নিউজিল্যান্ড সফর বাতিল করে চলে গেছে নিরাপত্তার শঙ্কার কারণে। এ পরিস্থিতির পর ‘জৈব সুরক্ষাবলয়ে থেকে অবসাদে ভুগছেন ক্রিকেটাররা’—এমন কথা বলে পাকিস্তানকে না করে দিয়েছে ইংল্যান্ডও। পুরুষ ও নারী—ইংল্যান্ডের উভয় দলেরই যাওয়ার কথা ছিল পাকিস্তান সফরে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান রমিজ রাজা বলেছেন, ‘পাকিস্তানকে ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া হয়েছে ডাস্টবিনে।’
এবার অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যান উসমান খাজা বলছেন, এসব কিছুর পেছনে আছে টাকার হাত। পাকিস্তান বা বাংলাদেশকেই সবাই ‘না’ করতে পারে, ভারত হলে এমন করতে পারত না কেউ—এমনও বলেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কার ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে পাকিস্তান থেকে নির্বাসনে গিয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পিসিবির জোর চেষ্টার পর সেখানে ফিরতে শুরু করেছিল আন্তর্জাতিক দলগুলো। প্রায় ১৮ বছর পর পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা ছিল নিউজিল্যান্ডের, ইংল্যান্ডের যাওয়ার কথা ছিল ১৬ বছর পর।
পিসিবি বরাবরই বলে আসছে, নিরাপত্তার নির্দিষ্ট কোনো হুমকির কারণে সফর বাতিল করেছে নিউজিল্যান্ড—সেটা বলা হয়নি তাদের। ইংল্যান্ডও সরাসরি নিরাপত্তার ইস্যুর কথা বলেনি। এদিকে পাকিস্তানের ব্রিটিশ হাইকমিশন জানিয়েছে, সফর বাতিল করার সিদ্ধান্তের পুরোটাই ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের। দেশটির নাগরিকদের পাকিস্তান সফর না করার ব্যাপারে কোনো পরামর্শ দেয়নি তারা।
এসব কিছুর পর পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত খাজা বলছেন, ক্রিকেটীয় দিক দিয়ে পাকিস্তান সফর বাতিলের ব্যাপারটা চরম হতাশার, ‘আমার মনে হয়, খেলোয়াড় ও বোর্ডগুলোর পাকিস্তানকে না বলাটা খুবই সহজ। কারণ, দেশটার নাম পাকিস্তান। আমার ধারণা, বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এমনই হয়। তবে এমন পরিস্থিতিতে পড়লে কেউই ভারতকে না বলবে না।’
এর পেছনে টাকার হাতও দেখছেন তিনি, ‘আসলে টাকা কথা বলে। আমরা সবাই জানি এটা, হয়তো এসব কিছুর পেছনে বড় একটা হাত সেটারও আছে। বারবার তারা (পাকিস্তান) টুর্নামেন্ট আয়োজন করে দেখিয়েছে, ক্রিকেট খেলার জন্য জায়গাটা নিরাপদ। না যাওয়ার পেছনেও কোনো কারণ পাচ্ছি না আমি।’
এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়ারও সফর করার কথা পাকিস্তানে। তবে নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ডের সফর প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পর অস্ট্রেলিয়ার পাকিস্তান যাওয়াটাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। রমিজ নিজেই জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ারও পাকিস্তান সফর প্রত্যাহার করার সম্ভাবনাই বেশি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়াও ‘ফাইভ আইজ ইন্টেলিজেন্স অ্যালায়েন্স’—নামের একটা সংস্থার অন্তর্ভুক্ত। নিরাপত্তাসংক্রান্ত তথ্য ‘শেয়ার’ করে এসব দেশ।
তবে খাজা বলছেন, পাকিস্তানে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকা উচিত নয়, ‘সবাই সেখানে নিরাপদ বোধ করে, আমি বরাবর এটাই শুনে এসেছি। এ ছাড়া অন্য কিছু না। যারা পিএসএলে (পাকিস্তান সুপার লিগ) খেলে, তারাও বলেছে একই কথা। ১০ বছর আগে হয়তো অনিশ্চয়তা ছিল, তবে এখন সেখানে যাওয়ার ব্যাপারে সবাই শতভাগ নিশ্চিত।’
১৯৯৮ সালের পর পাকিস্তান সফর করেনি অস্ট্রেলিয়া। তবে সেখানে ম্যাচ আয়োজন করা ক্রিকেট–বিশ্বেরই অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত বলেও মনে করেন খাজা।