প্রতিপক্ষ আল-হিলাল, যাদের দলে দুই মৌসুম আগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ‘অতিথি ভূমিকায়’ খেলে যাওয়া নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার ওডিয়ন ইঘালো, বছর দেড়েক আগে পোর্তোয় খেলা মালিয়ান স্ট্রাইকার মুসা মারেগাই সবচেয়ে বড় নাম। এর বাইরে কলম্বিয়ার গুস্তাভো কেলার, পেরুর আন্দ্রে কারিও আর গত বছর ওয়েস্ট ব্রমের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে খেলা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মাতেউস পেরেইরাকে হয়তো অনেকে চিনবেন।
এই দলকে সামনে পেয়ে চেলসি অন্তত চার-পাঁচ গোলে উড়িয়ে দেবে, এমনটাই সাধারণ্যে অনুমেয়। কিন্তু ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আজ আবুধাবিতে দেখা মিলল পুরো ১৮০ ডিগ্রি ভিন্ন চিত্রের। চেলসি জিতেছে বটে, ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে, তবে জয়টা আজ এসেছে ১-০ গোলে। যেভাবে হাঁচড়ে-পাঁচড়ে আল-হিলালকে হারিয়েছে চেলসি, তাতে আগামী শনিবার ফাইনালে চেলসির প্রতিপক্ষ পালমেইরাস খুশিই হওয়ার কথা!
আল-হিলালকে হারাতেই এত বেগ পেতে হলো চেলসিকে, ব্রাজিলিয়ান ক্লাব পালমেইরাস তো আল-হিলালের চেয়ে ধারে-ভারে অনেক এগিয়েই আছে!
এমনও নয় যে, খর্বশক্তির দল নিয়ে নেমেছিল চেলসি, গোলপোস্টে কেপা আরিসাবালাগাকে রেখে ৩-৪-২-১ ছকে দল সাজিয়েছিল তারা।
একক স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকুর পেছনে দুই ‘প্লেমেকার’ হাকিম জিয়েশ ও কাই হাভার্টজ। মাঝমাঠে কোভাচিচ ও জর্জিনিও, তাঁদের দুই পাশে ওঠা-নামার জন্য রাইট উইংব্যাক চেজার আসপিলিকেতা ও লেফট উইংব্যাক মার্কোস আলোনসো। রক্ষণে নিয়মিত তিন মুখ—আন্তোনিও রুডিগার, থিয়াগো সিলভা ও আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন।
কিন্তু এই দল নিয়েও আক্রমণে গতি পেল না চেলসি। বরং দ্বিতীয়ার্ধে গোলকিপার কেপা তিন-চারটি সেভ করে দলকে না বাঁচালে—বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে ইঘালো ও মোহামেদ কান্নোর দুটি শট না ঠেকালে লজ্জায়ই মুখ লুকাতে হতো চেলসিকে!
আগের রাউন্ডে আল-জাজিরাকে ৬-১ গোলে হারানো আল-হিলালের আক্রমণে মারেগার শক্তি, পেরেইরার বল পায়ে দক্ষতা বেশ ভুগিয়েছে চেলসিকে। গত সপ্তাহে করোনা পজিটিভ হওয়ায় দলের সঙ্গে আবুধাবি যাননি চেলসির প্রধান কোচ টমাস টুখেল, তবে দলের অবস্থা দেখে ভিডিও কলে দলকে কড়কানি দেওয়ারই কথা তাঁর!
ম্যাচজুড়ে চেলসির আক্রমণে ‘বিচ্ছিন্ন দ্বীপ’ হয়ে থাকা লুকাকুর ৩২ মিনিটের গোলই শেষ পর্যন্ত জিতিয়েছে চেলসিকে। গোলটাও ভাগ্যপ্রসূত! হাভার্টজের ক্রস ঠেকাতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন আল-হিলাল লেফটব্যাক ইয়াসির। সেন্টারব্যাক আল-বুলাইহির গায়ে লেগে বল যখন লুকাকুর সামনে পড়ল, আল-হিলাল গোলকিপার আল-মাইউফের আর কিছু করার ছিল না।
তা দল খুব একটা ভালো না খেললেও ওই এক গোলেই জয় এসেছে, চেলসি ক্লাব বিশ্বকাপের জয়ের পথে শেষ ধাপে চলে এসেছে...আপাতত এতটুকুই স্বস্তি চেলসির!