দীর্ঘ ব্যাটিং লাইনআপের সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশ
এক থেকে সাত পর্যন্ত প্রত্যেকেই পরিপূর্ণ ব্যাটসম্যান। সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে ধরলে ব্যাটসম্যান সংখ্যাটা গিয়ে ঠেকে নয়ে। জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং পরামর্শক অ্যাশওয়েল প্রিন্স বাংলাদেশের এমন দীর্ঘ ব্যাটিং লাইনআপকে দেখছেন শক্তি হিসেবে। যার কারণে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ দল বিপদে পড়েও শেষ পর্যন্ত জিততে পেরেছে।
গতকাল বাংলাদেশ রানের খাতা খোলার আগেই হারায় তামিম ইকবালের উইকেট। কনকনে ঠান্ডা বাতাস, মেঘলা আকাশের নিচে সাদা বলটি তখন হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠের উইকেট থেকে লাফিয়ে যাচ্ছিল উইকেটকিপারের গ্লাভসে। এমন সময় তিনে নেমে সাকিব আল হাসান প্রথম বলেই দুই পা সামনে এগিয়ে এসে সদ্য উইকেট নেওয়া পেসার ব্লেসিং মুজারাবানিকে সোজা ড্রাইভ করে মারলেন চার।
এমন শটকে সাধারণত ক্রিকেটের ভাষায় ‘সান আউট’ শট বলা হয়। সূর্যের পরিষ্কার আলোয় সুন্দর ব্যাটিং উইকেটেই কোনো নতুন ব্যাটসম্যান ক্রিজে এসে প্রথম বলেই এমন শট খেলার মানসিকতা রাখতে পারে। কিন্তু সাকিব খেললেন সম্পূর্ণ উল্টো কন্ডিশনে। এভাবে খেলেই ২৫ বলে ১৯ রান যোগ করেন ৩ চারে। আউটও হন আগ্রাসী শট খেলতে গিয়ে।
সাকিবের মতো একই ধাঁচে খেলে আউট হন মোহাম্মদ মিঠুন, মোসাদ্দেক হোসেন। উইকেট, কন্ডিশনের কঠিন চেহারা যেন কিছুই না। প্রতিপক্ষ বোলারদের চাপে ফেলাই মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের এমন আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের কারণ নাকি দীর্ঘ ব্যাটিং লাইনআপ। বিপদে পড়লে কেউ না কেউ তো থিতু হবেন-ই, খেলবেন দীর্ঘ ইনিংস। কাল লিটন দাস যেমন সে কাজটা করেছেন।
আজ বাংলাদেশ দলের প্রথম ওয়ানডের ব্যাটিং ব্যাখ্যায় এমন কথাই বলেছেন ব্যাটিং পরামর্শক প্রিন্স, ‘এক-দুজন ব্যাটসম্যান স্বীকার করবে যে ওরা ভুল করেছে। কিন্তু ভুল খেলার অংশ। আমাদের ব্যাটিং লাইনআপে সাতজন ব্যাটসম্যান আছে। এরপর দুজন অলরাউন্ডার আছে আট ও নয় নম্বরে। আমরা একেবারে রয়েসয়ে খেলতে চাই না যখন প্রতিপক্ষ ভালো বোলিং করে। আমরা প্রতি আক্রমণ করতে চাই। সেটা করতে গিয়ে আমাদের এক-দুইটা ভুল হতে পারে।’
দীর্ঘ ব্যাটিং লাইনআপের কারণে বাংলাদেশ দল দু-একজনের রান করার ওপর নির্ভরশীল না। কোচ হিসেবে তিনি এক থেকে নয় পর্যন্ত প্রত্যেক ব্যাটসম্যানের ওপরই রান করার সমান দায়িত্ব ছড়িয়ে দিয়েছেন, ‘আমরা এক থেকে নয় পর্যন্ত ব্যাটসম্যানদের ওপর আমরা আস্থা রাখতে পারি। কারণ ৭ জন তো ব্যাটসম্যানই। আর দুজন অলরাউন্ডার যারা ভালো ব্যাট করে। এই পরিকল্পনাটা সবাইকে নিয়ে। এক-দুজনের ওপর নির্ভরশীল না। আমরা যখন প্রতি আক্রমণে যাব, তখন ভুল করবই। কিন্তু সবার ওপরই নির্ভর করছি। কাল যেমন সবাই মিলে আমরা ২৭০ রান করেছি। যা আমি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি।’