পাকিস্তান দলে চাচা-ভাতিজাকে একসঙ্গে খেলতে দেখা যাবে? মাত্রই শেষ হওয়া কায়েদ-এ-আজম ট্রফিতে মোহাম্মদ হুরাইয়ার পারফরম্যান্সের পর এমন সম্ভাবনার কথা আলোচিত হচ্ছে বেশ জোরেশোরে। হুরাইরা যে পাকিস্তানের অলরাউন্ডার শোয়েব মালিকের ভাতিজা!
সেই ১৯৯৯ সাল থেকে পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলে চলেছেন শোয়েব মালিক। বয়স ৩৯ হলেও এখনো থামার নামগন্ধ নেই। এর মধ্যে হুরাইরাও পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ খেলে আলোচনায় আসায় এখন শোয়েব-হুরাইরাকে একই সঙ্গে পাকিস্তান দলে দেখার সম্ভাবনা বেড়েছে।
১৯ বছর বয়সী হুরাইরা পাকিস্তানের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট কায়েদ-এ-আজম ট্রফিতে এবারই প্রথম খেলেছেন, প্রথমবারেই হয়ে গেছেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক! এতে পাকিস্তান দলে খেলার স্বপ্নও আরও বেড়েছে হুরাইরার।
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের হয়ে এবারই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে হুরাইরার। তাতেই দীর্ঘ সংস্করণের ম্যাচের এই টুর্নামেন্টে এবার ১১ ম্যাচে ৫৮ গড়ে ৯৮৬ রান করেছেন হুরাইরা।
ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে তিনটি শতক এসেছে—এর মধ্যে একটি ত্রিশতক! অর্ধশতক এসেছে পাঁচটি। খাইবার পাখতুনখাওয়ার বিপক্ষে ফাইনালের দুই ইনিংসেও দুটি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন হুরাইরা।
ফাইনালের ঠিক আগের ম্যাচে বেলুচিস্তানের বিপক্ষেই হুরাইরার ব্যাট থেকে এসেছে ৩১১ রানের ইনিংস, যেটি এবারের কায়েদ-এ-আজম ট্রফিতে সর্বোচ্চ ইনিংস। এ ইনিংস দিয়ে দ্বিতীয় কনিষ্ঠ পাকিস্তানি হিসেবেও প্রথম শ্রেণিতে ত্রিশতকের রেকর্ড গড়েছেন হুরাইরা।
এত কিছুর পর শেষ পর্যন্ত ফাইনালে তাঁর দল হেরে যাওয়ায় অতৃপ্ত হুরাইরা। ক্রিকইনফোকে বলেছেন, ‘টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি রান করতে পারা ব্যক্তিগতভাবে তৃপ্তিদায়ক, তবে সেটা শেষ পর্যন্ত দলকে শিরোপাও এনে দিলে আরও ভালো লাগত।’
অতীতের ব্যর্থতার কথাও তুলে এনেছেন তিনি, ‘গত বছর আমি খেলার সুযোগ পাইনি। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও ভালো খেলতে পারিনি। এরপর শুধু কঠোর পরিশ্রম করে গেছি।’
কষ্টে কেষ্ট মিলেছে। এখন আরও পুরস্কারের দিকে তাকিয়ে হুরাইরা। খেলতে চান পাকিস্তান দলে এবং সেটি তিন সংস্করণেই। ‘আমার পরের লক্ষ্য তিন সংস্করণেই পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করা এবং দেশের জন্য ম্যাচ জেতানোর মতো পারফর্ম করা,’ স্বপ্ন জানাতে অকপট হুরাইরা।
হুরাইরার দুয়ার খুলে যেতে পারে পাকিস্তানের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান আবিদ আলীর হৃদ্যন্ত্রের জটিলতার কারণে। এই কায়েদ-এ-আজম ট্রফিতেই বুকে ব্যথা নিয়ে মাঠ ছাড়েন আবিদ আলী, তাঁর অ্যানজিওপ্লাস্টিও হয়ে গেছে। এরপর আর খেলায় ফিরতে পারবেন কি না আবিদ আলী, সে সংশয় থাকছেই। সে ক্ষেত্রে একজন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান দরকার হবে পাকিস্তানের।
তাতে পাকিস্তান দলে সুযোগ হবে হুরাইরার? একসঙ্গে চাচা-ভাতিজার ব্যাটিং দেখার লোভে বলা যায়, সেটি তাড়াতাড়ি হলেই ভালো! হুরাইরার চাচার বয়সও যে চল্লিশের দিকে ছুটছে!