টমাস টুখেলের কথায় আপত্তি তুলতে পারেন অনেকেই। ম্যাচের আগে কেউ এভাবে হতাশার বার্তা দেয়! গত সপ্তাহে প্রথম লেগে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ৩-১ গোলে হারের পর থেকেই টুখেল বলে বেড়াচ্ছেন, তিনি আশা ছেড়ে দিয়েছেন। চ্যাম্পিয়নস লিগে কোয়ার্টার ফাইনাল দ্বিতীয় লেগ খেলার আগেও হতাশার কথাই শুনিয়ে যাচ্ছেন চেলসি কোচ। বলছেন, রিয়ালের মাঠে স্বাগতিকদের হারানোর কাজটা কঠিন।
ইউরোপে নবীন কোনো দল হলে টুখেলের এমন হাল ছেড়ে দেওয়া আচরণ হয়তো মেনে নেওয়া যেত, কিন্তু চেলসির কোচের মুখ থেকে এমন কথা কে শুনতে চায়! হাজার হলেও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন তারা। তাই জেতার স্বপ্নের কথাও শোনাচ্ছেন; বলছেন, ফুটবলে স্বপ্ন না দেখলে চলে না।
ইউরোপের বড় দলগুলোর সঙ্গে চেলসির একটা পার্থক্য ছিল। শীর্ষ দলগুলোর মধ্যে আছে, কিন্তু রিয়ালের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে কখনো নামেনি চেলসি। আজ সে আক্ষেপটা কাটছে। বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় বার্নাব্যুতে প্রথমবারের মতো কোনো ম্যাচ খেলতে নামবে চেলসি। এমন উপলক্ষেও চেলসি কোচের কণ্ঠে হতাশা, ‘প্রথম লেগের যে ফল, তাতে আমাদের খুব বেশি সুযোগ নেই। এ প্রতিযোগিতা (চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়ালের অতীত সাফল্য), প্রতিপক্ষ এবং স্টেডিয়ামের কথা চিন্তা করলে কাজটা কঠিন। কিন্তু চেষ্টা করার সময় কতটা সুযোগ আছে, সেটা নিয়ে ভাবি না আমরা।’
আজ রিয়ালের মাঠে অন্তত দুই গোলের ব্যবধানে জিততে হবে চেলসিকে। আর সরাসরি সেমিফাইনালে যেতে হলে ব্যবধান হতে হবে অন্তত তিন গোলের। কাজটা কঠিন, কিন্তু অসম্ভব তো নয়। কদিন আগেই বার্সেলোনা এ মাঠে ৪-০ গোলে জিতেছে। ২০১৯ সালে ঘরের মাঠের হারের বদলা আয়াক্স নিয়েছিল ৪-১ গোলে জিতে। এর আগের বছর জুভেন্টাসও জিতেছিল ৩-১ গোলে।
টুখেল তাই এখনো স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু ম্যাচ নিয়ে কেউ যেন আশার বেলুন না ফোলান, সেটা নিশ্চিত করতেই হয়তো নিরাপদ পথে হেঁটেছেন, ‘এটা হওয়ার সম্ভাবনা কম (চেলসির জয়), কিন্তু চেষ্টা তো করা উচিত। আর চেষ্টা করা মানে আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দেব। আর কিছু তো করার নেই, আমাদের জন্য অনেক বড় ম্যাচ। চ্যালেঞ্জটা খুব কঠিন। কিন্তু আমাদের স্বপ্ন দেখার অধিকার আছে। মাঝেমধ্যে কিছু কল্পনা করা ও স্বপ্ন দেখা জরুরি। এটা খেলা এবং খেলার সৌন্দর্য হলো যেকোনো কিছু ঘটতে পারে।’
আজ পূর্ণ শক্তির দল পাচ্ছেন না টুখেল। বেন চিলওয়েল ও কালাম হাডসন ওডোই আগে থেকেই চোটে ছিলেন। এর সঙ্গে স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকুও যোগ হয়েছেন না থাকার তালিকায়। প্রতিপক্ষের সুবিধার কথা জানাতে গিয়ে লা লিগা ও প্রিমিয়ার লিগের একটা গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্যের কথাও জানিয়েছেন টুখেল, ‘প্রথম লেগে আমরা শরীরনির্ভর খেলা খেলতে চেয়েছিলাম, আগ্রাসন দেখাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এদিকে আমরা পিছিয়ে ছিলাম। কারণ, মাদ্রিদ পুরো মৌসুম পাঁচ বদলি নিয়ে খেলেছে এবং আমরা শারীরিকভাবে সবচেয়ে কঠিন লিগে খেলি। প্রথম ম্যাচে আমরা দ্রুতগতিতে খেলতে পারিনি। কারণ, ওরা শারীরিকভাবে এগিয়ে ছিল এবং ওরা চাইলেই খেলার গতি ধীর করে দিতে পারে। আমাদের একটা উপায় বের করতে হবে, যেন আরও শরীরনির্ভর খেলা যায়।’