ভারত-পাকিস্তান বিবাদ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ আফ্রিদির
নিউজিল্যান্ড দল বড় দাগা দিয়েছে পাকিস্তানকে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলার কথা ছিল তাদের। দুটি সিরিজ খেলার জন্য কিউইরা পাকিস্তানে পৌঁছেও গিয়েছিল। কিন্তু খেলা আর মাঠে গড়ায়নি। নিরাপত্তা শঙ্কাকে কারণ দেখিয়ে না খেলেই তড়িঘড়ি করে পাকিস্তান ছেড়েছে নিউজিল্যান্ড দল। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) স্তব্ধ করে দেওয়া সে ঘটনা এখনো মেনে নিতে পারছেন না দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা।
এ ঘটনায় ভারতের দায় দেখতে পাচ্ছেন শহীদ আফ্রিদি। সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক অন্য দেশগুলোর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন অন্ধভাবে ভারতকে অনুসরণ না করার জন্য। এসব ব্যাপারে আইসিসির হস্তক্ষেপও চাইছেন আফ্রিদি।
ক্রিকেট পাকিস্তানকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আফ্রিদি। সেখানে পাকিস্তান ক্রিকেট, বর্তমান জাতীয় দল, বিশ্বকাপের দল নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন আফ্রিদি। এসবের মধ্যে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা নিয়ে তো কথা বলবেনই। নিউজিল্যান্ডের সফর বাতিলের ঘটনায় প্রচণ্ড দুঃখ পেয়েছেন আফ্রিদি। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের বিষয়ে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলেই তাঁর ধারণা।
আফ্রিদির দাবি, পিসিবির সঙ্গে আলোচনা না করে এককভাবে সিরিজ বাতিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভুল করেছে নিউজিল্যান্ড, ‘আমরা সবাই জানি, সিরিজ আয়োজনের ক্ষেত্রে সবকিছু খুঁটিয়ে দেখা হয়। সফরকারী দলের নিরাপত্তা সদস্যরা পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষণ করে নেন। সব পথ বলে দেওয়া হয়। যখন সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়, তখনই শুধু সফরের অনুমতি মেলে।’
নিউজিল্যান্ড জানিয়েছে, হামলা হতে পারে দলের ওপর, এমন তথ্য তাদের ই–মেইল করে জানানো হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের পর ইংল্যান্ডও পাকিস্তান সফর বাতিল করেছে। ইংল্যান্ড করোনার জৈব সুরক্ষাবলয়ের ক্লান্তিকে মূল কারণ দেখালেও নিরাপত্তা হুমকিও যে সে সিদ্ধান্তে ভূমিকা রেখেছে, সেটা মূলত সবারই জানা। কারণ, নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড একই নিরাপত্তা সংস্থার পরামর্শ গ্রহণ করে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে ক্রিকেট–সংশ্লিষ্ট সবাই এর পেছনে ভারতের চক্রান্ত দেখছেন। আফ্রিদিও তেমনটাই ভাবছেন। আর ‘শিক্ষিত’ দেশগুলোকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, ‘যদি আমরা আরও ভালোভাবে দেখি, তাহলে খুব সহজেই বুঝব, এর মূল উদ্দেশ্য কী। এসব ভুয়া ই–মেইলকে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়। আর শিক্ষিত দেশগুলোর উচিত হবে ভারত-পাকিস্তান বিবাদ থেকে নিজেদের দূরে রাখা এবং এককভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া।’
এভাবে সিরিজ বাতিল করে দেওয়াতে নিউজিল্যান্ডের ওপর বেশ খেপেছেন আফ্রিদি, ‘পাকিস্তানে নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটারদের সবাই ভালোবাসে। তাদের এমন কাণ্ড ক্ষমার অযোগ্য। যদি আসলেই কোনো বিপদের আশঙ্কা থাকত, তাহলে তারা সেটা পিসিবিকে জানাতে পারত এবং পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপারটাকে কীভাবে দেখছে, সেটা জানা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারত।’
এসব ব্যাপারে ভবিষ্যতে আইসিসির হস্তক্ষেপ চাইছেন আফ্রিদি, ‘পাকিস্তান যখন ভুগছে আর দলগুলো কোনো কারণ ছাড়া সফর বাতিল করেও পার পেয়ে যাচ্ছে, তখন নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত নিষ্ক্রিয় না থাকা।’