বাংলাদেশ কন্ডিশন নিয়ে ‘হোমওয়ার্ক’ করেই আসছে নিউজিল্যান্ড
বাংলাদেশের কন্ডিশন যে টি-টোয়েন্টি সংস্করণেও কঠিন হয়ে উঠতে পারে, সেটা দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সিরিজেই। এবার সে চ্যালেঞ্জ নেওয়ার পালা নিউজিল্যান্ডের। এমনিতেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ডাক পাওয়া কেউ নেই নিউজিল্যান্ড স্কোয়াডে, তাদের সম্মিলিত ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা সাকিব আল হাসানের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতার চেয়েও কম। তবে নিউজিল্যান্ড আসছে তৈরি হয়েই। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের ভিডিও এবং লিংকনে বিশেষ অনুশীলন উইকেট তাঁদের কাজে আসবে বলেই আশা কিউইদের।
নিউজিল্যান্ড সিরিজের উইকেট কেমন হবে, সেটা নিশ্চিত নয় এখনো। তবে আবহাওয়া, প্রতিপক্ষ মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ার মতোই থাকার কথা মিরপুর শেরেবাংলার উইকেট। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের মতো উইকেট মানে স্বাভাবিকভাবেই সেটা হতে যাচ্ছে স্পিন সহায়ক। ব্যাট করা সেখানে কঠিন। সর্বশেষ সিরিজে কোনো দলই প্রথম ইনিংসে করতে পারেনি ১৩১ রানের বেশি।
বাংলাদেশে কাজটা কঠিন, সেটা জানেন বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেল, ‘উপমহাদেশের কন্ডিশন নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং। আমরা জানি, বাংলাদেশের মাটিতে আমরা ভিন্ন বাংলাদেশকে দেখতে পাব। ক্রিকেটটা সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে সেখানে। ঘরের মাঠে তারা খুবই শক্তিশালী, ওদের খেলাটা সম্পূর্ণ ভিন্ন ধাঁচেরই হবে। আমাদের কাজ হচ্ছে দ্রুত পরিস্থিতি বিবেচনা করা ও সেই অনুযায়ী মানিয়ে নেওয়া।’
মিচেল স্যান্টনার, ইশ সোধি, টড অ্যাস্টলদের নিয়ে নিউজিল্যান্ডের সীমিত ওভারের স্পিন আক্রমণ ভালোই। তবে বাংলাদেশ সফরে এ তিনজনের কেউই নেই। এ স্কোয়াডে থাকা অফস্পিনার কোল ম্যাকনকি ও বাঁহাতি স্পিনার রচিন রবীন্দ্রর আন্তর্জাতিক অভিষেকই হয়নি। স্পিনে সবচেয়ে অভিজ্ঞ তাই দুটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা প্যাটেলই।
সাধারণত লাল বলের ক্রিকেটেই ভাবা হয় প্যাটেলকে, খেলেছেন ৯টি টেস্টে। তবে বাংলাদেশের কন্ডিশনে সাদা বলে খেলার সুযোগটা বিশেষ বলেই মনে হচ্ছে বাড়তি দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত প্যাটেল, ‘নিউজিল্যান্ড দলে সুযোগ পেয়েছি। এটা আমার জন্য বিশেষ কিছু। স্পিনার হিসেবে এমন কন্ডিশনে খেলার জন্য সবাই মুখিয়ে থাকে। এমন কন্ডিশনে খেলব, যেখানে স্পিনাররা যথেষ্ট সহায়তা পাবে। স্পিনার হিসেবে আমাকে হয়তো বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। আমি নিউজিল্যান্ডের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেট খেলার সুযোগের অপেক্ষায় আছি।’
বাংলাদেশের কন্ডিশনের একটা ধারণা পেতেই নিউজিল্যান্ডেই বিশেষ উইকেটে অনুশীলন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ক্যান্টাবেরির স্পিনার ম্যাকনকি, ‘আমরা বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের বেশ কিছু ভিডিও দেখেছি। একটা ধারণা হয়েছে কন্ডিশন কেমন হতে পারে। লিংকনে আমাদের যে কদিন অনুশীলন হয়েছে, সেটা উপকারে আসার কথা। কারণ, মাঠকর্মীরা আমাদের জন্য যে উইকেট তৈরি করে দিয়েছে, সেটা আমাদের অনেক সাহায্য করবে বলে মনে হয়।’
দ্বিতীয় সারির দল হলেও স্কোয়াড নিয়ে বেশ রোমাঞ্চের সুরই পাওয়া গেল ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক টম ল্যাথামের কণ্ঠে। তবে কন্ডিশনের কথা আলাদা করে বলছেন তিনিও, ‘কোলকে (ম্যাকনকি) ভালো করতে দেখে ভালো লাগছে। তাঁর অলরাউন্ড দক্ষতা হয়তো বাংলাদেশের কন্ডিশনে কাজে লাগবে। আর বেনের (সিয়ার্স) গতি চোখে পড়ার মতো। সে একদমই নতুন। এটাও রোমাঞ্চকর। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের এমন গভীরতা দেখে ভালো লাগছে। আশা করি, ওরা ভালো করবে। আমাদের দেখতে হবে কন্ডিশন কেমন হবে। গুরুত্বপূর্ণ হলো কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া।’
পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে আগামীকালই বাংলাদেশে আসছে নিউজিল্যান্ড। দুপুর ১২টায় ঢাকা এসে পৌঁছানোর কথা কিউইদের। এসে তিন দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকবেন তাঁরা। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটি ১ সেপ্টেম্বর। সব কটি ম্যাচই হবে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে।