মিরপুর টেস্টের প্রথম ৪০ মিনিট ছিল শ্রীলঙ্কার। তীব্র গরমে ওই ৪০ মিনিটে যেন গলে গেছে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ! ওই সময়ের মধ্যে যে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এরপর আজ মধ্যাহ্নভোজের বিরতির খানিক পর পর্যন্ত মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশই ছড়ি ঘুরিয়েছে। বাংলাদেশের ৩৬৫ রানের জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে জবাবটা ভালোই দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা। তবে এটা আরও ভালো হতো, শেষ বিকেলে সাকিব আল হাসানের আঘাতে যদি কুশল মেন্ডিসকে না হারাত তারা।
আগের দিনের ৫ উইকেটে ২৭৭ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ আধা ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া মধ্যাহ্নভোজের বিরতি থেকে ফেরার একটু পরই অললাউট হয়েছে। এর আগে মুমিনুল হকের দল করতে পেরেছে ৩৬৫ রান। এর জবাবে শ্রীলঙ্কা আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ২ উইকেটে ১৪৩ রান নিয়ে। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থেকে এখনো ২২২ রানে পিছিয়ে তারা। করুনারত্নে ৭০ ও তাঁর সঙ্গী নাইটওয়াচম্যান কাসুন রাজিতা কোনো রান করে উইকেটে আছেন।
ব্যাটিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার ওশাডা ফার্নান্ডো ও দিমুথ করুনারত্নে বাংলাদেশের বোলারদের কোনো হুমকিই মনে করেননি। সাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে ব্যাটিং করেন তাঁরা। বেশ ভালো গতি, ওভারপ্রতি ৪ বা এর চেয়ে একটু বেশিতেও রান তুলছিলেন ওশাডা ও করুনারত্নে। ২২ ওভারে ৮৪ রান তুলে চা বিরতিতে যান তাঁরা। তাঁদের এই ছন্দে ছেদ পড়ে চা বিরতির পর। ৯১ বলে ৫৭ রান করে এবাদত হোসেনের বলে নাজমুল হোসেনকে ওশাডা ক্যাচ দিয়ে ফিরলে। আউট হওয়ার আগে ওশাডা ৮টি চারের পাশাপাশি একটি ছয়ও মেরেছেন। করুনারত্নের সঙ্গেঙ্তে তাঁর উদ্বোধনী জুটিতে এসেছে ৯৫ রান।
ওশাডার আউটের পর যেন ছন্দ ফিরে পান বাংলাদেশের বোলাররা। এ সময় বেশ কয়েকবার শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যা্নদের বিরুদ্ধে আউটের জোরলো আবেদনও হয়েছে। করুনারত্নে তো একটি ‘জীবন’ও পেয়েছেন। তাইজুলের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। কিন্তু দ্রুত আসা ক্যাচটি নিতে পারেননি সেখানে দাঁড়ানো ফিল্ডার। সেই সময় করুনারত্নের রান ছিল ৩৭। এ ছাড়া করুনারত্নে যখন ৬৫ রানে, তাঁর বিরুদ্ধে এলবিডব্লুর জোরালো আবেদন করেছিলেন তাইজুল। আম্পায়ার সাড়া দেননি, রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু ইমপ্যাক্ট অফ স্টাম্পের বাইরে হওয়ায় বেঁচে যান করুনারত্নে।
বাংলাদেশের বোলারদের ভোগানোর ইঙ্গিত দিয়ে অবশ্য তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা কুশল মেন্ডিস সাকিবের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন ৪৯ বলে ১১ রান করে। এরপর রাজিতাকে নিয়ে দিনের বাকি সময়টা নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন করুনারত্নে।
এর আগে বাংলাদেশ ৩৬৫ রান করতে পেরেছে মূলত মুশফিকুর রহিমের অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংসে ভর করে। ৩৫৫ বলের ইনিংসটিতে তিনি মেরেছেন ২১টি চার। আগের দিন ১৩৫ রানে অপরাজিত থাকা লিটন দাস আউট হয়েছেন ১৪১ রান করে। শ্রীলঙ্কার পক্ষে রাজিতা ৫ উইকেট নিয়েছেন ৬৪ রানে। ৯৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন আরেক পেসার আসিতা ফার্নান্ডো।