‘ওয়ার্নের মৃত্যুর খবর শোনার পর খেলা কঠিন ছিল’

আজ দ্বিতীয় ম্যাচের এক মুহূর্তে লিটন দাসের সঙ্গে রশিদ খানছবি: প্রথম আলো

আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। অথচ কাল রাতটা রশিদ খান ঠিকমতো ঘুমাতেই পারেননি।

শেন ওয়ার্নের মৃত্যুর খবর শোনার পর যেন মাঠে নামার মানসিক শক্তিটাই হারিয়ে ফেলেছিলেন আফগানিস্তান দলের লেগ স্পিনার। সত্যি কি ওয়ার্ন নেই! প্রশ্নটার উত্তর খুঁজতে বারবার ইন্টারনেটে খবরটা দেখছিলেন রশিদ।

ওয়ার্নের মৃত্যুশোকে কাতর রশিদ কথাগুলো বলছিলেন আজ ম্যাচের ফাঁকে। ৪ ওভার বল করে ৩০ রানে ১ উইকেট নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে এই লেগ স্পিনার বলছিলেন, বিশ্বের কোটি কোটি ক্রিকেট ভক্তের মতো মাত্র ৫২ বছর বয়সে ওয়ার্নের চলে যাওয়াটা তাঁর কাছেও অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল, ‘ওয়ার্নের মৃত্যুর খবর শোনার পর খেলাটা কঠিন ছিল। আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কীভাবে আজ খেলব! সারারাত তাঁর কথাই ভেবেছি। এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। আমি সকালে ঘুম থেকে উঠলাম এবং কয়েকবার আমার ফোনটা দেখলাম। বোঝার চেষ্টা করলাম আসলে গত রাতে কী ঘটেছিল! এমন ঘটনা বিশ্বাস করার মতো নয়।’

ম্যাচে ১ উইকেট নেন রশিদ খান
ছবি: প্রথম আলো

রশিদের চোখে ওয়ার্নের মৃত্যুতে ক্রিকেট বিশ্ব হারাল একজন ক্রিকেট শিক্ষককেই, ‘মেনে নেওয়া সত্যিই কঠিন, তবে এটাই জীবন। আপনি জানবেন না কখন আপনার পালা আসবে, এটাকে মেনে নিতে হবে। কোচ হিসেবে তাঁর অনেক কিছু দেওয়ার বাকি ছিল, তাঁর মতো ব্যক্তিত্বের কাছ থেকে তরুণ প্রজন্মের অনেক কিছু পাওয়ার ছিল, বিশেষ করে আমার জন্য।’

সাদা বলের ক্রিকেটে রশিদ খুব দ্রুতই নিজেকে বিশ্বসেরার জায়গায় নিয়ে গেছেন। এখন বাকি লাল বলেও সে জায়গাটা নেওয়া। ওয়ার্ন সে জন্য নিজ থেকেই রশিদকে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন। বিগ ব্যাশের দল অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের হয়ে খেলার সময় রশিদের সঙ্গে ওয়ার্ন লাল বলের বোলিং নিয়ে কাজও করেছেন।

মেলবোর্নে ওয়ার্নের সঙ্গে সেই স্মৃতিও স্মরণ করলেন রশিদ, ‘আমরা এমসিজিতে একসঙ্গে বোলিং করেছি, এটা আমার জন্য অনেক বড় সম্মানের। আমি খুব আগ্রহী ছিলাম টেস্ট ক্রিকেটের বোলিং নিয়ে তাঁর সঙ্গে কাজ করতে। তিনিও রাজি ছিলেন, আমাকে পছন্দ করতেন। বলতেন “টেস্টে ভালো করতে তোমাকে সাহায্য করতে পারলে আমি খুশিই হব।” আমি সেই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলাম। বিগ ব্যাশে সে সুযোগটা এসেছিল।’

শেন ওয়ার্ন ও রশিদ খান। ওয়ার্নের কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখেছেন রশিদ
ছবি: টুইটার

ওয়ার্নের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে শুধু মেলবোর্নের স্মৃতিগুলোই ঘুরেফিরে মনে পড়ছে রশিদের। ওয়ার্নের মতো একজনকে যে ভুলে যাওয়ার কঠিন! রশিদ বলছিলেন, ‘তিনি আমাকে ডেকে নিয়েছিলেন। আমাদের মাঝে কথাও হয়েছিল। তাঁর সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো আমার অবিশ্বাস্য লেগেছে। যেসব স্মৃতি আমাদের ছিল, অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করা, যেসব কথা উনি আমাকে বলেছেন, আমি সবই অনেক মিস করব। কী দুর্দান্তই না ছিল এমসিজির সেসব মুহূর্ত! নিশ্চিতভাবেই বিশ্ব ক্রিকেটে কালকের দিনটা সবার জন্য দুঃখের।’