ধোনি অধিনায়কত্বে ফিরতেই ছন্দে চেন্নাই

চেন্নাই সমর্থকদের হাতে ধোনির প্লাকার্ড। তাঁর অধিনায়কত্বে চেন্নাইও দারুণ জয় পেয়েছেছবি: আইপিএল

রবীন্দ্র জাদেজার অধিনায়কত্বে ৮ ম্যাচে মাত্র ২ জয় পেয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংস। জাদেজা নিজেও ভালো ফর্মে নেই। টনক নড়ে চেন্নাই ম্যানেজমেন্টের। অধিনায়কত্বে ফিরিয়ে আনা হয় মহেন্দ্র সিং ধোনিকে।

এবার আইপিএলে ধোনি অধিনায়কত্ব পেয়েই প্রথম ম্যাচে জয় এনে দিলেন চেন্নাইকে। দিনের শেষ ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ১৩ রানে হারিয়েছে চেন্নাই। আগের ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের কাছে হেরেছে দলটি।

৯ ম্যাচে চেন্নাইয়ের এই তৃতীয় জয়ে সবার আগে বাহবা পাবেন চেন্নাই ওপেনার রুতুরাজ গায়কোয়াড়। উদ্ধোধনী জুটিতে ১৭.৫ ওভারে ১৮২ রান তুলেছে চেন্নাই। টি নটরাজনের বলে গায়কোয়াড় যখন আউট হলেন সানরাইজার্স অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন এসে পিঠ চাপড়ে দেন তাঁর। সেটি অবশ্য সান্ত্বনাসূচক।

রুতুরাজ ৯৯ রানে আউট হওয়ার পর তাঁর পিঠ চাপড়ে দেন উইলিয়ামসন
ছবি: আইপিএল

৬ ছক্কা ও ৬ চারে সাজানো ৫৭ বলের ইনিংসে গায়কোয়াড় যে ৯৯ রানে আউট! আইপিএলে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৯৯ রানেই আউট হলেন গায়কোয়াড়। বিরাট কোহলি, ইষান কিষান, পৃথ্বী শ ও ক্রিস গেইলের পর এই দূর্ভাগ্যের শিকার হলেন গায়কোয়াড়। গেইল এর মধ্যে একাই দুবার ৯৯ রানে আউট হয়েছেন।

চেন্নাইয়ের আরেক ওপেনার ডেভন কনওয়ে অন্য প্রান্তে ৫৫ বলে ৮৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৪ ছক্কা ও ৮ চারে ইনিংসটি সাজান এই কিউই। দুজনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ২ উইকেটে ২০২ রান তোলে চেন্নাই। তাড়া করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৮৯ রানে থেমেছে সানরাইজার্স।

তবে সানরাইজার্সের শুরুটা ছিল ভালো। ওপেনার অভিষেক শর্মা ২৪ বলে ৩৯ রানে আউট হওয়ার আগে ৫.৫ ওভারে ৫৮ রান তুলে ফেলে সানরাইজার্স। পরের বলে রাহুল ত্রিপাঠি আউট হওয়ার পরই বিপদে পড়ে দলটি। দুটি উইকেট নেন চেন্নাইয়ের বাঁহাতি পেসার মুকেশ চৌধুরী। রানের গতিও কমে আসে এরপর।

১০ ওভার শেষে সানরাইজার্সের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ৮৯। তখনও ওভারপ্রতি গড়ে ১১.৪০ করে দরকার উইলিয়ামসনের দলের। ১০ বলে ১৭ রান করা এইডেন মার্করামকে দশম ওভারে তুলে নেন কিউই স্পিনার মিচেল স্যান্টনার।

চেন্নাই ফিরেছে ধোনির অধিনায়কত্বের ছায়াতলে
ছবি: আইপিএল

নিকোলাস পুরান থাকায় তখনও সানরাইজার্সের জয়ের আশা ছিল। প্রয়োজন ছিল ভালো একটি জুটির। উইলিয়ামসনকে সঙ্গে নিয়ে জুটিটা গড়ার চেষ্টা করেন ক্যারিবিয়ান বাঁহাতি হার্ড হিটার। কিউই তারকা উইলিয়ামসন স্বভাবসুলভ এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট করছিলেন। ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

কিন্তু ১৫তম ওভারে ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন উইলিয়ামসন। ৩৭ বলে ৪৭ রান করেন তিনি। জয়ের জন্য শেষ ৫ ওভারে ৭২ রান দরকার ছিল সানরাইজার্সের। এখান থেকে পুরানই ছিলেন দলটির একমাত্র ভরসা।

কিন্তু চেন্নাইয়ের মহেশ থিকসেনা, প্রিটোরিয়াস ও মুকেশ পরের তিন ওভারে পুরান এবং শশাঙ্ক সিংকে যথাসম্ভব আটকে রাখার চেষ্টা করে সানরাইজার্সকে আরও বেশি চাপে ফেলেন। ১৮তম ওভারে শশাঙ্ক (১৪ বলে ১৫) ও ওয়াশিংটন সুন্দরকে তুলে নিয়ে চেন্নাইয়ের জয়কে সময়ের ব্যাপারে পরিণত করেন মুকেশ।

চেন্নাই পেসার মুকেশ দারুণ বল করে ৪ উইকেট নেন
ছবি: আইপিএল

জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে ৫০ রান দরকার ছিল সানরাইজার্সের। প্রিটোরিয়াস ১৯তম ওভারে ১২ রান দিয়ে চেন্নাইকে প্রায় জিতিয়েই দেন। কেননা, জয়ের জন্য শেষ ওভারে ৩৮ রান দরকার ছিল সানরাইজার্সের। জিততে হলে শেষ ওভারে অলৌকিক কিছু করতে হতো দলটিকে। তা হয়নি। শেষ ওভারে ৩ ছক্কা মিলিয়ে মোট ২৪ রান তুলে নেওয়ার পথে পুরান অর্ধশতক পেলেও জিততে পারেনি সানরাইজার্স।

৩৩ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত ছিলেন পুরান। ৬ ছক্কা ও ৩ চারে ইনিংসটি সাজান তিনি।

চেন্নাইয়ের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার মুকেশ। ৪ ওভারে ৪৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে দারুণ অবদান তাঁর। এর আগে সানরাইজার্সের হয়ে ৪২ রানে ২ উইকেট নটরাজনের। ৯ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের নয়ে চেন্নাই। সমান ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে চারে সানরাইজার্স।