‘শেষ সুযোগ’ কাজে লাগিয়েছেন রোহিত
ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি—সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তাঁর পরিচয় বিধ্বংসী আর দাপুটে এক ওপেনার হিসেবে। সাদা বলের ক্রিকেটে রোহিত শর্মা সময়ের অন্যতম সেরা এক ব্যাটসম্যান। কিন্তু তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারটা চলছিল থেমে থেমে। সেই রোহিতই অবশ্য লাল বলের ক্রিকেটে নিজের আসল রূপে আবির্ভূত ২০১৯ সাল থেকে। যখন থেকে তাঁকে টেস্ট ক্রিকেটেও টপ অর্ডারে নিয়ে আসা হয়।
এমনিতে টেস্টে তাঁর ক্যারিয়ার গড় ৪৬.৮৭। কিন্তু ২০১৯ সালে টপ অর্ডারে আসার পর থেকে যে ১৬ টেস্টে তিনি রান তুলেছেন ৫৮.৪৮ গড়ে। তবে একটা ‘অপবাদ’ তাঁকে তাড়া করে ফিরছিল—দেশের মাটিতে রোহিত টেস্টে যতটা ভালো খেলেন, বিদেশের মাটিতে ততটা নয়। এ ছাড়া বিদেশের মাটিতে একটি টেস্ট সেঞ্চুরির আক্ষেপও পোড়াচ্ছিল তাঁকে। ওভালের আগে ৪২ টেস্ট খেলে রোহিতের সেঞ্চুরি ছিল ৭টি, সবগুলোই দেশের মাটিতে।
ওভাল টেস্টের প্রথম ইনিংসেও তিনি করেছেন মাত্র ১১ রান। সেই রোহিতই দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। বিদেশের মাটিতে তাঁর প্রথম সেঞ্চুরিতে (১২৭ রান) ওভালে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারতও। প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানে অলআউট হওয়া ভারত কাল দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ২৭০ রান তুলে শেষ করেছে তৃতীয় দিনের খেলা। প্রথম ইনিংসে তারা পিছিয়ে ছিল ৯৯ রানে। অথচ হাতে ৭ উইকেট রেখে এখন তারা এগিয়ে ১৭১ রানে।
দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে ভারতকে ম্যাচে ফেরানোর পর ‘শেষ সুযোগ’ কাজে লাগানোর কথা বলেছেন রোহিত। এটা দিয়ে হয়তো তিনি ইংল্যান্ডের মাটিতে সেঞ্চুরি করার বিষয়টিই বোঝাতে চেয়েছেন। দিনের খেলা শেষে ভারতের ওপেনার বলেছেন, ‘আমার মনে একটা বিষয় ছিল—আমি জানতাম টেস্ট ক্রিকেটে এটাই আমার শেষ সুযোগ। মানসিকভাবে আমি চ্যালেঞ্জটা নিতে চেয়েছি এবং টপ অর্ডারে ভালো করতে চেয়েছি...আর আমি এর জন্য খুব ভালোভাবেই তৈরি ছিলাম।’
ওভালে দলের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সময়ে নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলেছেন রোহিত। তাও আবার বিরুদ্ধ কন্ডিশনে। ওভালের মেঘলা আবহাওয়ায় পেসাররা বেশ সহায়তা পান। এমন এক কন্ডিশনে লড়াই করেই রান করতে হয়েছে ভারতের ব্যাটসম্যানদের। সেঞ্চুরি করার পথে রোহিতের প্রথম ৫০ রানের কথাই ধরুন, ১৪৫ বলে করা ফিফটিটি তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের মন্থরতম। দিনের খেলা শেষে তাই ওভালের সেঞ্চুরির মাহাত্ম্যের কথা এভাবে বললেন রোহিত, ‘আপনি এখানে (ইংল্যান্ড) খেলতে নামলেন আর সেঞ্চুরি পেয়ে গেলেন, বিষয়টি মোটেই এ রকম নয়।’
ওভালে কাল ব্যাটিং করা কতটা কঠিন ছিল সেটা বোঝাতে গিয়ে রোহিত বলেছেন, ‘শটই খেলা যাচ্ছিল না। বিশেষ করে ইংল্যান্ডে ওপেন করতে গেলে শট খেলা খুব কঠিন। সবচেয়ে আনন্দের বিষয় আমি আড়াই শর মতো (২৫৬) বল খেলতে পেরেছি। আর এটাতো আমরা সবাই জানি যে উইকেটে কিছু সময় কাটালে ব্যাট করাটা একটু সহজ হয়ে যায়।’