এক টেস্ট খেলেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ইংল্যান্ডের রবিনসন

ইংল্যান্ড পেসার ওলি রবিনসন।ছবি: এএফপি

পাপ বাপকেও ছাড়ে না!

ওলি রবিনসনের হয়তো এখন তেমনই মনে হচ্ছে। আট বছর আগের করা টুইটের শাস্তি পেতে হচ্ছে গতকাল শেষ হওয়া লর্ডস টেস্টে অভিষিক্ত ২৭ বছর বয়সী ইংলিশ পেসারকে। তাঁর বর্ণবাদী ও যৌন বিদ্বেষ ছড়ানো টুইট নিয়ে তদন্ত করছে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)।

তদন্তের রায় আসার পর কী শাস্তি পাবেন সেটি পরের ব্যাপার, আপাতত তদন্ত চলাকালেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ থাকছেন লর্ডস টেস্ট দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসা রবিনসন। তবে ইংল্যান্ডে নিজের কাউন্টি সাসেক্সের হয়ে খেলতে কোনো বাধা নেই তাঁর।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের চলমান দুই টেস্টের সিরিজের দ্বিতীয়টিতেও তাই রবিনসনকে পাচ্ছে না ইংল্যান্ড। গতকাল লর্ডসে শেষ হওয়া ড্র টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন রবিনসন। বার্মিংহামের এজবাস্টনে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ১০ জুন।

লর্ডস টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৭ উইকেট নেন রবিনসন।
ছবি: রয়টার্স

২০১২ ও ২০১৩ সালে বিদ্বেষমূলক কিছু টুইট করেছিলেন রবিনসন। ইসিবির নৈতিকতা কমিটি এখন তদন্ত করে দেখবে, ওই টুইটগুলো করার সময় ইংলিশ কোনো কাউন্টির সঙ্গে ১৮-১৯ বছরের রবিনসন চুক্তিবদ্ধ ছিলেন কি না। চুক্তিবদ্ধ থেকে থাকলে তাঁর বিষয়টি চলে যাবে স্বাধীন এক ক্রিকেট শৃঙ্খলা কমিটির কাছে। আর সে সময়ে রবিনসন কোনো কাউন্টির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ না থাকলে ইসিবি তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে নেবে।

রবিনসনকে ইসিবির নিষিদ্ধ করার খবরটা এসেছে গতকাল লর্ডসে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টটি ড্র হওয়ার পর। রবিনসনের টুইটগুলো অবশ্য গত বুধবার লর্ডসে তাঁর অভিষেকের পর থেকেই আলোচনায়। এ নিয়ে গত বুধবার প্রশ্ন করা হলে ইংল্যান্ড অধিনায়ক জো রুট বলেছিলেন, এই ধরনের টুইট কোনোভাবেই ‘মেনে নেওয়া যায় না।’

লর্ডস টেস্টে ভালো করলেও ইংল্যান্ডের পরের টেস্টে থাকছেন না রবিনসন।
ছবি: রয়টার্স

এখন রবিনসনের শাস্তির ঘোষণা আসার পর রুটের প্রতিক্রিয়া, ‘ওলি খুব কঠিন একটা শিক্ষা পেল। ও যেটা করেছে সেটা অগ্রহণযোগ্য। তবে ও ড্রেসিংরুমে সবার কাছে, আর বাইরে পুরো বিশ্বের সামনে ভুলের দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে। ওর যে অনুতাপ হচ্ছে, সেটা ওকে দেখে বোঝা যায়। কিন্তু আমাদের সব সময়ই যত বেশি সম্ভব শেখার আর শেখানোর পথ খোলা রাখতে হবে, খেলাটাকে যত বেশি সম্ভব বৈচিত্র্যপূর্ণ রাখতে হবে। আমরা বলছি না যে আমাদের দলটা (আচরণের দিক থেকে) নিখুঁত, তবে আমরা সব সময়ই উন্নতির চেষ্টা করে যাই।’

প্রথম দিনের খেলার পর রবিনসনের টুইটগুলো সম্পর্কে যখন জানতে পেরেছিলেন, তখন কী মনে হয়েছিল—এ নিয়ে প্রশ্নে রুটের উত্তর, ‘আমার কথা বললে, আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি। বুঝতে পারছিলাম না ব্যাপারটাকে কীভাবে নেব। কিন্তু এখানে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে ওলি এখন ড্রেসিংরুমের অংশ আর ওর পাশে আমাদের দাঁড়াতেই হবে। ও যেন শিখতে পারে, ওর আরও ভালো করতে হবে—এটা যেন বুঝতে পারে, সে জন্য ওকে সুযোগ করে দিতে আমাদের সম্ভাব্য সবকিছুই করতে হতো।’