খুলনাকেও টেনে তুলল ঢাকা
১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে ১২-এর বেশি পয়েন্ট নেই কারওই। খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে কালকের ম্যাচের আগেই তাই শীর্ষ দল হিসেবে শেষ চারে থাকাটা নিশ্চিত ছিল ঢাকা ডায়নামাইটসের। তবে শেষ চারে যে তারা খুলনাকেও ভালোভাবেই নিয়ে যাবে, সেটা বোধ হয় কারও জানা ছিল না।
খুলনাকে নিয়ে যাওয়া বলতে খুলনার কাছে ঢাকার কালকের হারের কথাই বলা হচ্ছে। ৭ উইকেটে ১৫৮ রান করে ৬ উইকেটে হেরেছে সাকিব আল হাসানের দল। কাল না জিতলে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে আসা দূরে থাক, শেষ চারেই আসতে পারত না খুলনা। ১২ পয়েন্ট পাওয়া অন্য তিন দলের চেয়ে যে নেট রানরেটে পিছিয়েই ছিল তারা! শেষ ম্যাচে জেতায় এখন আর সে হিসাব করতে হচ্ছে না মাহমুদউল্লাহর দলকে।
ঢাকা ডায়নামাইটস, খুলনা টাইটানস, চিটাগং ভাইকিংস, রাজশাহী কিংস—এই হলো চতুর্থ বিপিএলের শীর্ষ চার দলের ক্রম। আগামীকাল দুপুরে এলিমিনেটর ম্যাচে মুখোমুখি হবে চিটাগং ও রাজশাহী। যারা হারবে তারা বাদ পড়ে যাবে টুর্নামেন্ট থেকে। সন্ধ্যায় হবে শীর্ষ দুই দলের মধ্যে প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচ। জয়ী দল সরাসরি উঠে যাবে ফাইনালে, পরাজিত দল পরশু দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলবে এলিমিনেটর ম্যাচের জয়ী দলের সঙ্গে। এই ম্যাচের জয়ী দলই হবে দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট।
ব্যক্তিগত ২ রানে কুমার সাঙ্গাকারার সহজ ক্যাচটি মিড অনে মুঠোবন্দী করতে পারেননি আরিফুল হক। বেনি হাওয়েলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে সাবেক শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক করেছেন ৪১ বলে ৫৯।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচারকে হারালেও ঢাকার বোলার ও ফিল্ডাররাই যেন পথ হারাতে দিল না খুলনা টাইটানসকে। ১৫৮ করে জিততে হলে যে রকম বোলিং-ফিল্ডিং দরকার, সেটার ধারেকাছেও ছিল না তারা। ব্যতিক্রম কেবল কাভার থেকে অনেকটা দৌড়ে গিয়ে মেহেদী মারুফের নেওয়া মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত ক্যাচটা।
ঢাকার আয়েশি ভাবে খুলনার জয়ের পথ এতটাই মসৃণ হয়ে যায় যে, দুই ওভার বাকি থাকতেই ম্যাচ শেষ। তাতে খুলনার ওপেনার হাসানুজ্জামানের ১৯ বলে ৪০, মাহমুদউল্লাহর ২৮ বলে ৫০ বা হওয়েলের ১৬ বলে অপরাজিত ২৬ রানের অবদান অবশ্যই আছে। কিন্তু ম্যাচ শেষে তাঁদের সাফল্যের চেয়ে ঢাকার ব্যর্থতা নিয়েই বেশি আলোচনা। ম্যাচটা যেন খুলনা জেতেনি, ঢাকাই হেরেছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস: ২০ ওভারে ১৭০/৬ (ইমরুল ৫২, লতিফ ৪৩, স্যামুয়েলস ৩০, মাশরাফি ৭, জাইদি ১৭, লিটন ৬, রশিদ ১১*; আনোয়ার ০/৩২, সোহাগ ০/১৭, সানি ২/২৯, রুবেল ২/৩০, ডসন ০/১৯, আফ্রিদি ১/৩০, সৌম্য ০/১১)।
রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৬২/৮ (শেহজাদ ৪৫, সৌম্য ৫, মিঠুন ২, ডসন ৩, আফ্রিদি ৩৮, নাঈম ১৪, জিয়া ৩৮*, আনোয়ার ১, সোহাগ ৭, সানি ৪*; শরিফ ০/৫১, সাইফউদ্দিন ১/৩৪, মাশরাফি ২/২৭, নাবিল ২/৩৫, রশিদ ৩/১৩)।
ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ৮ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রশিদ খান।
ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ১৫৮/৭ (মারুফ ১৬, সাঙ্গাকারা ৫৯, নাসির ১৯, সাকিব ১১, প্রসন্ন ১৪, মোসাদ্দেক ২০, বোপারা ৬, আলাউদ্দিন ১*, তানভীর ২*; মাহমুদউল্লাহ ০/২৭, শুভাগত ০/২১, শফিউল ১/২৯, জুনাইদ ৩/২২, মোশাররফ ০/৩৫, হাওয়েল ১/১৪)।
খুলনা টাইটানস: ১৮ ওভারে ১৫৯/৪ (ফ্লেচার ৯, হাসানুজ্জামান ৪০, মজিদ ২১, মাহমুদউল্লাহ ৫০, হাওয়েল ২৬*, পুরান ১*; জাইদ ০/০, আলাউদ্দিন ০/২৯, সাকিব ১/৪০, বিটন ০/৩৫, বোপারা ২/১৭, প্রসন্ন ০/২৩, তানভীর ১/১৪)।
ফল: খুলনা টাইটানস ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মাহমুদউল্লাহ।
পয়েন্ট তালিকা
ম্যাচ জয় পরাজয় পয়েন্ট রানরেট
ঢাকা ডায়নামাইটস ১২ ৮ ৪ ১৬ +০.৯১২
খুলনা টাইটানস ১২ ৭ ৫ ১৪ -০.২১৫
চিটাগং ভাইকিংস ১২ ৬ ৬ ১২ +০.২৩৩
রাজশাহী কিংস ১২ ৬ ৬ ১২ +০.২০৮
রংপুর রাইডার্স ১২ ৬ ৬ ১২ -০.১০৬
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ১২ ৫ ৭ ১০ -০.৩৪৫
বরিশাল বুলস ১২ ৪ ৮ ৮ -০.৬৮৮