ বৈশ্বিক সঙ্গীতজগতের একজন শ্রেষ্ঠ শিল্পীকে হারালো। তাঁর কণ্ঠ ও গান বিশ্বের অগণিত মানুষের বিনোদনের মাধ্যম হয়ে ছিল।'
পাকিস্তানের এখনকার অধিনায়ক বাবর আজমও এ ব্যাপারে একমত। সেটিই মনে করেন। তাঁর মতে, লতার মৃত্যু একটি যুগের পরিসমাপ্তি। তিনি মনে করেন, লতা গানের দুনিয়ায় অদ্বিতীয় এক নাম। তাঁর মৃত্যু একটি যুগের পরিসমাপ্তিই মনে করেন বাবর। বাবর লতার মৃত্যুতে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি টুইট করেছেন। তাতে পাকিস্তান অধিনায়ক লিখেছেন, ‘একটি যুগের পরিসমাপ্তি। তাঁর জাদুকরি কণ্ঠ ও তাঁর স্মৃতি চিরদিন দুনিয়ার লাখো কোটি অনুরাগীর মনে রয়ে যাবে। লতা মঙ্গেশকর—অতুলনীয় এক নাম!’
লতা মঙ্গেশকরকে ‘মায়া’, ‘নম্রতা’, ‘সরলতা’ ও অবশ্যই ‘শ্রেষ্ঠত্বে’র প্রতীক বলেছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান ও পাকিস্তান ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক রমিজ রাজা। তিনিও টুইট করে লতা মঙ্গেশকরের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘কিশোর কুমারের মতোই লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যু আমায় শোকাচ্ছন্ন করেছে।’ রমিজের মতে, লতা সবার জন্য শিক্ষণীয় একজন ছিলেন।
শোয়েব আখতার টুইটে লতা মঙ্গেশকর হ্যাশট্যাগ দিয়ে লিখেছেন, ‘তাঁর মতো আর কেউ আসবেন না।’ তিনি ২০১৬ সালে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে তাঁর একটি ফোনালাপের স্মৃতি বর্ণনা করেছেন, ‘২০১৬ সালে আমি যখন ভারতে যাই, তখন লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। তিনি মেহেদী হাসান সাহেব ও ম্যাডাম নূর জাহানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন।’ তিনি তাঁর টুইটে পাকিস্তানের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী নূর জাহানের সঙ্গে লতা মঙ্গেশকরের একটি ছবিও পোস্ট করেছেন।
আরেক সাবেক অধিনায়ক ওয়াকার ইউনিসও মনে করেন, লতা মঙ্গেশকরের মতো আরেকজনের আবির্ভাব আর হবে না। তাঁর মৃত্যুতে তিনিও গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
গতকাল রোববার সকাল ৮টা ১২ মিনিটে মধ্য মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যানডি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন লতা মঙ্গেশকর। জানুয়ারি মাসের শুরুতেই করোনায় আক্রান্ত হন ভারতীয় সংগীতের এই কিংবদন্তি। ৮ জানুয়ারি থেকে ব্রিচ ক্যানডি হাসপাতালে ছিলেন তিনি।
একসময় করোনামুক্ত হলেও পরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন। মধ্যে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হয়েছিল। তবে শনিবার শারীরিক অবস্থার আবার অবনতি হয়। শনিবার সন্ধ্যাবেলা থেকেই উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত সব চেষ্টা ব্যর্থ করে চলে যান লতা মঙ্গেশকর।