শ্রীলঙ্কা সফরে নাজমুল হোসেনের সেঞ্চুরিটি ছিল তৃষিত। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সেঞ্চুরি যেন নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার।
২০১৭ সালে হুট করেই অভিষিক্ত হওয়ার পর আরেকটি টেস্ট খেলতে নাজমুলকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল প্রায় দুই বছর। এরপর আবার তাঁর বছরখানেকের অপেক্ষা। এরপর যেন শুরু হয়েছিল নাজমুলকে নিয়ে অপেক্ষা। সুযোগ পাচ্ছেন, কিন্তু কাজে লাগাতে পারছেন না—আলোচনা ছিল এমন।
নাজমুল সে আলোচনা বন্ধ করলেন পাল্লেকেলের ওই ১৬৩ রানের ইনিংসে। অবশ্য পরের দুই ইনিংসে দুই শূন্যতে একটু ছন্দপতন হয়েছিল তাঁর। হারারে টেস্টের এ সেঞ্চুরিতে দেখা গেল আরেক নাজমুলকে।
সেদিন ২৩৫ বল লেগেছিল তাঁর সেঞ্চুরি তুলে নিতে, এদিন খেললেন মাত্র ১০৯ বল। শুরু থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক। নাজমুলের এ ইনিংসের ছাপ থাকল রেকর্ড বইয়েও।
ইনিংস ঘোষণার আগে ১১৮ বলে ১১৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন নাজমুল। ৫ চারের সঙ্গে মেরেছেন ৬ ছক্কা। ব্যাটিং করেছেন ৯৯.১৫ স্ট্রাইক রেটে। বাংলাদেশের হয়ে সেঞ্চুরির ইনিংসে এর চেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেটের নজির আছে শুধু একটি। ২০১০ সালে লর্ডসে ১০০ বলে ১০৩ রান করেছিলেন তামিম।
নাজমুল এদিন দ্বিতীয় পজিশনে উঠতে কাটিয়ে গেছেন তামিমেরই আরেকটি ইনিংস। ২০১৯ সালে ১২৮ বলে ১২৬ রান করেছিলেন তামিম, স্ট্রাইক রেট ছিল ৯৮.৪৩।
বাংলাদেশের হয়ে নব্বইয়ের ওপরে স্ট্রাইক রেটে তামিম ও নাজমুল ছাড়া সেঞ্চুরি আছে শুধু আবুল হাসানের। ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২৩ বলে ১১৩ রান করেছিলেন তিনি।
এ ইনিংসের শুরুতেই একটা ছক্কা মেরেছিলেন, আগ্রাসী মনোভাবের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তাতেই। এরপর থামেননি। ইনিংসে ৫ চারের বিপরীতে মেরেছেন ৬ ছক্কা। বাংলাদেশের হয়ে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছয়ের তালিকায় যৌথভাবে মোহাম্মদ রফিকের সঙ্গে দুইয়ে আছেন নাজমুল। সবার ওপরে ৭টি ছয় নিয়ে তামিম।
নাজমুল এদিন একটা জীবন পেয়েছিলেন ৭১ রানে, স্লিপে মিল্টন শুম্বার বলে সহজ ক্যাচ ছেড়েছিলেন ব্রেন্ডন টেলর। সে ক্যাচ মিসের চড়া মাশুলই দিতে হয়েছে জিম্বাবুয়েকে। এরপরের ২৬ বলে নাজমুল করেছেন ৪৬ রান!