ইউক্রেনকে অপেক্ষায় রেখে নিজেদের অপেক্ষা ঘোচাল অস্ট্রিয়া

গোলদাতা ক্রিস্টফ বাউমগার্টনারকে ঘিরে অস্ট্রিয়ার খেলোয়াড়দের উদযাপন।ছবি: রয়টার্স

বুখারেস্টে মুখোমুখি হওয়ার আগে দুই দলের সামনে সমীকরণটা পরিস্কার ছিল। জিতলে 'সি' গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে নাম লেখাবে ইউরোর শেষ ষোলোয়।

অস্ট্রিয়া এই হিসেব মিলিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইউরোর গ্রুপপর্ব টপকে টিকিট কেটেছে শেষ ষোলোর।

ইউক্রেনের সামনেও হিসেবটা আলাদা ছিল না। ডাগ আউটে দাঁড়িয়ে তাদের কিংবদন্তি আন্দ্রেই শেভচেঙ্কো বার বার তাগাদা দিয়েছেন জয়ের।

কিন্তু অস্ট্রিয়ার মাঝমাঠ এবং আক্রমণভাগের সামনে কুলিয়ে উঠতে পারেনি ইউক্রেনের রক্ষণভাগ। অস্ট্রিয়ার কাছে ১-০ গোলে হেরে 'সি' গ্রুপের তৃতীয় ইউক্রেন।

'সি' গ্রুপ থেকে শেষ রাউন্ডের ম্যাচগুলো শেষে ইউক্রেনকে এখন অপেক্ষায় থাকতে হবে। ছয়টি গ্রুপে তৃতীয় হওয়া ছয় দলের মধ্যে শীর্ষ চারে থেকে শেষ ষোলোয় ওঠার প্রার্থনা করতে হবে শেভচেঙ্কোর শিষ্যদের।

৩ ম্যাচে পুর্ণ ৯ পয়েন্ট তুলে নিয়ে এই গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে শেষ ষোলোয় উঠেছে নেদারল্যান্ডস। একই সময়ে শুরু হ্ওয়া অন্য ম্যাচে উত্তর মেসিডোনিয়াকে ৩-০ গোলে হারায় ডাচরা।

গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন ইউক্রেনের মিডফিল্ডার আন্দ্রিই ইয়ারমোলেঙ্কো।
ছবি: রয়টার্স

৩ ম্যাচে ২ জয় ও ১ হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে 'সি' গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে শেষ ষোলোয় উঠল অস্ট্রিয়া। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এ টুর্নামেন্টে এর আগে দুবার মূল পর্বে মোটামুটি ভালো দল নিয়ে খেলতে এসে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি অস্ট্রিয়া।

এবার তৃতীয় দফায় জয়ের সঙ্গে প্রথমবারের মতো গ্রুপপর্বের বাধাও উতরে গেল অস্ট্রিয়া। ৩ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে তৃতীয় ইউক্রেন।

ম্যাচের ২১ মিনিটে অস্ট্রিয়ার অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ক্রিস্টফ বাউমগার্টনারের গোল শোধ করতে পারেনি ইউক্রেন। প্রথমার্ধে ইউক্রেনের রক্ষণভাগে চাপ বিস্তার করে খেলার সুবাদে গোলটি পায় অস্ট্রিয়া।

শুরু থেকেই মাঝ মাঠ থেকে খেলা তৈরি করে ইউক্রেনের রক্ষণে ইচ্ছেমতো ঢুকেছেন ডেভিড আলাবা, মার্কো আরনাউতোভিচ ও মার্সেল সাবিৎসাররা।

কর্নার থেকে গোল করছেন বাউমগার্টনার।
ছবি: রয়টার্স

আলাবার কর্নার থেকে পায়ের টোকায় গোলটি করেন বাউমগার্টনার। ইউরোয় অস্ট্রিয়ার হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে গোলের রেকর্ড গড়লেন ২১ বছর ৩২৪ দিন বয়সী হফেনহেইম মিডফিল্ডার।

এবার ইউরোয় এখন পর্যন্ত তিনি-ই সবচেয়ে কম বয়সী গোলদাতা। তাঁর এ গোলে গত ৩৯ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো কোনো বড় টুর্নামেন্টের গ্রুপপর্ব পাড়ি দিতে পারল অস্ট্রিয়া।

প্রথমার্ধে অন্তত তিন গোল ব্যবধানে এগিয়ে যেতে পারত অস্ট্রিয়া। দুটো পরিস্কার গোলের সুযোগ নষ্ট করেন সাংহাই পোর্টে খেলা আরনাউতোভিচ। একটিতে ডান প্রান্ত দিয়ে ক্রসে গোলকিপারকে একা পেয়েও পায়ে বল ঠিকমতো লাগাতে পারেননি তিনি।

সরাসরি শেষ ষোলোয় ওঠার সুযোগ হারানোয় হতাশ ইউক্রেনের এক খেলোয়াড়।
ছবি: রয়টার্স

আরেকবার ফিরতি বল পেয়েও দুর্বল শটে ইউক্রেন গোলকিপারকে ফাঁকি দিতে ব্যর্থ হন। প্রথমার্ধে অস্ট্রিয়া ইউক্রেনের গোলপোস্ট তাক করে ন্যূনতম ১০টি শট নিয়েছে।

এই অর্ধে অস্ট্রিয়ার গোলপোস্ট তাক করে মাত্র তিনটি শট নিতে পারা ইউক্রেন বিরতির পরও আড়মোড়া ভাঙতে পারেনি। গোলের সুযোগ নষ্ট করেন মিকোলা শাপারাপেঙ্কো ও আন্দ্রেই ইয়ারমোলেঙ্কো। ডাগ আউটে মেজাজ হারাতে দেখা গেছে তাদের কোচ 'শেভা'কে।

গোটা ম্যাচে ইউক্রেন মাত্র ৫টি শট নিতে পেরেছে অস্ট্রিয়ার গোলপোস্ট তাক করে। এর মধ্যে পোস্টে রাখতে পেরেছে মাত্র একটি শট। অন্যদিকে অস্ট্রিয়া মোট ১৮টি শট নিয়ে ৪টি রাখতে পেরেছে ইউক্রেনের গোলপোস্টে।

গোটা ম্যাচে দারুণ খেলেছেন অস্ট্রিয়ান তারকা ডেভিড আলাবা।
ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রিয়ার দলে যথারীতি আজও ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ডেভিড আলাবার নির্দিষ্ট কোনো পজিশন ছিল না। মাঠের প্রায় পুরোটা জুড়েই খেলেছেন তিনি।

শেষ ষোলোয় আলাবার কাছ থেকে এমন পারফরম্যান্সই চায় অস্ট্রিয়া। কেননা, কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার সে লড়াইয়ে অস্ট্রিয়ার প্রতিপক্ষ এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে দারুণ খেলা ইতালি।