সাকিবময় ম্যাচে কুমিল্লাকে আটকে দিয়ে শীর্ষে বরিশাল

অর্ধশতক করেছেন, পরে ২ উইকেট নিয়েছেন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আল হাসানছবি: শামসুল হক

দশম ওভারে হুট করেই নাজমুল হোসেনকে বোলিংয়ে আনলেন ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ক্রিজে তখন দুই বাঁহাতি মঈন আলী ও মুমিনুল হক। নাজমুলের অফ স্পিন ‘ফাটকা’টা কাজেও লেগে গেল। শর্ট এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ দিলেন মঈন, ৮৮ টি-টোয়েন্টির ক্যারিয়ারে তৃতীয় উইকেটটি পেলেন নাজমুল। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ সাকিব যা করতে চেয়েছেন, সফল হয়েছেন তাতেই।

প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে সাকিব খেলেছেন ৩৭ বলে ৫০ রানের ইনিংস, দলের সর্বোচ্চ স্কোর সেটিই। এরপর বল হাতে ফিরিয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস ও লিটন দাসকে। ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ২০ রান। সাকিবময় ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে ৫ উইকেটে ১৫৫ রান তোলা বরিশাল কুমিল্লাকে হারিয়েছে ৩২ রানে। এ জয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেও উঠে গেছে তারা। মাঝে সিলেট সানরাইজার্সের সঙ্গে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়াতেই যা একটু ছন্দপতন হয়েছিল বরিশালের। সেটি বাদ দিলে সাকিবের দল জিতল টানা চারটি ম্যাচ। অন্যদিকে সাত ম্যাচে এটি দ্বিতীয় হার ইমরুলের কুমিল্লার।

৫০ রান করেছেন সাকিব
ছবি: প্রথম আলো

বিপিএলের শুরু থেকেই বরিশালের ভাবনার কারণ ছিল টপ অর্ডারের ব্যাটিং। আজ প্রধান কোচ খালেদ মাহমুদ ও অধিনায়ক সাকিবের মুখে হাসিই ফুটিয়েছেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মুনিম শাহরিয়ার। সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে আলো ছড়ানো এ ডানহাতি আজ ২৫ বলে করেছেন ৪৫ রান, ৪টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৩টি ছয়। ৮ বলে ১০ রান করে বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামের বলে ক্যাচ দিয়ে ক্রিস গেইল ফিরলেও মুনিমের ব্যাটিংয়ে ঝোড়ো শুরু পায় বরিশাল। শেষ পর্যন্ত মঈনের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি, তবে ততক্ষণে ৮ ওভারে ৬৯ রান তুলে ফেলেছে বরিশাল। অবশ্য এর আগেই তানভীরের দ্বিতীয় শিকার হয়েছেন নাজমুল।

বরিশালকে ভালো শুরু এনে দেন মুনিম শাহরিয়ার
ছবি: প্রথম আলো

মুনিম ফেরার পর তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে সাকিব যোগ করেন ৬৭ রান। অর্ধশতকের পরপরই করিম জানাতের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাকিব, ইনিংসে ৪টি চারের সঙ্গে মারেন ২টি ছয়। অবশ্য অন্যদিকে তৌহিদ ঠিক গিয়ার বদলাতে পারেননি, শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ৩৭ বলে ৩১ রানে। শেষ দিকে ডোয়াইন ব্রাভো ৬ বলে করেন ১০ রান, তবে বরিশাল শেষ ৩ ওভারে তুলতে পারে মাত্র ১৯ রান।

বরিশালকে অবশ্য মোমেন্টাম এনে দিতে বেশি দেরি করেননি সাকিব। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ফেরান ইমরুলকে। খুব ভালো বল ছিল না, তবে ইমরুল ক্যাচ তুলেছেন তাতেই। সাকিবের পরের ওভারে স্টাম্পড হন লিটন, ২৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় কুমিল্লা। পাওয়ারপ্লের আগে মাহমুদুল হাসানকেও হারায় কুমিল্লা।

মাঠে প্রবেশের অনুমতি নেই, তবে ঠিকই জায়গা খুঁজে নিয়েছেন সিলেটের দর্শকেরা
ছবি: শামসুল হক

৩৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর ধাক্কা সামাল দিতে একটা জুটির দরকার ছিল কুমিল্লার। মঈন ও মুমিনুল গড়ছিলেন সেটিই। এরপরই নাজমুল এসে ফেরান মঈনকে, কুমিল্লাও পথ হারায় দ্রুত। দলে বেশ কয়েকজন অলরাউন্ডার খেলিয়েছে কুমিল্লা, তবে সে অর্থে ইনিংস বড় করতে পারেননি কেউই। তিনে নেমে ৩০ বলে ৩০ রান করেছেন মুমিনুল হক, শেষ দিকে করিম জানাতের ১৩ বলে ১৭ ও তানভীরের ১৪ বলে ২১ রানের ইনিংস হারের ব্যবধানই কমিয়েছে শুধু। ২৯ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন বরিশালের অফ স্পিনার নাঈম হাসান, ২ উইকেট নিতে ২৯ রান খরচ করেছেন ডোয়াইন ব্রাভো।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৫৫/৫ (মুনিম ৪৫, সাকিব ৫০, তৌহিদ ৩১*; তানভীর ২/২২, মোস্তাফিজুর ১/৩০, মঈন ১/২১, করিম ১/৬)

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস: ২০ ওভারে ১২৩/৯ (মুমিনুল ৩০, তানভীর ২১*, লিটন ১৯; নাঈম ৩/২৯, সাকিব ২/২০, ব্রাভো ২/২৯, নাজমুল ১/৫)

ফল: বরিশাল ৩২ রানে জয়ী