টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং-সংকট নতুন কিছু নয়। এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সেই সংকট আরও প্রকট হয়ে ফুটে উঠেছে। যাঁদের আদর্শ মেনে তরুণ ক্রিকেটারদের টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংটা শেখার কথা, জাতীয় দলের সেই ব্যাটসম্যানরাই যে ব্যর্থ। আজ শুরু সুপার লিগে ছবিটা বদলায় কি না, সেটাই দেখার বিষয়।
টি-টোয়েন্টিতে জাতীয় দলের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা কয়েক বছর ধরে শুরুতে ধীরে খেলে পরে পুষিয়ে দেওয়ার তত্ত্ব মানছেন। কিন্তু সেই তত্ত্ব ব্যর্থ বেশির ভাগ ম্যাচেই।
তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ নাঈমদের মন্থর ব্যাটিং দেখা গেছে এবারের প্রিমিয়ার লিগেও। ১১ ম্যাচে আবাহনীর নাঈম ৩০৭ রান করেছেন ১২১ স্ট্রাইক রেটে। প্রাইম ব্যাংকের তামিমের ৩০৬ রানও এসেছে ১১৩ স্ট্রাইক রেটে।
এখন পর্যন্ত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যান -
জাতীয় দলের টপ অর্ডারের জায়গা পেতে লড়া অন্যদের অবস্থাও খুব ভালো নয়। গাজী গ্রুপের সৌম্য সরকার (২৩৫ রান, ১১৩ স্ট্রাইক রেটে), আবাহনীর নাজমুল হোসেন (২৩০ রান, ১৩০ স্ট্রাইক রেট) ও দোলেশ্বরের সাইফ হাসানও (২৪৬ রান, ১০৭ স্ট্রাইক রেটে) চোখে পড়ার মতো কিছু করেননি।
লিটন দাস চোটের কারণে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচ খেলেননি। আর সাকিব আল হাসান নিজের ব্যাটিংয়ের জন্য এবারের প্রিমিয়ার লিগই ভুলে যেতে চাইবেন। ৮ ম্যাচে ১০৯ স্ট্রাইক রেটে করেছেন মাত্র ১২০ রান।
তুলনায় মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা ভালোই করেছেন। লিগের শুরুর দিকে মুশফিকুর রহিম আবাহনীর ব্যাটিং একাই টেনেছেন। ১০ ইনিংসে ১২৬ স্ট্রাইক রেটে মুশফিকের ১৯৮ রান দলের জন্য খুবই কার্যকরী ছিল। মাহমুদউল্লাহকেও (১১৪ স্ট্রাইক রেটে ১৭৯ রান) প্রায় একই দায়িত্ব পালন করতে হয় গাজীতে।
জাতীয় দলের লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে দলগুলো। নির্বাচকেরা যখন ফিনিশার খুঁজছেন হন্যে হয়ে, সেখানে সেই ফিনিশারদেরই ক্লাবগুলো খেলিয়েছে একেক দিন একেক পজিশনে!
এখন পর্যন্ত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সেরা পাঁচ বোলার -
মেহেদী হাসানকে যেমন গাজী খেলিয়েছে ওপেনিংয়ে। ভালোই করেছেন মেহেদী, ১৫১.৫১ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ঠিক ২০০ রান। আফিফ হোসেনকে আবাহনী কখনো ওপেনিংয়ে, কখনো মিডল অর্ডারে খেলিয়েছে।
তুলনায় জাতীয় দলের বোলাররা কমবেশি সবাই ভালোই করেছেন। খালেদ আহমেদ ছিলেন এককথায় দুর্দান্ত। খালেদের ১৬ উইকেটের বেশির ভাগই এসেছে ডেথ ওভারে। ১৫ উইকেট নিয়েছেন তরুণ শরীফুল ইসলাম।
চোটের ঝুঁকি থাকায় মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন খেলেছেন বিশ্রাম নিয়ে। সাইফউদ্দিনের ১১ ম্যাচে ১২ উইকেট নেওয়াও সুখবর। স্পিনারদের জন্য কাজটা কঠিন ছিল না। রান থামানো, উইকেটও নেওয়া—দুই দায়িত্বেই নাসুম আহমেদ, নাঈম হাসান, মেহেদী, মিরাজ, সাকিবরা সফলই ছিলেন।