সব তির ওয়াকারের দিকেই
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজটা নিজেদের করে নিলেও ওয়ানডে সিরিজে এসে কেমন যেন অচেনা ঠেকছে পাকিস্তান দলকে। পাঁচ ওয়ানডের এই সিরিজে ইতিমধ্যেই ২-১-এ পিছিয়ে থাকা পাকিস্তান দলের এমন পারফরম্যান্সের সব দায় গিয়ে চেপেছে কোচ ওয়াকার ইউনিসের ওপরই। জাভেদ মিয়াঁদাদ কিংবা মহসিন খানের মতো সাবেক তারকারা মনে করেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে পাকিস্তানের বাজে পারফরম্যান্সের মূলে আছে ওয়াকারের খেলোয়াড় ব্যবস্থাপনা। তাদের মতে, ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ অনুসারে দল সাজাতে গিয়ে ওয়াকার দলের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন।
ওয়াকারের ওপর এই দুই সাবেক ক্রিকেটারের ক্ষোভটা মূলত দলের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান আহমেদ শেহজাদকে নিয়েই। শেহজাদের সঙ্গে ওয়াকারের তিক্ত সম্পর্কের ব্যাপারটি অবশ্য ক্রিকেট দুনিয়ায় খুব একটা গোপন কিছু নয়। শেহজাদের মতো একজন ইনফর্ম ক্রিকেটার স্কোয়াডে থাকার পরেও কেন পাকিস্তান দলের প্রথম একাদশে নেই, মিয়াঁদাদ ও মহসিন খানের প্রশ্ন এখানেই।
মিয়াঁদাদের মতে, ওয়াকারের ব্যক্তিগতভাবে শেহজাদকে অপছন্দ করেন বলেই সে প্রথম একাদশে নেই।, ‘এটা পরিষ্কার যে আহমেদ শেহজাদ ওয়াকারের আক্রোশের শিকার। তাঁর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত ব্যাপার-স্যাপার যদি থেকেই থাকে, তাহলে তাঁকে দলে নেওয়া কেন! আমিরাতে ওয়ানডে সিরিজে পাকিস্তানের ব্যর্থতার জন্য কেবল অধিনায়কই নয়, দায়ী কোচ ওয়াকারও। তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ দলের অনেক ক্ষতি করছে।
মহসিন খান আবার ওয়াকারের ব্যাপারে এক কাঠি সরেশ। সাবেক এই ফাস্ট বোলারকে কোচ বানানোটাই নাকি একদম পছন্দ হয়নি তাঁর। তিনি জানিয়েছেন, বিতর্কিত অতীতের কারণে তিনি নাকি ওয়াকারের কোচ হিসেবে নিয়োগের বিরোধিতা করেছিলেন তিনি। দলে বারবার পরিবর্তন আনার ব্যাপারটিও তিনি মেনে নিতে পারছেন না, ‘আমি জানি না তারা আসলে কী করতে যাচ্ছে। শেহজাদকে দলে না নেওয়ার ব্যাপারটা আমার কাছে স্পষ্ট নয়। দলের বারবার যে পরিবর্তন আনা হচ্ছে সেটা কার ইশারায় হচ্ছে? এটা পাকিস্তান দল, দলটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। দলটা নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের জবাবদিহি করতে হবে। দলের হেড কোচকে অবশ্যই এ ব্যাপারগুলোর ব্যাখ্যা দিতে হবে।
পাকিস্তানের এই ব্যর্থতায় মিয়াঁদাদ, মহসিন খানের পাশাপাশি সরব সরফরাজ নেওয়াজ ও রশিদ লতিফও। সাবেক ফাস্ট বোলার সরফরাজ খান জানিয়েছেন, পাকিস্তানের পরাজয় নিয়ে সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভনের সন্দেহেরে ব্যাপারটি তাঁকে মোটেও অবাক করেনি। ২০১০ সালে আমির-আসিফ-সালমান বাটদের স্পট ফিক্সিং-কেলেঙ্কারির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘ভুলে গেলে চলবে না ওয়াকার ওই সময় পাকিস্তান দলের হেড কোচের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি চলমান ওয়ানডে সিরিজে পাকিস্তানের বাজে পারফরম্যান্স নিয়ে অধিনায়ক আজহার আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানান।
রশিদ লতিফ এই ব্যর্থতার জন্য দায়ী করেছেন দলে মাত্রাতিরিক্ত পরিবর্তনকেই, ‘আমার মনে হয় দলের একাদশে অতিরিক্ত পরিবর্তন আসছে। খেলোয়াড় নির্বাচন প্রক্রিয়াতেও গলদ থেকে যাচ্ছে। তিনি অবশ্য টেস্ট সিরিজে হারের পর ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য ইংল্যান্ডের প্রশংসাই করেছেন।’ সূত্র: পিটিআই।