কোহলি-ডি ভিলিয়ার্স নয়, বেঙ্গালুরুর হয়ে পরিতোষ-সিমরানজিত
বেশ ক'বছর ধরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ১৭ আর ১৮ নম্বর জার্সি দুটি কে পরবেন, সমর্থকদের মুখস্থ। ১৭ নম্বর পিঠে নিয়ে খেলেন দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি খেলোয়াড়, দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা এবি ডি ভিলিয়ার্স। ১৮ নম্বর পরে নামেন খোদ অধিনায়ক বিরাট কোহলি। আজ এই নম্বরের জার্সি পরে রশিদ খান-ডেভিড ওয়ার্নারদের সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে খেলতে নামবেন তাঁরা, এটা ভাবাই যুক্তিসংগত। কিন্তু যদি না নামেন?
আজ বেঙ্গালুরুর ১৭ ও ১৮ নম্বর জার্সি গায়ে যদি ডি ভিলিয়ার্স ও কোহলির জায়গায় 'পরিতোষ' ও 'সিমরানজিত' নামের দুজন নামেন, সমর্থকদের ধাক্কা খাওয়াই স্বাভাবিক। মনে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, কী হল কোহলি-ডি ভিলিয়ার্সের? এই পরিতোষ-সিমরানজিতই বা কে? তবে জার্সি দুটি পরা মানুষের চেহারা দেখলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচবেন নিশ্চিত। তাঁদের চেহারা যে একদম কোহলি, ডি ভিলিয়ার্সের মতো!
খোলাসা করে বলা যাক। বেঙ্গালুরুর হয়ে কোহলি-ডি ভিলিয়ার্সই খেলবেন, তবে তাঁদের জার্সির নামের জায়গায় কোহলি বা ডি ভিলিয়ার্স লেখা থাকবে না। কোহলির ১৮ নবর জার্সির পিছে লেখা থাকবে সিমরানজিতের নাম, ডি ভিলিয়ার্সের জার্সিতে থাকবে পরিতোষের নাম। শুধু তা-ই নয়, নিজেদের টুইটার হ্যান্ডলের নামও পরিবর্তন করে কোহলি রেখেছেন সিমরানজিত সিং, ডি ভিলিয়ার্স রেখেছেন পরিতোষ পন্ত।
মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক, হঠাৎ নাম পরিবর্তন এই হিড়িক উঠল কেন কোহলি-ডি ভিলিয়ার্সের মাঝে? উত্তরের পেছনে লুকিয়ে আছে এক মহতী উদ্যোগ। আইপিএলের এই মৌসুমে গোটা সময় জুড়ে কোভিড-১৯ এর বিপক্ষে সরাসরি যারা লড়াই করেছেন, অতি জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন, বা আক্রান্তদের যারা সাহায্য করে গেছেন অকাতরে, তাঁদের সম্মান জানাচ্ছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। এই প্রকল্পের একটা নামও আছে #MyCovidHeroes (আমার কোভিড-নায়কেরা)। অনুশীলন ও খেলার সময় নিজেদের নাম লেখা জার্সি নয়, বরং এসব কোভিড-নায়কদের নাম জার্সিতে লিখে সম্মান জানাবেন কোহলিরা। তাই 'নাম পরিবর্তন' করার জন্য এত তোড়জোড়।
প্রথম ম্যাচের এই জার্সিগুলো আবার নিলামেও তোলা হবে। নিলাম থেকে প্রাপ্ত অর্থ 'গিভ ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন'কে দান করবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। লক্ষ্য একটাই, কোহলিদের এসব কাজ দেখে যদি বিশ্বজোড়া আইপিএল ও বেঙ্গালুরু ভক্তরা অনুপ্রাণিত হন!
করোনাকালে বিভিন্নভাবে আক্রান্ত মানুষদের সহযোগিতা করার জন্য বন্ধুদের সঙ্গে মিলে ৯৮ হাজার রুপি তুলেছেন সিমরানজিত। নিজে কানে শুনতে পারেন না, তাও সমাজের দরিদ্র শ্রেণিকে এই মহামারির সময়ে সাহায্য করা থেকে কেউ তাঁকে থামাতে পারেনি। ওদিকে বেশ কিছু অভাবী মানুষকে লকডাউনের মধ্যে নিয়মিত দু'বেলা পেটপুরে খাইয়েছেন পরিতোষ পন্ত। তাই এ দুজনের নাম জার্সিতে লিখে ও টুইটার হ্যান্ডলে দিয়ে সম্মান জানাতে চেয়েছেন কোহলি-ডি ভিলিয়ার্স।
আজ মাঠে পরিতোষ, সিমরানজিত নামের কাউকে দেখলে অবাক হবেন না যেন!