নিজে ভুগেছেন, তাই ছেলের ক্রিকেটার হওয়াতে সরফরাজের ‘না’

বাবা সরফরাজ াাহমেদের কোলে আবদুল্লাহছবি: টুইটার

জিতলে ‘হুররে’ বলে কলরব তুলবে সবাই। আর হেরে গেলে বলবে—কী লজ্জা, কী লজ্জা! খেলার জগৎ এ রকমই। কেউ যখন ভালো করবে, তাকে মাথায় তুলে রাখবে ভক্ত-সমর্থকেরা। আর ভালো করতে না পারলে সমালোচনার তিরে বিদ্ধ করবে। খেলোয়াড়ি জীবনে মুদ্রার দুই পিঠ প্রায় সবাইকেই দেখতে হয়। পাকিস্তানের ক্রিকেটার সরফরাজ আহমেদও এর ব্যতিক্রম নন।

সরফরাজের নেতৃত্বে পাকিস্তান ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা জেতে। ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে ট্রফি নিয়ে দেশে ফেরার পর সরফরাজদের সে কী প্রশংসা! দুই বছর পর মুদ্রার উল্টো পিঠটাই দেখতে হয়েছে সরফরাজসহ ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলা পাকিস্তান ক্রিকেটারদের। লিগ পর্বে ৫টি ম্যাচ জিতলেও যে সেমিফাইনালে খেলা হয়নি পাকিস্তানের। এরপর তো সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হতে হয়েছে দলটির খেলোয়াড়দের।

একজন ক্রিকেটারের জীবনে অমন সময় যখন আসে, সেটাকে সামাল দেওয়া অত সহজ ব্যাপার নয়। সবকিছুকেই তখন বিস্বাদ মনে হয়। ২০১৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দেওয়া সরফরাজ এমন তেতো অভিজ্ঞতা তাঁর ছেলেকে পেতে দিতে চান না। এ কারণেই তিনি চান না তাঁর ছেলে আবদুল্লাহ পেশা হিসেবে ক্রিকেটকে বেছে নিক।

আবদুল্লাহ এখনো ছোট। তবে তার ব্যাট ধরা আর শট খেলার যে ধরন, সেটা ভালোই সুনাম কুড়িয়েছে। তার খেলা দেখে মুগ্ধ হওয়ার কথা বলেছেন পাকিস্তানের সাবেক উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান মঈন খান। শোয়েব মালিকের স্ত্রী ভারতের টেনিস খেলোয়াড় সানিয়া মির্জাও আবদুল্লাহর খেলার প্রশংসা করেছেন। নিজের ছেলের ক্রিকেট-প্রতিভা নিয়ে সন্দেহ নেই সরফরাজেরও। এরপরও তিনি চান না আবদুল্লাহ নিজেকে ক্রিকেটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করুক।

পাকিস্তানের একটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সরফরাজ বলেছেন, ‘ক্রিকেট খেলতে আবদুল্লাহ খুব পছন্দ করে। কিন্তু আমি চাই না সে ক্রিকেটকে পেশা হিসেবে নিক। সত্যি বলতে কি, একজন ক্রিকেটার হিসেবে আমি অনেক জায়গায় ভুগেছি। আমি চাই না আবদুল্লাহও তার জীবনে এগুলোর মুখোমুখি হোক।’ আবদুল্লাহর প্রতিভা নিয়ে সরফরাজ বলেছেন, ‘অনেকেই আমাকে বলেছে যে আবদুল্লাহ প্রতিভাবান। আমার উচিত তাকে ক্রিকেট খেলতে দেওয়া।’

সরফরাজ এরপর যোগ করেছেন, ‘মঈন ভাই আবদুল্লাহর স্কিলের প্রশংসা করেছেন। সানিয়া মির্জা একবার আমাকে বলেছে যে আবদুল্লাহর ক্রিকেটার হওয়ার প্রতিভা আছে। সেটাই যদি হয়, আমি চাই সে কঠিন পরিশ্রম করে নিজের লক্ষ্য অর্জন করুক। আমার ছেলে বলে কেউ তার পথটা সহজ ও মসৃণ করে দেবে না।’