মাশরাফি বললেন, ধর্ষকেরা কুৎসিত, ঘৃণ্য মানসিকতার

ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার মাশরাফি বিন মুর্তজা।ছবি: প্রথম আলো

ধর্ষণের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে গোটা দেশ। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে নিপীড়নের ঘটনা কিংবা সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে নারীকে আটকে রেখে গণধর্ষণ—সবার সহ্যের বাঁধ যেন ভেঙে গেছে। সাধারণ নাগরিকদের ঘৃণার এ অনুভূতি ছুঁয়ে যাচ্ছে তারকাদেরও। গতকাল সাকিব আল হাসান ফেসবুকে নারী প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে রীতিমতো লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন। মুশফিকুর রহিম এ ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে গোটা বাংলাদেশকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন। আজ ফেসবুকে সোচ্চার হলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তিনি মনে করেন নারীকে নিপীড়নকারী, ধর্ষণকারী যে-ই হোন না কেন, সে চেহারায় না হলেও মানসিকতায় ভীষণ কুৎসিত।

মাশরাফি তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রশ্ন রেখেছেন, অন্য নারীকে নিজের মেয়ে, বোন বা স্ত্রীর মতো করেই অন্য নারীকে দেখার দৃষ্টিটা মানুষের কেন থাকবে না, ‘আপনার মেয়ে যখন আপনার কোলে বসে থাকে, তখন আপনার সেই অনুভূতি হয় না। যখন আপনার বোন আপনার পাশের রুমে থাকে, তখনো সেই অনুভূতি আসে না। আপনার স্ত্রীকে নিয়ে যখন আপনি ঘুরতে বের হন, তখন কেউ তাঁর দিকে বাঁকাভাবে তাকালে আপনার খারাপ লাগে। কিন্তু অন্যকে দেখার ক্ষেত্রে কি আমার, আপনার অনুভূতি একই রকম আছে?’

অনুভূতি যদি ভিন্ন হয়, তবে সেটা কারও মানসিকতার সমস্যা বলেই মনে করেন মাশরাফি, ‘অনুভূতিটা এক না হলে বুঝে নিতে হবে সমস্যা অনেকের মগজেই। হয়তো পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে সবারটা প্রকাশ পায় না। আসুন নিজের মানসিকতা পরিবর্তন করি। নারীকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে দিই।’

ধর্ষকেরা কোনো পরিচয় বহন করে না বলেই পোস্টটি শেষ করেছেন দেশের অন্যতম সেরা এই তারকা, ‘ধর্ষক কোনো পরিচয় বহন করে না। সে কুৎসিত। হয়তো চেহারায় নয়, মানসিকতায়।’

ধর্ষকদের প্রতি একরাশ ঘৃণা মাশরাফির
ছবি: প্রথম আলো

নারী ধর্ষণ, কিংবা নিপীড়ন যেন প্রতিদিনের ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে চোখ রাখলেই ধর্ষণের বিভিন্ন ঘটনায় শিউরে উঠছে মানুষ। নারীর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা-উদ্বেগ ছড়িয়ে যাচ্ছে সর্বত্র। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে সোচ্চার সবাই। বিভিন্ন জায়গায় চলছে প্রতিবাদ। গতকাল সাকিব আল হাসান তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘এক শ্রেণির বর্বর মানুষ বয়স, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে নারী ও শিশুদের প্রতি প্রতিদিনই যে জঘন্য অন্যায় করছে, তারপর আর আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আমার অবস্থান তাই সব ধরনের ঘৃণা আর সহিংসতার বিরুদ্ধে।’

মুশফিকও বলেছেন এসব ঘটনার কোনো স্থান সমাজে থাকতে পারে না, ‘আমরা আর চুপ করে থাকতে পারি না। ধর্ষণ কিংবা যে কোনো যৌন নির্যাতন কখনো সহ্য করা হবে না। সমাজে এর কোনো জায়গা নেই। জেগে ওঠো বাংলাদেশ, ধর্ষণকে না বলার পক্ষে অবস্থান নাও। না মানে না।’

আজও দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে চলছে বিক্ষোভ। ‘আমার মাটি, আমার মা, ধর্ষকদের হবে না’, ‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁইয় নাই’, ‘পাহাড় কিংবা সমতলে, লড়াই হবে সমানতালে’—এমন স্লোগান তুলে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে ছড়িয়ে দিচ্ছেন একরাশ ঘৃণা।