১৭ বলে ৫০ লিভিংস্টোনের
লিয়াম লিভিংস্টোন বলকে পিটিয়ে দূরদূরান্তে পাঠাতে পারেন। টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট ও পাকিস্তান সুপার লিগের দর্শকেরা ভালোই জানেন এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান সম্পর্কে। এবারের আইপিএলের সুবাদে অন্যরাও জেনে গেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অবশ্য ঠিক ব্যাটে–বলে হচ্ছিল না তাঁর।
আজ লিভিংস্টোনের শুরু থেকেই ব্যাটে বল আসছিল। একপর্যায়ে এবি ডি ভিলিয়ার্সের রেকর্ডটাও হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিলেন। কিন্তু ১৪ বলে ৪৮ রান করা ব্যাটসম্যানই কিনা ২ বলে ২ রান নিতে পারলেন না। আর তাতেই ২০১৫ বিশ্বকাপের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কচুকাটা করে এবি ডি ভিলিয়ার্সের তোলা দ্রুততম পঞ্চাশের রেকর্ডটি টিকে রইল। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ১৭ বলে অর্ধশতক করে লিভিংস্টোন তাই দ্বিতীয় হলেন।
দুইয়ে অবশ্য যাঁকে সঙ্গী পাচ্ছেন লিভিংস্টোন, তাতেও গর্ব করতে পারবেন। ১৯৯৬ সালে সিঙ্গাপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৭ বলে ৫০ করে স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন সনাৎ জয়াসুরিয়া। পরে এ কীর্তিতে আরও দুজন তাঁর পাশে বসেছিলেন। পাকিস্তানের বিপক্ষেই আরেক শ্রীলঙ্কান, কুশল পেরেরা ১৭ বলে অর্ধশতক পেয়েছিলেন। ওদিকে নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল লক্ষ্য বানিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কাকেই। তবু খুব একটা উল্লাস হয়নি তা নিয়ে। কারণ, দুজনেরই কীর্তি ২০১৫ সালে। বছরের শুরুতেই ১৬ বলের কাণ্ডটা করে রেখেছেন ডি ভিলিয়ার্স।
আজ অবশ্য আমস্টেলভিনে ডি ভিলিয়ার্সের রেকর্ডটা অনায়াসে দখল করতে পারতেন লিভিংস্টোন। ৪৫তম ওভারে নেমেছিলেন। দলের রান তখনই ৪০৭। প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে প্রান্ত বদল করলেন। ওই প্রান্তে গিয়ে দেখলেন, জস বাটলার কী অনায়াসেই না ছক্কা মারছেন। পরের ওভারে নিজের কোটা পূরণ করতে এসেছিলেন ফিলিপে বইসভেইন। কোটা শেষ করলেন ওয়ানডের খরুচে বোলিংয়ের চারে নাম লিখিয়ে।
প্রথম বলে স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মারলেন লিভিংস্টোন। পরের বলটা ডিপ উইকেট দিয়ে ছক্কা। পরেরটাও মাথার ওপর দিয়ে উড়ল। চতুর্থ বলে ছক্কার হ্যাটট্রিক হয়ে গেল। পঞ্চম বলে একটু স্বস্তি, ছক্কা না হয়ে চার। ষষ্ঠ বলে আবার ছক্কা। ৭ বলে ৩৩ রান লিভিংস্টোনের। পরের ৫ বলে ২ চারে আরও ৯ রান করেছেন লিভিংস্টোন। ১২ বলে ৪২ রান নিয়ে ৪৮তম ওভার শুরু করেছেন লিভিংস্টোন।
শেন স্ন্যাটারের প্রথম বলেই কাভার দিয়ে চার। পরের বলে মিলল ভাগ্যের দেখা। ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেলেন। ওই বইসভেইনই ফেললেন ক্যাচ, হলো ২ রান। ১৪ বলে ৪৮। রেকর্ড গড়তে দরকার ছিল ১ বলে ২। আর রেকর্ড ছুঁতে ২ বলে ২। এতক্ষণ টানা ২ বলে রান নিতে ব্যর্থ না হওয়া লিভিংস্টোন কিনা দুটি ডট দিয়ে বসলেন। পরের বলটায় আর ভুল হলো না। ছক্কা। ১৭ বলে ৫৪ রানে পৌঁছে গেলেন লিভিংস্টোন। ইংল্যান্ডের পক্ষে ওয়ানডেতে দ্রুততম ৫০।
ইনিংসের শেষ ২ বলেও কঠিন এক দায়িত্ব পেয়েছিলেন লিভিংস্টোন। ২ বলেই ছক্কা মারতে পারলে প্রথম দল হিসেবে ওয়ানডেতে ৫০০ হতো ইংল্যান্ডের। পঞ্চম বলটা গায়ের জোর দিয়ে মারলেও বাতাসের কারণে চার হয়েছে। পরের বলে ঠিকই ছক্কা মেরেছেন লিভিংস্টোন। ৪ উইকেটে ৪৯৮ রানে থেমেছে ইংল্যান্ড। ২২ বলে ৬৬ রান লিভিংস্টোনের, ওয়ানডেতে তাঁর প্রথম অর্ধশতক। অন্য প্রান্তে ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ অপরাজিত ১৬২ রানের ইনিংসটি বাটলার খেলেছেন ৭০ বলে।