মোস্তাফিজের বল আর মাহমুদুলের ব্যাটে প্লে-অফে কুমিল্লা

অর্ধশতক পেয়েছেন মাহমুদুল হাসানছবি: শামসুল হক

সিলেট সানরাইজার্স ডুবেছে আগেই। গত ম্যাচে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে হারেই নিশ্চিত হয়েছে, প্লে-অফে যেতে পারছে না তারা। দলটির বিপক্ষে হার তাই টেবিলের ওপরের দিকে দলগুলোর জন্য হোঁচট খাওয়া। আগের ম্যাচে বরিশালকে কাঁপিয়ে দেওয়ার পর এবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকেও আটকে দেওয়ার কাছাকাছি গিয়েছিল রবি বোপারার দল।

তবে মাহমুদুল হাসানের অর্ধশতকের সঙ্গে মঈন আলীর ৩৫ বলে ৪৬ রানের ইনিংস আর শেষদিকে ইমরুল কায়েস ও সুনীল নারাইনের ক্যামিওতে শেষ পর্যন্ত জিতেছে কুমিল্লাই। সিলেটের ১৬৯ রান পেরিয়ে গেছে ১ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে। এই মুহূর্তে পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় কুমিল্লার পয়েন্ট ৮ ম্যাচে ১১, এক ম্যাচ বেশি খেলে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ফরচুন বরিশাল। বরিশালের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত হলো কুমিল্লার।

বরিশালের পর প্লে-অফ নিশ্চিত হলো কুমিল্লারও
ছবি: প্রথম আলো

আগের ম্যাচের মতো এবারও ব্যাটিংয়ে শুরুটা দারুণ হয়েছিল সিলেটের। উদ্বোধনী জুটিতেই কলিন ইনগ্রাম ও এনামুল হক তোলেন ১০৫ রান। ৩৩ বলে ৪৬ রান করা এনামুলকে ফিরিয়ে সে জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। এনামুল ইনিংসে ৪টি চারের সঙ্গে মারেন ৩টি ছয়। শেষ ওভারে মোস্তাফিজের শিকার হওয়া ইনগ্রাম ৬৩ বলে করেছেন ৮৯ রান। ডেথ ওভারে দারুণ বোলিং করেছেন মোস্তাফিজ।

তিনে নেমে ১৩ বলে ১৬ রান করা লেন্ডল সিমন্সের পর বোপারা ফেরেন ২ বলে ১ রান করেই। তানভীর ইসলামকে ছয় মারার পর আবারও মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন সিমন্স, পরের ওভারে নারাইনের বলে বোল্ড হন বোপারা। ইনগ্রাম টানা দ্বিতীয় অর্ধশতক পূর্ণ করেন ৩৫ বলে, শেষ পর্যন্ত তাঁর ৮৯ রানের ইনিংসে ৯টি চারের সঙ্গে ছিল ৩টি ছয়। শেষ ওভারের প্রথম বলে মোস্তাফিজকে ছয় মারার পর আউট হন ইনগ্রাম, পরের ৪ বলে মোস্তাফিজ দেন মাত্র ৩ রান। ২৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে কুমিল্লার সেরা বোলার এ বাঁহাতি পেসার।

বৃথা গেছে কলিন ইনগ্রামের টানা দ্বিতীয় অর্ধশতক
ছবি: প্রথম আলো

রান তাড়ায় প্রথম বলেই বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলামকে ছয় মেরে শুরু করেন লিটন দাস। তবে পরের ওভারে একেএস স্বাধীনের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন তিনি। তৃতীয় ওভারে নাজমুলের বলে ফাফ ডু প্লেসি এলবিডব্লু হলে বিপদ বাড়ে কুমিল্লার। সেখান থেকে তাদের টেনে তোলেন মাহমুদুল ও মঈন। তৃতীয় উইকেটে এ দুজনের ৬৬ বলে ৮২ রানের জুটিতে কুমিল্লা এগিয়ে যায় অনেকটাই।

৩৫ বলে ৪৬ রান করে বোপারার বলে মঈন ক্যাচ দিলে ব্রেক থ্রু পায় সিলেট। এরপর ৮ বলে ১৬ রানের ক্যামিও খেলা কুমিল্লা অধিনায়ক ইমরুল বোল্ড হন নাজমুলের বলে। ১৮তম ওভারের শেষ ২ বলে মাহমুদুল ও আরিফুল হক ফিরলে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফেলে সিলেট। মাহমুদুল ফেরেন ৫০ বলে ৬৫ রান করে, ইনিংসে ৭টি চারের সঙ্গে মারেন ২টি ছয়।

ইনগ্রামকে ফেরানোর পর মোস্তাফিজের উচ্ছ্বাস
ছবি: প্রথম আলো

শেষ ২ ওভারে কুমিল্লার প্রয়োজন ছিল ১২ বলে ২২ রান, তবে ১৯তম ওভারে স্বাধীন ৩ ওয়াইডসহ দেন ১৯ রান। এর আগেই জীবন পাওয়া নারাইন চড়াও হন তাঁর ওপর, ১টি চারের সঙ্গে মারেন ১টি ছয়। শেষ ওভারের প্রথম ৪ বলে ২ রান দেন আলাউদ্দিন, পঞ্চম বলে আবু হায়দারের মারা চারে জয় নিশ্চিত হয় কুমিল্লার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

সিলেট সানরাইজার্স: ২০ ওভারে ১৬৯/৫ (ইনগ্রাম ৮৯, এনামুল ৪৬, সিমন্স ১৬, আলাউদ্দিন ১০; মোস্তাফিজুর ৩/২৩, নারাইন ১/৩৪, তানভীর ১/৩৭)

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস: ২০ ওভারে ১৭০/৬ (মাহমুদউল ৬৫, মঈন ৪৬, নারাইন ২৪*, ইমরুল ১৬; আলাউদ্দিন ২/২৪, নাজমুল ২/৩৬, স্বাধীন ১/২৯, বোপারা ১/৩২)

ফল: কুমিল্লা ৪ উইকেটে জয়ী