ওপেনিংয়ে অস্বস্তির কাঁটা
চট্টগ্রামে প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে শুরু, কক্সবাজারেও সেই জয়ের ধারা টেনে নিয়ে গেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। স্কটল্যান্ড ও নামিবিয়াকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে পা রেখেছেন যুবারা। তবে টানা তিন জয়ের মধ্যেও অস্বস্তির একটি কাঁটা আছে। আর সেটি উদ্বোধনী জুটি নিয়ে। দলীয় ইনিংসটা শেষ পর্যন্ত বড়ই হচ্ছে, কিন্তু উদ্বোধনী জুটি সূচনাটা ভালো করতে পারছে না।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রোটিয়া যুবাদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বেশ সংগ্রামই করতে হলো সাইফ হাসান-পিনাক ঘোষের উদ্বোধনী জুটিকে। ৫৭ বলে সাইফ-পিনাক তুলতে পারলেন ৩০ রান। কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে দল বড় জয় পেলেও উদ্বোধনী জুটি খারাপ করল আরও! ১ রানেই শেষ সাইফ-পিনাকের জুটি। একই মাঠে নামিবিয়ার বিপক্ষে ৬৬ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও উদ্বোধনী জুটির ভঙ্গুর দশা ঘোচেনি। স্কোর বোর্ডে কোনো রান যোগ না হতেই ভেঙেছে জুটি।
গত বছর ‘বড়’দের বিশ্বকাপেও একই সমস্যায় পড়েছিল বাংলাদেশ দল। প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখা মাশরাফি বিন মুর্তজার দল ক্রিকেটের বিশ্বমঞ্চে বহু স্মরণীয় মুহূর্ত উপহার দিলেও ভুলে যাওয়ার মতো ছিল উদ্বোধনী জুটির পারফরম্যান্স। ক্যানবেরায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে তামিম ইকবাল-এনামুল হকের ৪৭ রানই ছিল গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি।
এবার যুব বিশ্বকাপে অনেক রঙিন মুহূর্ত উপহার দিয়ে চলেছেন মেহেদী হাসান মিরাজরা! তবে এখন পর্যন্ত ধূসর অংশ একটাই—উদ্বোধনী জুটির ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার জন্য অধিনায়ক মিরাজ অবশ্য কাঠগড়ায় তুলেছেন চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের মন্থর উইকেটকে। মিরাজ বললেন চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে ওপেনারদের ধীর লয়ে শুরুরই নির্দেশনা ছিল, ‘আমরা খেলি দলীয় পরিকল্পনা অনুযায়ী। কক্সবাজারে উইকেট মন্থর দেখে দলের পরিকল্পনা ছিল, ওপেনারদের ধীর লয়ে শুরু করতে হবে।’ তবে মিরপুরের উইকেটে ভিন্ন কিছু হবে বলেই তাঁর বিশ্বাস, ‘এখানে (মিরপুর) উইকেট ভিন্ন হতে পারে। এখানে খেলে আমরা অভ্যস্তও। উইকেট ভালো থাকলে শুরুর দিকে ব্যাটসম্যানরা হয়তো শট খেলবে। রান তোলার চেষ্টা করবে।’
ওপেনাররা আস্তে-ধীরে শুরু করতেই পারেন। কিন্তু গুরুতর সমস্যা হচ্ছে, শুরুতেই উইকেট হারানো। যুবাদের কোচ মিজানুর রহমানকে বিষয়টি বেশ ভাবাচ্ছে, পরিষ্কার তাঁর কথাতেই। তবে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানরা এই সমস্যা দ্রুতই কাটিয়ে উঠবেন বলে আশাবাদী মিজান, ‘ওপেনারদের নিয়ে আমরা কিছুটা সমস্যায় পড়েছি। তবে এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করি, সামনের ম্যাচে এটা কাটিয়ে উঠতে পারব। ওপেনাররা ফিরবে ছন্দে।’
দলকে স্বচ্ছন্দে এগিয়ে যাওয়ার ভিত্তিটা গড়ে দেন ওপেনাররাই। নতুন বলের চ্যালেঞ্জ সামলে মিডল-লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের সুবিধা করে দিতে হয় উদ্বোধনী জুটিকেই। সাইফ-পিনাকদের সেটি নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না। ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে নিশ্চয়ই তাঁরা ঘুরে দাঁড়াতে চাইবেন।