সিরিজ ঝুলছে সুতোর ওপর। প্রথম দিনটা ছিল বিরাট কোহলির লড়াই আর কাগিসো রাবাদার পাল্টা আঘাতের। কেপটাউন টেস্টের দ্বিতীয় দিন যেন রোমাঞ্চ বেড়ে গেল আরও। ক্ষণে ক্ষণে রং বদলাল সেটি। শেষ পর্যন্ত ১১ উইকেটের আরেকটি দিনে ভারত এগিয়ে গেছে ৭০ রানে, দ্বিতীয় ইনিংসে কোহলিদের হাতে বাকি আছে ৮ উইকেট।
নিউল্যান্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বারবার চেপে ধরেছেন যশপ্রীত বুমরা, মোহাম্মদ শামিরা। অন্যদিকে প্রোটিয়াদের লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন ৭২ রান করা কিগান পিটারসেন। অবশ্য ৫ উইকেট নিয়ে ভারতকে ঠিকই এগিয়ে দিয়েছেন বুমরা। মাত্র দ্বিতীয় ভারতীয় পেসার হিসেবে কেপটাউনের এ ভেন্যুতে ৫ উইকেট নিলেন বুমরা, সর্বশেষ ২০১১ সালে নিয়েছিলেন শান্তকুমারন শ্রীশান্ত।
শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১০ রানে অলআউট করে দিয়ে প্রথম ইনিংসে ১৩ রানের লিড নেয় ভারত। এরপর আবার ব্যাটিংয়ে নেমে ২৪ রানের মধ্যে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা।
আপাতত সেই চাপ একটু সামলে নিয়েছেন অধিনায়ক কোহলি ও চেতেশ্বর পূজারা। দুজনের তৃতীয় উইকেট জুটি অবিচ্ছিন্ন ৩৩ রানে, ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে এগিয়ে আছে ৭০ রানে। ১৪ রানে অপরাজিত থেকে আগামীকাল তৃতীয় দিন শুরু করবেন কোহলি, পূজারা ব্যাটিং করছিলেন ৯ রানে।
১ উইকেটে ১৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দিনের দ্বিতীয় বলেই আঘাত করেন বুমরা, বোল্ড হন এইডেন মার্করাম। উমেশ যাদবের বলে বোল্ড হওয়ার আগে নাইটওয়াচম্যান কেশব মহারাজ ভারতকে ভোগান একটু, ৪৫ বল খেলে করেন ২৫ রান। মধ্যাহ্নবিরতির আগে-পরে কিগান পিটারসেন ও রেসি ফন ডার ডুসেনের চতুর্থ উইকেট জুটিতে ওঠে ৬৭ রান।
এরপর ফন ডার ডুসেন পরিণত হন যাদবের দ্বিতীয় শিকারে। টেম্বা বাভুমাকে নিয়ে এরপর আরও ৪২ রান যোগ করেন পিটারসেন। ৩ বলের ব্যবধানে বাভুমা ও কাইল ভেরাইনাকে ফিরিয়ে এরপর প্রোটিয়াদের আবার ভালোভাবেই ব্যাকফুটে ঠেলে দেন মোহাম্মদ শামি। চা-বিরতির ঠিক আগে মার্কো ইয়ানসেনকেও হারায় স্বাগতিকেরা।
এক প্রান্ত অবশ্য আগলে রেখেছিলেন পিটারসেন। স্লিপে একটা কঠিন ক্যাচ তুলে বেঁচে গিয়েছিলেন, তবে মাত্র পঞ্চম টেস্ট খেলতে নামা এ ডানহাতি কঠিন এক উইকেটে করেছেন দারুণ লড়াই। অবশ্য শেষ সেশনের শুরুতেই বুমরার বলে ক্যাচ তুলে থামতে হয় তাঁকে।
৪৪ রানে পিছিয়ে থাকার সময় অষ্টম উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকা এরপর ব্যবধান কমায় কাগিসো রাবাদার ১৫ ও ডুয়ান অলিভিয়েরের অপরাজিত ১০ রানের ইনিংসে।
রাবাদাকে শার্দূল ঠাকুর ফেরানোর পর শেষ ব্যাটসম্যান লুঙ্গি এনগিডির উইকেট দিয়ে পূর্ণ হয় ইনিংসে বুমরার পাঁচ উইকেট। কেপটাউনে এর আগে ইনিংসে ৫ উইকেট ছিল আর দুজন ভারত বোলারের।
ব্যাটিংয়ে নেমে তৃতীয় ওভারেই রাবাদার বলে এলবিডব্লু হয়েছিলেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। তবে রিভিউ নিয়ে সে দফা বাঁচেন তিনি। অবশ্য রাবাদার পরের ওভারেই স্লিপে ক্যাচ তোলেন এ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।
এরপর আঘাত করেন ইয়ানসেন, আগারওয়ালের উইকেটের ঠিক পরের ওভারে স্লিপে ক্যাচ দেন আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান লোকেশ রাহুলও। এরপর অবশ্য আর বিপদ ঘটতে দেননি কোহলি ও পূজারা। তবে কেপটাউনে তৃতীয় দিন রোমাঞ্চ ডাকছে নিশ্চিতভাবেই।